পৃথক রাজ্যের দাবি থেকে সরল মোর্চা, পাহাড়ের ‘সমীকরণ’ বদলাচ্ছে মমতার জমানায়
পৃথক রাজ্যের দাবি থেকে সরল মোর্চা, পাহাড়ের ‘সমীকরণ’ বদলাচ্ছে মমতার জমানায়
বিজেপির সঙ্গে জোট থাকাকালীন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা পৃথক রাজ্যের দাবি তুলে এসেছে। তারা দার্জিলিংকে গোর্খাল্যান্ড বানাতে চেয়েছে। কিন্তু সেই দাবি থেকে এতদিন পর তাঁরা সরে এল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে মোর্চার পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, তাঁরা পৃথক রাজ্য চান না, তাঁর চান বাংলার মধ্যে থেকেই স্বায়ত্তশাসন।
পাহাড়ের গোর্খাল্যান্ড দাবি দীর্ঘদিনের। জিএনএলএফও এই দাবিতে সরব ছিল। পরবর্তী সময়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাও একই দাবি উত্থাপন করে পাহাড়ে। কিন্তু সেই দাবিপূরণ করতে পারেনি তারা। মাঝে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা পৃথক রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের দাবি তোলে। রাজ্যে তৃণমূল বরাবরই পৃথক রাজ্যের দাবির বিপক্ষে ছিল। কিন্তু বিজেপি তাদের দাবি মেনে তাদের সমর্থন নিয়ে পাহাড় থেকে বারবার সাংসদকে জিতিয়ে আনলেও দাবি পূরণ করতে পারেনি।
এখন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা মনে করছে, বিজেপি তাদের ঠকিয়েছে। তাদের সমর্থন নিয়ে শুধু জিতেছে বারবার। কিন্তু পাহাড়বাসীর দাবিপূরণ তারা করেনি। তাই বিজেপিকে আর কোনও সমর্থম নয়। বিজেপি শুধু মিথ্যাচার আর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে জয় হাসিলের ফন্দি করেছে বলে আওয়াজ তুলে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা তাদের পাশ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগেই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা প্রধান বিমল গুরুং প্রকাশ্যে তৃণমূলকে সমর্থনের বার্তা দিয়েছিলেন। সেইমতো তৃণমূলকে সমর্থন করে ভোটোও লড়েন। কিন্তু মোর্চায় ভাঙন তাদেরকে জয় হাসিল করতে দেয়নি। বিমল গুরুংয়ের মোর্চা আর বিনয় তামাংয়ের মোর্চার লড়াইয়ে জয়ী হয় বিজেপি। তারপর বিনয় তামাং মোর্চা চেড়ে সরাসরি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা পুরোটাই বিমল গুরুংয়ের হয়েছে। কিন্তু বিমল গুরুংয়ের মোর্চা সম্প্রতি পুরসভা নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়ে। পাহাড়ে জয়ী হয় নবাগত হামরো পার্টি।
এই প্রেক্ষাপটে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন বিমল গুরুংয়ের প্রতিনিধি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি। তিনি বৈঠকে বলেন, পৃথক রাজ্যের দাবি থেকে সরে আসছেন তাঁরা। তাঁরা চান পাহাড়ে স্বায়ত্ত্শসান। বাংলার অধীনে থেকেই দার্জিলিংয়ের স্বায়ত্তশাসনের পক্ষ গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে সরাসরি প্রশ্ন করেন, কিন্তু বিজেপির সঙ্গে জোট করে তো আপনারা পৃথক গোর্খ্যাল্যান্ডের আওয়াজ তুলেছিলেন। এ প্রসঙ্গে রোশন গিরি বলেন, আমরা সেই অবস্থান থেকে সরে আসছি। বিজেপি আমাদের ঠকিয়েছে। একরাশ প্রতিশ্রুতি দিয়ে শুধু ভোট নিয়েছে, করেনি কিছুই। তাই আমরা বাংলাতে থেকে পাহাড়ের স্বায়্ত্তশাসন চাই।