একুশের 'ডাবলে'ও এই জেলায় শূন্য পেয়েছে তৃণমূল! ২৩-এর লক্ষ্যে শুরু অভিযান
একুশের ‘ডাবল সেঞ্চুরি’তেও চা-বলয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছিল তৃণমূলকে। বাংলার চা-বলয়ের ৫টি বিধানসভা আসনেই তৃণমূল গোহারা হয়েছিল। এবার পঞ্চায়েতের আগে তাই বিশেষ নজর দিল তৃণমূল কংগ্রেস।
একুশের 'ডাবল সেঞ্চুরি'তেও চা-বলয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছিল তৃণমূলকে। বাংলার চা-বলয়ের ৫টি বিধানসভা আসনেই তৃণমূল গোহারা হয়েছিল। এবার পঞ্চায়েতের আগে তাই বিশেষ নজর দিল তৃণমূল কংগ্রেস। শুধু চা-বলয়ই নয়, এবার গোটা উত্তরবঙ্গকে নিয়ে আলাদা করে ভাবছেন মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা।
জেলার পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রেই হার তৃণমূলের
২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল যে জেলায় সবথেকে খারাপ ফলাফল করেছে, তা হল আলিপুরদুয়ার। এই জেলাকে বলা হয় চা-বলয়। এই জেলার পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রেই হার মানতে হয়েছে তৃণমূলকে। এ ছাড়াও উত্তরবঙ্গের একাধিক আসন হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূলের। দক্ষিণবঙ্গে প্রভূত সাফল্য তাদের নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে দিয়েছে শুধু।
বুথ সংগঠনে জোর দিতে ব্লক নেতৃত্বকে গাইডলাইন
আলিপুরদুয়ার জেলাকে এবার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। আলিপুরদুয়ার জেলা নিয়ে বৈঠকে বুথ সংগঠনে জোর দিতে বলেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন থেকেই জনসংযোগ বাড়ানোর কথা বলেছেন তিনি। প্রতি বাড়িতে বাড়িতে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলা নেতৃত্বকে। জেলা নেতৃত্ব আবার ব্লক নেতৃত্বকে গাইডলাইন পাঠিয়ে দিয়েছে।
অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের লক্ষ্যে অভিযান তৃণমূলের
অভিষেকের বার্তা আসার পর আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি প্রকাশ বরাইক জানিয়েছেন, এখন থেকে প্রতিটি বাড়ি বাড়ি অভিযান চালাতে হবে। দায়িত্ব ভাগ করে সবাইকে নেমে পড়তে হবে বুথ সংগঠনকে মজবুত করতে। এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনতে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করাই মূল লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন অভিষেক। সেইমতো বুথ সংগঠনের জোরেই পঞ্চায়েত জিততে হবে। কোনওরকম জোর খাটানো যাবে না।
২০১৯ থেকেই চিন্তা বেড়েছে, হাতছাড়া হয়েছে জেলা
২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই জেলার গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে গরিষ্ঠ অংশ, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে থাকলেও ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচন থেকে এই অঞ্চলে ধস নামতে শুরু করে। ২০২১-এ তার রেশ থেকে গিয়েছিলেন। ফলে চা-বাগান, আন্তর্জাতিক সীমানা, আদিবাসী-রাজংশী ভোট ও রাজ্যের অন্যতম বৃহৎ পর্যটনক্ষেত্র হওয়ার একাধিক সুযোগ-সুবিধা থাকলেও এই জেলার ফল চিন্তায় ফেলে দেয় তৃণমূল কংগ্রেসকে।
২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রভূত সাফল্য তৃণমূলের
এবার ২০২৩-এর পঞ্চায়েত ও ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে ঘুরে দাঁড়াতে বদ্ধপরিকর তৃণমূল কংগ্রেস। সেই লক্ষ্যেই অঙ্ক কষে তারা এগোতে চাইছে। ২০১৮ সালে ৬৬টির মধ্যে ৪৩টি পঞ্চায়েত দখল করেছিল তৃণমূল। বিজেপি দখল করেছিল ৯টি পঞ্চায়েত, বাম ও কংগ্রেস একটি করে, আর বাকি ১২টি পেয়েছিল অন্যান্যরা। ৬টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ৫টিই গিয়েছিল তৃণমূলের দখলে। বিজেপি পেয়েছিল একটি। জেলা পরিষদের ১৮ আসনের ১৭টিতে জয়ী হয় তৃণমূল, একটি জেতে বিজেপি।
২০১৯ ও ২০২১-এ হার মানতে হয়েছে তৃণমূলকে
কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে ৫৫ শতাংশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন বিজেপির জন বার্লা। তৃণমূলের দশরথ তিরকে পান মাত্র ৩৩ শতাংশ ভোট। আবার বিধানসভায় বিজেপি পায় ৫০ শতাংশ ভোট, তৃণমূল সেখানে একটু বেড়ে ৪০ শতাংশ। ফলত ৫ বিধানসভা কেন্দ্রেই পরাজয় ঘটে তৃণমূলে। এবার এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস।