২০২৪-এ পাহাড়ে অ্যাডভান্টেজ তৃণমূল! জিটিএ-শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ দিল অক্সিজেন
২০২৪-এ পাহাড়ে অ্যাডভান্টেজ তৃণমূল! জিটিএ-শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ দিল অক্সিজেন
দার্জিলিংয়ের পাহাড় ও সমতল- উভয় জাগাতেই বিপুল জয় পেয়েছে তৃণমূল ও তৃণমূলের বন্ধু শক্তি। ২০২৪-এর আগে পাহাড় বা শিলিগুড়ি তথা দার্জিলিংয়ের নির্বাচনী ফলে অ্যাভান্টেজ পেল তৃণমূল। সমতলে অর্থাৎ শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদে বিপুল জয় পেয়েছে তৃণমূল। আর পাহাড়ে বিপুল জয় পেয়েছে বন্ধু অনীত থাপার দল। সব মিলিয়ে তৃণমূল লোকসভা ভোটের আগে স্বস্তিতে।
তৃণমূল ২০২৪-এর নির্বাচনের পরিকল্পনায় পাহাড়
বিমল গুরুংয়ের একদা ডানহাত বিনয় তামাংয়ের হাত ধরে জিটিএতে খাতা খুলেছে তৃণমূল। এবার জিটিএ নির্বাচনে মাত্র ১০টি আসনে লড়াই করে ৫টি আসনে জয় পেয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। তৃণমূল পাহাড়ের এই ফলে উচ্ছ্বসিত। এই ফলকে পাথেয় করে তৃণমূল ২০২৪-এর নির্বাচনে পাহাড়ের আসনটি দখলে আনার পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে আবারও।
তৃণমূলের ঝুলিতে দার্জিলিং আসনটি তুলে দেওয়াই লক্ষ্য
বিনয় তামাং জিটিএ নির্বাচনে জেতার পর তৃণমূলের হয়ে তাঁর পরবর্তী টার্গেট ফিক্সড করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমার পরবর্তী লক্ষ্য আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ঝুলিতে দার্জিলিং আসনটি তুলে দেওয়া। সেই লক্ষ্য নিয়েই তাঁরা এগিয়ে যাবেন। কিন্তু কোন অঙ্কে দার্জিলিং আসনটি দখলের স্বপ্ন দেখছে তৃণমূল, তার ব্যাখ্যাও শোনা গিয়েছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মুখে।
তৃণমূল পাহাড়ে ২০২৪-এ টেক্কা দিতে পারে বিজেপিকে
পাহাড়ে সম্প্রতি জিটিএ নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছে অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা বা বিজিপিএম। বিমল গুরুংয়ের পর অনীতের কর্তৃত্ব পাহাড়ে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আর বিমল গুরুংয়ের পরবর্তী সময়ে পাহাড়ে অনীত থাপা জাঁকিয়ে বসেছেন, তা প্রমাণ করে দিয়েছে জিটিএ নির্বাচন। অনীত থাপার সঙ্গে দীর্ঘদিন ঝরেই সুসম্পর্ক রয়েছে তৃণমূলের। সেই সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে তৃণমূল পাহাড়ে ২০২৪-এর নির্বাচনে টেক্কা দিতে পারে বিজেপিকে।
‘বন্ধু’ অনীত থাপাকে নিয়ে পাহাড় দখলের পরিকল্পনা!
বিজেপি এতদিন বমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা আর জিএনএলএফ-সহ পাহাড়ে অন্যান্য দলকে করায়ত্ত করে পাহাড়ের লোকসভা আসন দখল করে এসেছে। বাইচুং ভুটিয়া থেকে শুরু করে অমর রাইকে প্রার্থী করেও তৃণমূল পাহাড়ে ফায়দা তুলতে পারেনি এতদিন। এবার তাঁরা 'বন্ধু' অনীত থাপাকে নিয়ে পাহাড় নিজেদের হাতে রাখতে চাইছে।
অনীত আর বিনয় ফের এক হয়ে কাজ করবেন!
এবার হামরো পার্টির উত্থান রুখে জিটিএ-র দখল নিতে সমর্থ হয়েছে একা অনীত থাপার বিজিপিএম। তাঁরা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে। ধুয়ে মুছে সাফ করে দিয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চকে। অনীত থাপার বিপুল জয়ের পর থেকেই শোনা যাচ্ছে তাঁরা জিটিএ বোর্ড গড়তে পারে তৃণমূলকেও সঙ্গে নিয়েই। তৃণমূলে রয়ছে বন্ধু বিনয় তামাং। অনীত আর বিনয় ফের এক হয়ে কাজ করতে পারেন জিটিএ-তে। সেইসঙ্গে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে জয়ের রূপরেখাও তৈরি করতে পারে তৃণমূল।
গুরুংয়ের বিকল্প হয়ে পাহাড়ে যখন উঠে এসেছেন অনীত
চার মাস আগে দার্জিলিং পুরসভা নির্বাচনে হামরো পার্টি জয়ী হয়েছিল। অজয় এডওয়ার্ডের পার্টি অবশ্য এবার সুবিধা করতে পারেনি জিটিএ নির্বাচনে। অনীত থাপার দলের কাছে হেরে প্রধান বিরোধী দল হয়েই খুশি থাকতে হয়েছে তাদের। বিজিপিএম পালাবদল ঘটিয়ে দিয়েছে পাহাড়ে। গুরুংয়ের বিকল্প শক্তি হিসেবে পাহাড়ে উঠে এসেছেন অনীত থাপা।
পাহাড়ে জিটিএ চলবে সিংহভাগ প্রাধান্য নিয়ে
জিটিএ নির্বাচনে এবার মোট ৪৫টি আসনের মধ্যে এককভাবে ২৭টি আসনে জিতে ক্ষমতায় এসেছে অনীত থাপার দল বিজিপিএম। একদা তাঁর সঙ্গী বিনয় তামাংয়ের হাত ধরে তৃণমূল পাঁচটি আসন জিতেছে এবার। আর নির্দল প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন ৫টি আসনে। তার মধ্যে আবার চারজনই বিজিপিএম সমর্থিত। ফলে পাহাড়ে গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন তাঁরা চালাবেন সিংহভাগ প্রাধান্য নিয়ে। বিরোধী শুধু হামরো পার্টির ৮ জন।
তৃণমূল চাইছে অনীত-বিনয়কে নিয়ে পাহাড় দখল নিতে
তৃণমূল চাইছে অনীত থাপা ও বিনয় তামাংকে সঙ্গে নিয়ে পাহাড় দখল নিতে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তৃণমূল বন্ধু অনীত থাপার কাছে আবদার করতেই পারে জিটিএ পেয়েছো তোমরা, এবার আমাদের লোকসভা আসনটি দাও। যেমন বিজেপি এতদিনে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থন নিয়ে দার্জিলিং লোকসভা আসনটি জিতে আসছিল।
তৃণমূল নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে দার্জিলিং নিয়ে
তারপর শিলিগুড়ি পুরসভার পর শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদেও তৃণমূল বড় জয় পেয়েছে। মাত্র চার মাসের ব্যবধানে বড় জয়ের পর পাহাড়-সহ দার্জিলিংয়ে যে তৃণমূল দ্রুত প্রসার বৃদ্ধি করছে, তা বলাই যায়। নিজেদের শক্তিবৃদ্ধি আর মিত্রশক্তির ক্ষমতা দখলে তৃণমূল নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে দার্জিলিং লোকসভা আসনটি নিয়ে, যা আজ পর্যন্ত দখলে আনতে পারেনি তৃণমূল।
গুরুংয়ের পাহাড় এবার অনীতের! হামরো পার্টিকে উড়িয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ একা বিজিপিএম