তৃণমূল কাউন্সিলররা মুচলেকা লিখে দিলেন, অরূপের চালে বাজিমাত কালনা পুরসভায়
পুরসভায় বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জিতেও বোর্ড গঠন করতে পারেনি। তৃণমূলের প্রস্তাবিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন সিংহভাগ কাউন্সিলর। এই অবস্থায় তৃণমূলের টিকটে জয়ী ১৭ জন কাউন্সিলরকে তলব করা হয়েছিল কলকাতায়।
পুরসভায় বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জিতেও বোর্ড গঠন করতে পারেনি। তৃণমূলের প্রস্তাবিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন সিংহভাগ কাউন্সিলর। এই অবস্থায় তৃণমূলের টিকটে জয়ী ১৭ জন কাউন্সিলরকে তলব করা হয়েছিল কলকাতায়। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করে সমাধান সূত্র বের করে এনেছেন।
পূর্ব বর্ধমানের কালনা পুরসভায় চেয়ারম্যান পদ নিয়ে যে বিবাদ তৈরি হয়েছিল, তা মিটে গেল। তৃণমূল কাউন্সিলররা দলের প্রস্তাবিত প্রার্থীকেই চেয়ারম্যান মেনে নিতে রাজি। এ ব্যাপারে কাউন্সিলররা মুচলেকা লিখে দিয়েছেন বলে সূত্রের খবর। এখনও শুধু সিদ্ধান্ত ঝুলে রয়েছে তপন পোড়েলকে নিয়ে। প্রস্তাবিত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল দল থেকে। এখন সেই তপন পোড়েলকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে কি না, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব।
কালনা পুরবোর্ডের চেয়ারম্যান ও ভাইসচেয়ারম্যান কে হবেন, তা জানিয়ে খামবন্দি চিঠি পাঠানো হয়েছিল। ১৫ মার্চ পুরমন্ত্রীর স্বাক্ষর করা ওই চিঠি সাংবাদিক বৈঠকে পড়ে শোনান জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। তারপরই কাউন্সিলররা চেয়ারম্যান পদে আনন্দ দত্তের বিরুদ্ধে দাঁড়ান। তাঁরা ভাইস চেয়ারম্যান তপন পোড়েলকে চেয়ারম্যান হিসেবে চান।
পূর্ব বর্ধমানের কালনা পুরসভায় তৃণমূলের প্রস্তাবিত প্রার্থী গোহারা হারেন দলেরই বিক্ষুব্ধ প্রার্থী তপন পোড়েলের কাছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে বন্ধ রাখতে হয় বোর্ড গঠন। এই অবস্থায় কালনা পুরসভায় জয়ী ১৭ প্রার্থীকে তলব করে তৃণমূল। তৃণমূলের মন্ত্রী তথা জেলার পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসে সমাধান সূত্রে বের করে আনেন। সবাই রাজি হন চেয়ারম্যানকে মেনে নিতে।
মঙ্গলবার কালনা পুরসভার ১৭ জন জয়ী তৃণমূল প্রার্থী কলকাতায় নেতাজি ইন্ডোর স্টেজডিয়ামে বৈঠকে বসেন। এই বৈঠকে ছিলেন বহিষ্কৃত তপন পোড়েলকেও। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, রাজ্যর মন্ত্রী স্বপন দেবনাথও। অরূপ বিশ্বাস ১২ জন তৃণমূল কাউন্সিলরের বক্তব্য শোনেন। কেন তারা দলের ঘোষিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীকে মানলেন না, তা জানতে চাওয়া হবে। তারপর তৃণমূলের তরফে বার্তা দেওয়া হয়, মানতে হবে দলের সিদ্ধান্ত। তা মেনেও নেন বিক্ষুব্ধরা সবাই।
পূর্ব বর্ধমানের কালনা পুরসভার চেয়ারম্যান দলের তরফ থেকে আগে থেকেই নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। সেইমতো কাউন্সিলরদের শপথগ্রহণের পর বোর্ড গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ১৬ মার্চ। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় বাধে গোল। তৃণমূলের নির্ধারিত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রদর্শন করে সিংহভাগ কাউন্সিলর সরে দাঁড়ান। তাঁরা দলের প্রস্তাবিত চেয়ারম্যানকে না মেনে ওই পদে তপন পোড়েলকে সমর্থন করে বসেন। তৃণমূলের তরফে কালনা পুরসভার নতুন চেয়ারম্যান করা হয় আনন্দ দত্তকে। আর ভাইস চেয়ারম্যান করা হয় তপন পোড়েলকে। তপন পোড়েলের সমর্থনেই বেশিরভাগ কাউন্সিলর আওয়াজ তোলেন। ভোটাভুটি হলে দেখা যায়, দলের ১২ জন কাউন্সিলর তপন পোড়েলের সমর্থনে ভোট দিয়েছেন। এরপর তপন পোড়েলকে বহিষ্কার করা হয়।