অস্ট্রেলিয়ান ক্যাঙারু কোথা থেকে এল বাংলায়, তদন্ত নামতেই উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
অস্ট্রেলিয়ান ক্যাঙারু কোথা থেকে এল বাংলায়, তদন্ত নামতেই উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য
একের পর এক ক্যাঙারু উদ্ধার হচ্ছে জলপাইগুড়ি থেকে। জলপাইগুড়ির পর শিলিগুড়ি থেকেও উদ্ধার হয়েছে ক্যাঙারু। কিন্তু এই অস্ট্রেলিয়ান ক্যাঙারু আসছে কোথা থেকে? তদন্তকারীরা এখনও তার কোনও হদিশ পায়নি। ক্যাঙারু রহস্য উদ্ঘাটনে নেমে 'গোয়েন্দা'দের কাছে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
অস্ট্রেলিয়ান ক্যাঙারু উত্তরবঙ্গের জেলা থেকে উদ্ধার হওয়ার তদন্তে নেমে বন দফতরের আধিকারিকরা জানতে পেরেছে পাচারের উদ্দেশেই আনা হয়েছিল ক্যাঙারুগুলি। পাচার করতে না পেরেই ফেলে যাওয়া হয় জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ি এলাকায়। প্রথম দিনে দুটি ক্যাঙারু শাবক উদ্ধার হয়। পরের দিন আরও একটি। তারপর শিলিগুড়ি থেকে উদ্ধার হয় একটি মৃত ক্যাঙারু।
তদন্তকারীদের কাছে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। শিলিগুড়ি হয়ে নেপাল বা বাংলাদেশ পাঠানোর উদ্দেশ্য ছিল ক্যাঙারুগুলিকে। সেখান থেকে ক্যাঙারুগুলিকে ঘুর পথে চিনে পাঠানোর উদ্দেশ্য ছিল বলেও জানতে পেরেছে বনাধিকারিকরা। এই ঘটনায় কারা জড়িত এখনও তাদের হদিশ পাননি তদন্তকারীরা। ইতিমধ্যেই উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরুর নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য।
জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। যাঁরা জড়িত রয়েছেন এই ঘটনায়, তাদের আইন অনুযায়ী শাস্তি হবে। এই তদন্তে নেমে মিজোরামে অবৈধ ক্যাঙারুর প্রজনন কেন্দ্র সামনে এসেছে। জলপাইগুড়িতে উদ্ধার হওয়া ক্যাঙারু সেখান থেকে এসেছে বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
মিজোরামে প্রজনন কেন্দ্রে জন্ম নেওয়া ক্যাঙারুর আকার তুলনামূলকভাবে ছোট। উত্তরবঙ্গে উদ্ধার হওয়া ক্যাঙারুগুলিই মিজোরামের প্রজননন কেন্দ্রের কি না তাও জানার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সেইসঙ্গে পাচারচক্রে জড়িতদের সন্ধানে তল্লাশিও শুরু হয়েছে। কারা ওই ক্যাঙারু নিয়ে এল উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়িতে, তা জানতে বিশেষ তদন্তকারী দল তৎপর হয়ে উঠেছে।
বৈকুণ্ঠপুর ডিভিশনের আধিকারিকরা জানান, তাঁদের কাছে খবর ছিল ক্যাঙারু পাচার হতে পারে। সেই কারণে আমরা পাহারা আরও জোরদার করেছিলাম। পাচারকারীরা তা জানতে পেরেই রাস্তায় ক্যাঙারুগুলিকে ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে। এরপর কাঙারুগুলি উদ্ধার করে রাখা হয়েছে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারিতে।
ক্যাঙারুগুলি দুর্বল হয়ে রয়েছে। বেঙ্গল সাফারির ডিরেক্টর সাংমু শেরপা বলেন, ক্যাঙারুগুলিতে স্যালাইন দেওয়ার পাশাপাশি ফল, ঘাস ও অন্যান্য খাবার দেও.য়া হয়েছে। রাখা হয়েছে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে। এখন চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়েছে ক্যাঙারুগুলিতে বেঙ্গল সাফারিতেই রাখা হবে, নাকি কলকাতা আলিপুর চিড়িয়াখানায় আনা হবে। আবহাওয়া বিচার করে তাঁদের রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কিছুদিন পর্যবেক্ষণে রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বেঙ্গল সাফারির ডিরেক্টর।