বঙ্গভঙ্গের পক্ষে বিজেপি! পঞ্চায়েত ভোটের আগে অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি তৃণমূলের
পৃথক রাজ্যের দাবিতে বারবার সরব হয়েছেন বিজেপির সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। বাংলাকে ভেঙে টুকরো টুকরে করতে চাইছে বিজেপি, এমন অভিযোগও করেছে তৃণমূল।
পৃথক রাজ্যের দাবিতে বারবার সরব হয়েছেন বিজেপির সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা। বাংলাকে ভেঙে টুকরো টুকরে করতে চাইছে বিজেপি, এমন অভিযোগও করেছে তৃণমূল। আর নির্বাচন এলেই এই বঙ্গভঙ্গের আওয়াজ তোলে কোনও না কোনও সংগঠন, তা নিয়ে জোরদার জল্পনা শুরু হয়ে যায়, যেমন এবার উত্তরবঙ্গ ও বিহারের খানিক অংশ নিয়ে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি সামনে এসেছে।
বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে উত্তরবঙ্গকে ভেঙে নিয়ে পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি ওঠায় বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে সম্প্রতি। তারপর পের গ্রেটার কোচবিহারের নেতা অনন্ত মহারাজের সাম্প্রতিক দাবিকে নিয়ে বঙ্গভঙ্গ ইস্যুতে উত্তাল হয়ে উঠল রাজ্য। পৃথক রাজ্যের দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছেন অনন্ত মহারাজ। তাঁর দাবি, উত্তরবঙ্গকে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
তারপরই জল্পনার পারদ চড়তে শুরু করে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয়মন্ত্রী নিশীথ প্রমাণিকের সঙ্গে বৈঠক করেন গ্রেটার নেতা অনন্ত মহারাজ। তারপরই তিনি উত্তরবঙ্গকে নিয়ে নতুন দাবি করে বসেন। যদিও নিশীথ প্রামাণিক তাঁর দাবি সম্পূর্ণ উড়িয়ে দেননি। তিনি বলেন সময় মতো বলে দেওয়া হবে। তবে তা নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। তাঁর এই বিবৃতি আবার উসকে দেয় অনন্ত মহারাজের দাবিকে।
এর আগেও বহুবার বিজেপির সাংসদ বা বিধায়করা উত্তরবঙ্গকে নিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবি তুলেছেন। সাংসদ তথা কেন্দ্রীয়মন্ত্রী জন বার্লা এর আগে পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি করেছিলেন। তারপর বিজেপি দ্বিধাবিভক্ত হয়ে গিয়েছিল এই ইস্যুতে। জন বার্লার দাবিকে অনেকেই সমর্থন করেছিলেন। আবার জন বার্লার পরে আর এক সাংসদ সৌমিত্র খাঁ দাবি করেছিলেন পৃথক রাঢ় বাংলার। এরপর বিজেপি ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে জানিয়ে দিয়েছিল সাংসদ-বিধায়কদের দাবি নিতান্তই তাঁদের ব্যক্তিগত, তা দল সমর্থন করে না।
এবার বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে বৈঠকের পর গ্রেটার নেতা অনন্ত মহারাজের দাবি আর স্বয় মন্ত্রীর নীরবতা ফের পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবিকে উসকে দিচ্ছে। তারপর দার্জিলিংয়ে আবার গোর্খ্যাল্যান্ডের দাবিও উঠে পড়েছে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতা বিমল গুরুং জানিয়েছেন, যে দল পৃথক গোর্খ্যাল্যান্ডকে সমর্থন করবে, তাকেই সমর্থন করব আমরা।
সম্প্রতি অনন্ত মহারাজ নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে বৈঠকের পর যে দাবি করেছেন তা নিয়ে বিজেপি আবার অস্বস্তিতে পড়েছে পঞ্চায়েত ভোটের আগে। তৃণমূল পাল্টা প্রচার শুরু করেছে, বিজেপি আসলে বঙ্গভঙ্গের পক্ষে। বাংলাকে টুকরো টুকরো করতে চায় বিজেপি। বিজেপি এখন স্পষ্ট করে বলুক, ওরা কি বঙ্গভঙ্গের পক্ষে না বিপক্ষে!