উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সমাজে দুর্গাপুজোর পরে তিনদিন ধরে চলে 'অন্য পুজো'
উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সমাজ মেয়ে রূপী দুর্গাকে বিদায় না জানিয়ে শুরু করে আরও তিনদিনের পুজা। তবে দেবী এখানে দুর্গা রূপে পূজিতা হন না, পূজিতা হন ভান্ডানী দেবী রুপে। এমনই প্রথা চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে।

জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলার আদি বাসিন্দা রাজবংশী সমাজে ভান্ডানী দেবীর পুজা বহুদিন ধরে প্রচলিত। এলাকা ভেদে দেবী ভিন্ন ভিন্ন নামে পুজিতা হন। কোথাও ভান্ডারনী, কোথাও ভান্ডানী, কোথাও বনদুর্গা আবার কোথাও বনদেবী আবার কোনও কোনও অঞ্চলে ডাংধারী মাও (লাঠি ধারী মা) রূপে পুজিতা হন। রাজবংশী ভাষায় লাঠিকে বলা হয় ডাং আর মাও হল মা।
এই পুজোর প্রচলন সম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়না। বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন লোকশ্রুতি জড়িয়ে রয়েছে এই পুজো বিষয়ে। তবে পুজো প্রচলনের মুল বিষয়টি এক। তা হল দেবি দুর্গার তিনদিনের পুজো তে অনেক সাধারণ মানুষ অংশগ্রহন করতে পারতেন না সম্ভবত সমাজে বর্ণভেদ প্রথা চালু থাকায়।
দশমীর দিন দুর্গা যখন কৈলাসের পথে যাত্রা করেছেন তখন পুজো দিতে না পারা সাধারণ মানুষ দেবীর পথ আটকে প্রার্থনা জানায় তাদের পুজো নিয়ে যেতে। দেবী তাদের বলেন দশমী চলে গেছে তাই দশভূজা রুপে তিনি পুজো নিতে পারবেন না। দেবি তখন চতুর্ভূজা রুপে অন্য দেবীর ভান ধরেন তাই দেবীর নাম হয় ভান্ডানী। দেবী সিংহ বাহনা চতুর্ভুজা রুপে আবার কোথাও ব্যাঘ্রবাহনা চতুর্ভুজা রুপে পুজিতা হন। লক্ষী, সরস্বতী, কার্তিক, গনেশ এবং মহিষাসুর দেবির সাথে থাকেননা। একক মুর্তিতেই দেবীর পুজো হয়।

উত্তরবঙ্গের রাজবংশী সম্প্রদায়ের একান্ত নিজস্ব এই পুজো বর্তমানে সব সম্প্রদায়ের মানুষের অংশ গ্রহনে সার্বজনিক রুপ পেয়েছে। দেবী ভান্ডানী উত্তরবঙ্গের লৌকিক দেবী রুপে হয়ে উঠেছেন লোক সংস্কৃতির ধারক।
বচসা থেকে মহেশতলায় শুটআউট, চাঞ্চল্য এলাকায়