নির্বাচনী ফল প্রকাশের আগে হঠাৎ অশান্ত পাহাড়, গুরুংয়ের অভিযোগে বিদ্ধ অনীত
পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচন হয়েছে শান্তিপূর্ণ। কিন্তু নির্বাচন মিটতেই হঠাৎ অশান্ত হয়ে উঠল পাহাড়। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা প্রধান বিমল গুরুংয়ের বাড়িতে হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচন হয়েছে শান্তিপূর্ণ। কিন্তু নির্বাচন মিটতেই হঠাৎ অশান্ত হয়ে উঠল পাহাড়। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা প্রধান বিমল গুরুংয়ের বাড়িতে হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, রবিবার গভীর রাতে বিমল গুরুংয়ের বাড়িতে হামলা চালায় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার কর্মীরা।
রবিবার সুষ্ঠুভাবেই ভোট মিটেছে। কোনও অশান্তির আঁচ পাওয়া যায়নি পাহাড়ে। এবার বিমল গুরুং পাহাড়ের ভোট থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। ভোটের বিরোধিতা করে তিনি নিজের ভোটাধিকারও প্রয়োগ করেননি পাহাড়ে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও। রাজনৈতিক মহল অবশ্য মনে করছেন, পাহাড়ের ভোটে না থেকেও ছিলেন গুরুং।
জিটিএ নির্বাচন হোক, তা চাননি বিমল গুরুং। তিনি চেয়েছিলেন পাহাড়ের রাজনৈতিক সঙ্কট মিটিয়ে তারপর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে ভোট করুন। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে পাহাড়ে অনতিবিলম্বে ভোটের ব্যবস্থা করেন। এবার পাহাড়ের ভোটে মূল লড়াই ছিল অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টির সঙ্গে অনীত থাপার গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা।
গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা থেকে বেরিয়ে এসে গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা গঠন করেছিলেন অনীত থাপা। পাহাড় গুরুংয়ের হাত ছেড়ে তাঁর দিকেই সমর্থনের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। অনীত থাপার এই উত্থান রুখতেই বিমল গুরুং এবার পাহাড়ে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করান। অনীত থাপার গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা যেখানে জিটিএ-র ৪৫টি আসনের মধ্যে ৩৬টিতে প্রার্থী দিয়েছে, সেখানে নির্দল প্রার্থী এবার ২১০ জন।
আর সম্প্রতি পাহাড়ে উত্থান হয়েছে হামরো পার্টির। অজয় এডওয়ার্ডের নেতৃত্বাধীন এই পার্টি দার্জিলিং পুরসভায় জিতেছে একক কৃতিত্বে। এবার জিটিএ নির্বাচনে জিততে বদ্ধপরিকর। অনীথ থাপার গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা যখন বিমল গুরুংয়ের নির্দলের মোকাবিলা করতে হচ্ছে, তখন পাহাড়ে ড্যাংডেঙিয়ে জিতে যেতে পারে হামরো পার্টি।
এই পরিস্থিতিতে পাহাড়ে নির্বাচনী ফলাফল প্রকাশের আগে উত্তাপ ছড়াল। ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার কর্মীরা গুরুংয়ের বাড়িতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। সেই সময় বিমল গুরুং বাড়িতে উপস্থিত না থাকলেও, উপস্থিত ছিলেন তাঁর স্ত্রী আশা গুরুং। এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য দীপেন ম্যালে জানান, রাত দুটো নাগাদ পাতালেবাসে হামলা চালানো হয়।
অভিযোগ, কয়েকজন লোক বাড়িতে চড়াও হয়। তারা দরজা ভাঙার চেষ্টা করে। তাদের হাতে খুকরি ও অন্যান্য হাতিয়ারও ছিল। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে সেসব। এই মর্মে দার্জিলিং থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। দার্জিলিং জেলা পুলিশের এসপি জানান, পুলিশ এই ঘটনার পূর্ণ তদন্ত করবে। সমস্ত পক্ষকেই এলাকায় শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়।