রাজ্যপালের শীতলকুচি সফরে উত্তেজনা, ধনখড়কে লক্ষ্য করে গো ব্যাক স্লোগান, দেখানো হল কালো পতাকাও
পূর্বসূচি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে কোচবিহার যান রাজ্যপাল। কোচবিহার বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে ফের উদ্বেগ প্রকাশ করেন। রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার কথা বলেন।
এরপরেই সড়কপথে শীতলকুচির উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি। আর গটা রাস্তাতেই তাঁকে লক্ষ্য করে কালো পতাকা দেখানো হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়।
পুলিশের সামনেই রাজ্যপালকে গো ব্যাক স্লোগান
শীতলকুচি যাওয়ার পথে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তাকে লক্ষ্য করে উঠল 'গো ব্যাক' স্লোগান। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। জানা যায়, সেনাবাহিনীর কপ্টারে এদিন কোচবিহারে যান রাজ্যপাল। সেখান থেকে সড়কপথে শীতলকুচির উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। মাথাভাঙা, শীতলকুচি, সিতাই ও দিনহাটার হিংসা কবলিত এলাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি। শীতলকুচি-সহ বিভিন্ন জায়গায় তাঁকে লক্ষ্য করে 'গো ব্যাক' স্লোগান ওঠে। এমনকি রাস্তার ধারে একাধিক জায়গাতে তাঁকে লক্ষ্য করে কাল পতাকাও দেখানো হয় বলে অভিযোগ। এমনকি পুলিশের সামনেই কালো পতাকা দেখানো হয় বলে অভিযোগ। এই বিষয়ে কোনও ব্যবস্থাই পুলিশের তরফে নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে রাজ্যপাল
কোচবিহারের বিভিন্ন এলাকায় রাজনৈতিক সন্ত্রাসের শিকার পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল। তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। ধনকড়কে কাছে পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই কান্নায় ভেঙে পড়েন নির্যাতিত পরিবারগুলি। অন্যদিকে, এদিন রাজ্যপালের সঙ্গেই ছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রমানিক সহ একাধিক বিজেপি নেতৃত্ব।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন তাঁর অনুমতি নিতে হবে
স্বাধীন ভারতের নাগরিকদের দেশের যে কোনও জায়গায় যাওয়ার অধিকার আছে। এদিন বিএসএফ-এর হেলিকপ্টারে কোচবিহার বিমানবন্দরে নেমে এমনটাই মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (jagdeep dhankhar)। এদিন তিনি একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (mamata banerjee) নিশানা করেন। রাজ্যপাল যে শীতলকুচি যেতে চান তা রাজ্য সরকারকে জানিয়েছিলেন। এর পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বলেছিলেন তাঁর (মুখ্যমন্ত্রী) অনুমতি নিতে হবে। যা নিয়ে এদিন রাজ্যপাল চূড়ান্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, তাঁকে জিজ্ঞাসা করে যেতে হবে। কিন্তু তিনি বলে দিতে চান, স্বাধীন ভারতে প্রত্যেকটি নাগরিকের যে কোনও জায়গায় যাওয়ার অধিকার আছে।
মানবাধিকার কমিশন, সংবাদ মাধ্যমকে নিশানা
এদিন তিনি কোচবিহারে মানবাধিকার কমিশন এবং সংবাদ মাধ্যমকে নিশানা করেন। তিনি বলেন, এইসব ঘটনা পশ্চিমবঙ্গেই হচ্ছে বলে, তাঁর বলতে কষ্ট হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন করেন, কোথায় গেল মানবাধিকার সংগঠনগুলি, কোথায় গেল সংবাদ মাধ্যম। তিনি বলেন, বাংলায় এখন প্রয়োজন সৌভ্রাতৃত্বের। তিনি বলেন সংবিধানকে বাঁচাতে যতই বাধা আসুক না কেন, কেই তাঁকে বাধা দিতে পারবে না।
মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন
রাজ্যপাল বলেন, ১০ এপ্রিল শীতলকুচিতে গুলি চালনার দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন ঠান্ডা মাথায় খুন। কিন্তু সেই খুন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ঘটছে। রাজনৈতিক উদ্দেশেই তা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার মানুষ উদ্বেগে রয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আবেদন জানিয়ে তিনি বলেন, এইসব ঘটনায় যেন সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। তিনি বলেন. প্রশাসনিক আধিকারিকদের হাতে মুঠোয় না রেখে তাঁদের কাজ করতে দেওয়া হোক। তিনি প্রশ্ন করেন, কিছু লোকের সাহস হয় কী করে, আইন হাতে তুলে নেওয়ার। তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীকে এব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে তিনি বলেছিলেন, কিন্তু তা এখনও পর্যন্ত তা নেওয়ার কোনও ভূমিকা তাঁর চোখে পড়েনি বলে অভিযোগ করেছেন রাজ্যপাল।