কোচবিহারের অন্যতম প্রাচীন 'বড় তারা'র পুজো বহন করে চলেছে অনন্য ইতিহাস
এক শতাব্দীরও বেশী সময় ধরে ঐতিহ্যকে বহন করে চলেছে কোচবিহারের অন্যতম প্রাচীন পুজো "বড় তারা"র পুজো। কোচবিহারের মদনমোহন মন্দিরের এই পুজো শতাব্দী প্রাচীন। স্থানীয় মানুষের কাছে এই দেবী "বড় তারা" নামে পরিচিত। প্রথম থেকেই এই পুজোকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসাহ চোখে পড়ার মতন থাকে৷ এবছর করোনা পরিস্থিতিতে একটুও ছেদ পড়েনি এই পুজোর জনপ্রিয়তা ও আড়ম্বরে।
কোচবিহার মহারাজাদের পৃষ্ঠ পোষকতায় কোচবিহারে যে সকল ধর্মীয় অনুষ্ঠান হত এখন তা দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ড। এই দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের উদ্যোগে কোচবিহার মদন মোহন মন্দিরে "বড় তারা" র পুজো হয়ে আসছে।এই পুজোর রীতি অন্য পুজোর থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। গত বছরেও এখানে পুজোতে পাঁচটি বলির প্রথা প্রচলন ছিল, যার মধ্যে ছিল পাঠা, মেষ, হাঁস, পায়রা, মাগুর মাছ।
পুজোর জন্য রক্তের প্রয়োজন তাই মাগুর মাছ বলি চালু থাকছে। এখানে দেবীর ভোগে 'সাটি' মাছ পুড়িয়ে দেওয়ার রীতিও রয়েছে। রাজ পুরোহিত হরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, 'দীর্ঘদিন থেকে নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে এই পুজো অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে, এবার বলি হচ্ছেনা কাজেই এই বিষয়ে অন্যন্য পণ্ডিতদের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তবে আমরা শুধুমাত্র মাগুর মাছ বলির ব্যাপারেই মত জানিয়েছি।
পুজোর উপাচারের পাশাপাশিও এই প্রতিমার রুপেও রয়েছে বৈশিষ্ট্য। প্রায় সাড়ে দশ হাত প্রতিমা এখানে কৃষ্ণবর্ণ। প্রতিমার চার হাতের অস্ত্রতেও রয়েছে ভিন্নতা। প্রথাগত প্রতিমার থেকে এই প্রতিমা অনেকটাই ভিন্ন, এখানে প্রতিমার ডানহাতে রয়েছে খর্গ৷ এছাড়াও প্রতিমার হাতে মুন্ডমালা নেই, তাঁর জায়গায় রয়েছে রক্ত ভরতি একটি সরা। বংশ পরম্পরায় এই মূর্তি তৈরি করে আসছে প্রভাত চিত্র করের পরিবার। লক্ষ্মী পুজোর পর থেকে এই প্রতিমা নির্মাণের কাজ শুরু হয়।