
তৃণমূলেও আদিবাসী-অআদিবাসী ভেদ! টেন্ডারে কাটমানির ইঙ্গিত নেত্রীর, বন্ধ পঞ্চায়েতের উন্নয়নের কাজ
বিধায়কের (mla) সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির (panchayat samity) সভাপতির গণ্ডগোল। যা নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের (east burdwan) ভাতারে (bhatar)। একদিকে যেমন উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় বাধা পড়ার অভিযোগ উঠেছে অন্যদিকে টেন্ডারে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগও তুলেছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। যদিও সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিধায়ক। উল্লেখ্য এখানে বিধায়ক (mla) থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত সমিতি সবাই তৃণমূলের (trinamool congress)।

ছুটি নিতে চাপ
পঞ্চায়েত সমিটির সভাপতি সুন্দরী মার্ডির অভিযোগ তাঁকে ছুটি নিতে বাধ্য করা হয়েছে। বিধায়ক এবং পঞ্চায়েত সমিটির সহ-সভাপতি তাঁকে জোর করে ছুটির আবেদনে স্বাক্ষর করিয়েছেন। সুন্দরী মার্ডির অভিযোগ, এর আগে অফিসে গেলে বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী তাঁকে বলেছেন, কেন অফিসে এসেছেন? আসতে হবে না, ছুটি নিয়ে নিন।

আদিবাসী মহিলা বলে হুমকি
সুন্দরী মার্ডির প্রশ্ন, তাঁকে কেন বলা হচ্ছে বাড়ি চলে যান। আদিবাসী মহিলা বলে সবসময় হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। কবে বিষয়টি তিনি মেনে নেবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি কোনও রকমের অন্যায়ের সঙ্গে যুক্ত নন বলেও দাবি করেছেন। পাশাপাশি তাঁর দাবি আগের আড়াই বছর সেখানে ভাল কাজ হয়েছে।

অভিযোগ টেন্ডার নিয়ে
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির অভিযোগ, তাঁকে এড়িয়ে টেন্ডার নিয়ে পার্টির সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। সব কাজ ভাগ করে নেওয়া হচ্ছে বলেও সংবাদ মাধ্যমের সামনে অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর অজান্তে এইসব কাজ করে, বলা হচ্ছে ফাইলে সই করে দিতে। পাশাপাশি কাটমানি নিয়েও তিনি কার্যত অভিযোগ তুলেছেন। বলেছেন, টেন্ডারে ১০-১২ শতাংশ নিয়ে কিছু জানানো হচ্ছে না। পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি-সহ কয়েকজন সদস্য এই কাজে যুক্ত বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
দলের জেলা সভাপতি ছাড়াও জেলা সভাধিপতি, বর্ধমান উত্তরের মহকুমা শাসককে বিষয়টি জানানো হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি।

বন্ধ উন্নয়নের কাজ
এই টানাপোড়েনের জেরে এলাকার উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ভাতারের বেশ কিছু জায়গায় রাস্তা ও ড্রেনের কাজ বন্ধ বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সরকারি সূত্রে খবর, প্রায় ১৮ টি টেন্ডারের ১ কোটি টাকার ওপরে কাজ আটকে রয়েছে।

অভিযোগ অস্বীকার বিধায়কের
যদিও সব অভিযোগই কার্যত অস্বীকার করেছেন ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির অভিযোগ সম্পর্কে তাঁর প্রতিক্রিয়া, তাঁর (মানগোবিন্দ) সঙ্গে কিছু হয়নি। টেন্ডার কমিটিতে তিনি নেই বলে দাবি করেছেন বিধায়ক। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ প্রয়াত হওয়ার জেরে একটি টেন্ডার কমিটি করা হয়েছে। অন্যদিকে সভাপতির ছুটি নেওয়ার প্রসঙ্গে বিধায়কের দাবি উনার সন্তান হওয়ার জেরে একমাস আসেননি। আবার তিনি তিনমাসের ছুটি নিয়েছেন। সভাপতিকে জোর করে ছুটি নেওয়ানোর অভিযোগও অস্বীকার করেছেন তিনি। বিধায়কের আরও দাবি, তিনি পঞ্চায়েতে যান না।

অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সহ-সভাপতিও
অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সুমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেছেন, সভাপতি না আসার কারণেই উন্নয়নের কাজ বন্ধ। টেন্ডারে জোর সরে সই করানোর অভিযোগও উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। সভাপতির উপস্থিতিতেই টেন্ডার অফ লাইনে করার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও দাবি করেছেন সহ সভাপতি। সহ-সভাপতির আরও দাবি সভাপতি নিজের সন্তানকে নিয়ে অফিসে আসায় অন্য মহিলা প্রতিনিধিরা বলেছেন, না আসতে।
ভাতারের বিডিও জানিয়েছেন, সভাপতি ছুটির আবেদন করেছেন। জেনারেল বডির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে সভাপতি যতদিন না আসবেন, ততদিন সহ-সভাপতিই দায়িত্ব সামলাবেন।

পাশে নেই জেলা-পরিষদের সহ-সভাপতিও
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির অভিযোগের পাশে দাঁড়াননি জেলা-পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডুও। তিনি দাবি করেছেন, সভাপতি অফিসে আসছিলেন না আবার ছুটিও নেননি। বিধায়ক ও সহ-সভাপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য দ্বিতীয় কোনও ব্যক্তি তাঁকে বুদ্ধি দিচ্ছে।
প্রসঙ্গেত উল্লেখ্য একসময়ে ভাতার বিধানসভা এবং পঞ্চায়েতে নিরঙ্কুশ ক্ষমতায় থাকা সিপিএমের আসন সংখ্যা এই পঞ্চায়েতে মাত্র একটি। ৩৭ টি আসনের মধ্যে ৩৬ টিই তৃণমূলের। বিধায়কও তৃণমূলের। যে কারণেই সুন্দরী মার্ডির প্রশ্ন, সবাই তো দিদির লোক, তাও কেন এমন হচ্ছে?
করোনার আর-ভ্যালু আরও কমল! তৃতীয় ঢেউ কবে শীর্ষে পৌঁছবে, হিসেব কষে দিন জানাল মাদ্রাজ আইআইটি