২২ বছর পর পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোটের বাদ্যি! বিজ্ঞপ্তি জারি করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন
২২ বছর কেটে গিয়েছে পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোট হয়নি। বহুবার আবেদন-নিবেদন করা হয়েছে, কিন্তু নির্বাচন সংঘটিত হয়নি। নানা প্রতিকূলতা ছিল, কিন্তু সেইসব প্রতিকূলতাকে দূরে সরিয়ে পাহাড়ে আবার ভোটের বাদ্যি বেজে গেল।
২২ বছর কেটে গিয়েছে পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোট হয়নি। বহুবার আবেদন-নিবেদন করা হয়েছে, কিন্তু নির্বাচন সংঘটিত হয়নি। নানা প্রতিকূলতা ছিল, কিন্তু সেইসব প্রতিকূলতাকে দূরে সরিয়ে পাহাড়ে আবার ভোটের বাদ্যি বেজে গেল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায় প্রতিকূলতা কাটিয়ে পাহাড়ে ফের পঞ্চায়েত নির্বাচনের দামামা।
২০০০ সালের জুন মাসে শেষবার ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট হয়েছিল। তখন পাহাড়ে সুভাষ ঘিসিংয়ের রাজত্ব। রাজ্যে বাম আমল। কিন্তু তারপর রাজ্যে চারবার পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়ে গেলেও পাহাড় সেই নির্বাচন থেকে দূরে ছিল। পাহাড়ে পুরসভা ভোট হয়েছে, জিটিএ নির্বাচন হয়েছে, কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়নি। ২২ বছর বাদে সেই নির্বাচন এবার হতে চলেছে।
রাজ্য নির্বাচন কমিশন সম্প্রতি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে এই মর্মে। নির্বাচন কমিশন তাঁদের নির্দেশিকায় জানিয়েছে, গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির এলারা ডিলিমিটেযন অর্থাৎ নতপন করে সমীমা পুনর্বিন্যাস এবং সংরক্ষণের তালিকা তৈরির কথা বলা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের এই নির্দেশিকাকে স্বাগত জানান ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সুপ্রিমো অনীত থাপা ও হামরো পার্টির সুপ্রিমো অজয় এডওয়ার্ড।
পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোটের দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি লিখেছিলেন জিটিএ-র চিফ এক্সিকিউটিভ তথা ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সুপ্রিমো অনীত থাপা ও হামরো পার্টির সুপ্রিমো অজয় এডওয়ার্ড। ২৬ অগাস্ট তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি পাঠান। তার চারদিনের মধ্যেই পাহাড়ের পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে সবুজ সংকেত দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুধু ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সুপ্রিমো অনীত থাপা ও হামরো পার্টির সুপ্রিমো অজয় এডওয়ার্ড নন, পাহাড়ের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলিও একই দাবি জানায়। এখন পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি জারি করায় পাহাড়ের গ্রামীণ এলাকাতে উন্নয়নমূলক কাজ হবে স্থানীয় নির্বাচিত বোর্ডের মাধ্যমে।
দার্জিলিং, কার্শিয়াং, মিরিক ও কালিম্পং মহকুমার গ্রামীণ এলাকায় নির্বাচন হবে। আগা পাহাড় ও সমতল মিলে একটা জেলা পরিষদ ছিল। ১৯৮৬ সালের আন্দোলনের পর পাহাড়ি এলাকা নিয়ে তৈরি হয় দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিল। ১৯৮৯ সালে জেলা পরিষদও ভেঙে যায়। গঠিত হয় শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ। মূলত সমতলের এলাকা নিয়ে এই মহকুমা পরিষদ তৈরি হলেও কিছু পাহাড়ি এলাকাও ছিল এই মহকুমা পরিষদে।
২০১১-তে রাজ্যে পালাবদলের পর গঠিত হয় গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা জিটিএ। ২০১২-তে নির্বাচন হয়। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার হাতে ওঠে পাহাড় পরিচালনার ভার। ১০ বছর বাদে ফের নির্বাচন হয়েছে সাম্প্রতিক বছরে। তার আগে হয় দার্জিলিং পুরসভার নির্বাচন। এখনও বাকি ৩ পুরসভার ভোট। মিরিক, কার্শিয়াং ও কালিম্পং পুরসভার ভোটের আগে পঞ্চায়েত ভোটের বাদ্যি বাজিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন।