দিদির সুরক্ষা কবচের আড়ালে নিজের রক্ষা কবচ খুঁজছেন মমতা, দুর্নীতিতে বিঁধতে মোক্ষম বাণ সেলিমের
পঞ্চায়েত নির্বাচনে আগে বাংলায় নতুন এক কর্মসূচি চালু করেছে তৃণমূল। ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ নামে নতুন এই কর্মসূচির মাধ্যমে ফের একবার জনসংযোগ করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে আগে বাংলায় নতুন এক কর্মসূচি চালু করেছে তৃণমূল। 'দিদির সুরক্ষা কবচ' নামে নতুন এই কর্মসূচির মাধ্যমে ফের একবার জনসংযোগ করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিকে এবার কটাক্ষ করলেন সিপিএণ রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম।
সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের মহম্মদ সেলিম দার্জিলিংয়ে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ব্যাখ্যা করেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেওয়া নতুন কর্মসূচি দিদির সুরক্ষা কবচ চালু করার আসল পরিকল্পনার কথা। সেলিমের ব্যাখ্যা, আসলে তিনি দিদিরক সুরক্ষা কবচের মাধ্যমে নিজের রক্ষা কবচ বানাতে চেয়েছেন।
সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বলেন, এখন নিজের রক্ষা কবচ খুঁজছেন দিদি। কেননা যেভাবে রাজ্যের শাসক দলের নেতা, মন্ত্রী থেকে শুরু করে নীচুতলার নেতা-কর্মীরা দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন, তাতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিদির সুরক্ষা কবচ চালু করে নিজের ফাঁড়া কাটাবার পরিকল্পনা করছেন।
শিলিগুড়ির অনিল বিশ্বাস ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের নয়া কর্মসূচি আসলে নিজেদের বাঁচার অস্ত্র। রাজ্যের শাসক দলকে কটাক্ষ করে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সম্পাদক মহম্মদ সেলিম মোক্ষম বাণ ছাড়লেন এদিন। দুর্নীতি নিয়ে রাজ্যের সরকার ও সরকার দলকে বিঁধলেন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সংগঠনকে চাঙ্গা করতে উত্তরবঙ্গ সফরে এসেছেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। শিলিগুড়ির পর উত্তরবঙ্গের অন্যান্য জেলায় দলীয় কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করবেন তিনি। পাশপাশি এদিন মহম্মদ সেলিম পাহাড়ের রাজনীতি নিয়েও মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, পাহাড়ে মাঝে মাঝে রাজনৈতিক পট বদলে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নষ্ট করছে রাজ্যের শাসক দল। তিনি আশাবাদী, পাহাড়ের স্বার্থে পাহাড়বাসী এ রাজনৈতিক নেতারা আগামীদিনে অবশ্যই পাহাড়ের হিতে চিন্তা ভাবনা করবেন। তাঁরা বুঝবেন বামপন্থীরাই একমাত্র বিকল্প। তৃণমূল বা বিজেপিকে দিয়ে দেশ বা রাজ্য চলবে না।
এবার গোটা বাংলার সঙ্গে পাহাড়েও নির্বাচন হবে। তাই শুধু শিলিগুড়ি নয়, দার্জিলিংয়ের পাহাড়কেও এক সূত্রে বাঁধতে পরিকল্পনা নিলেন তিনি। রবিবার শিলিগুড়ির অনিল বিশ্বাস ভবনে জেলা কমিটির সদস্য ও নেতৃত্বদের নিয়ে বৈঠক করেন মহম্মদ সেলিম।
জেলা কমিটির বৈঠকে আলোচনা সাপেক্ষে নেতৃত্বকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়ার পর এদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম জানান, রাজ্যজুড়ে আবাস যোজনা দুর্নীতি, ১০০ দিনের কাজের টাকা নিয়ে দুর্নীতি-সহ একাধিক অভিযোগ উঠছে। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল ছেয়ে গিয়ছে দুর্নীতিতে।
এই দুর্নীতির সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন তীব্র করে সিপিএম জানান দিয়েছে, বিজেপি নয়, বামপন্থীরাই একমাত্র বিকল্প হতে পারে। এই মুহূর্তে রাজ্যে একাধিক ইস্যু রয়েছে, তা তুলে ধরে আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। বামপন্থীদের আরও এককাট্টা হতে হবে। গড়ে তুলতে হবে জনভিত্তি। মানুষকে বোঝাতে হবে, বামপন্থীরাই প্রকৃত বিকল্প।
বামপন্থীরা লাল ঝান্ডা নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরছে। এবার নীচুতলার কর্মীরা জেগেছে। বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্যের বর্তমান শাসক দলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলে বামেরা আবার প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। ২০২১-এর নির্বাচনে দেওয়ালে পিঠ থেকে যাওয়ার পর সিপিএম যেভাবে বাড়ছে, বিজেপির সেভাবে উত্তরণ হয়নি। ফলে আশার আলো দেখছে সিপিএম।