বাবুলের তৃণমূলে যোগদানের পর বিজেপির বিধায়ক ফের বেসুরো, জল্পনা দলবদলের
বাবুলের তৃণমূলে যোগদানের পর বিজেপির বিধায়ক ফের বেসুরো, জল্পনা দলবদলের
বাবুল সুপ্রিয় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন হঠাৎ করেই। বিনা মেঘে বজ্রপাত হয়েছে বিজেপি শিবিরে। তারপর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আবার সুর চড়িয়েছেন, সবে তো শুরু, এবার দলে দলে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেবেন। সেইমতো বাবুলের যোগদানের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বিজেপির আরও এক বিধায়ক ফের বেসুরো হলেন।
কৃষ্ণ কল্যাণী ফের সুর চড়ালেন বিজেপির বিরুদ্ধে
কালিয়াগঞ্জের বিজেপি বিধায়ক সৌমেন রায় দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানের পর থেকেই রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী বেসুরো বাজতে শুরু করেছিলেন। সম্প্রতি বিজেপির রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীকেও তিনি একহাত নিয়েছিলেন। কৃষ্ণ কল্যাণী এদিন আবারও সুর চড়ালেন বিজেপির বিরুদ্ধে। তার ফলে দলবদলের জল্পনা আরও বাড়ল তাঁকে নিয়ে।
বিজেপিতে অসম্মানিত, মুখ খুলে জল্পনা বাড়ালেন কল্যাণী
এদিন রায়গঞ্জের বিজেপি বিধায়ক বলেন, কে কোথায় অসম্মানিত হচ্ছে, দেখতে হবে দলকে। যাঁরা দল ছাড়ছেন, তাঁরা অসম্মানিত হয়েই দল ছাড়ছেন। দলকে সময় দিয়েছি। কাজ না হলে অন্য কিছু ভাবতে হবে। এদিন জল্পনা বাড়িয়ে তিনি কথা বলেন সোজাসাপ্টাই। তাঁর এই কথায় স্পষ্ট তিনি বিজেপিতে অসম্মানিত, তাই তিনি দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলে জল্পনা বাড়ালেন।
উত্তরবঙ্গেও এখন ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে বিজেপি
উত্তরবঙ্গে বিজেপির শক্তঘাঁটিতে একটু একটু করে ভাঙন ধরতে শুরু করেছে। ২০১৯-এ এই উত্তরবঙ্গ থেকে বিজেপি সিংহভাগ আসন জিতেছিল। তৃণমূলকে শূন্য করে ছেড়েছিল বিজেপি। ২০২১-এ তৃণমূল খানিকটা ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে সক্ষম হলেও বিজেপি উত্তরবঙ্গে অপেক্ষাকৃত ভালো ফল করেছিল। কিন্তু সেই উত্তরবঙ্গেও এখন ভাঙনের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে বিজেপি।
বিজেপির সাংসদ বনাম বিধায়কের দ্বন্দ্ব যখন প্রকাশ্যে
একের পর এক বিজেপি বিধায়ক বেসুরো হচ্ছেন। উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায় তৃণমূলে যোগদান করেন। তারপর কৃষ্ণ কল্যাণী বিজেপিতে বেসুরো বাজছেন। এই বেসুরো রাজনীতিতে সামনে এসেছে বিজেপির সাংসদ বনাম বিধায়কের দ্বন্দ্ব। এক পক্ষ আরেক পক্ষের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। ভোট পরবর্তী গেরুয়া শিবির নাজেহাল বিধায়ক-সাংসদ, নেতা-নেত্রীদের বিরোধ মেটাতে।
দলে অসম্মানিত হয়ে বেসুরো বাজছেন কৃষ্ণ কল্যাণী
সেই বিরোধ মেটানোর কথাই এবার তুলে ধরেছেন বিজেপির রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। তিনি বলেন, দলকেই এই কাজ করতে হবে। সেই আবেদন করেছি। দলে যাতে কেউ অসম্মানিত না হন। দল সময় নিয়েছে। তিনি অপেক্ষায় রয়েছেন দল কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা জানার জন্য। তারপরই তিনি অন্য ভাবনা চিন্তা করবেন বলেও জানিয়েছেন।
দেবশ্রী চৌধুরীর ছবি সাদা কাগজে ঢাকা নিয়ে বিতর্ক
উত্তরবঙ্গ বিজেপিতে ফাটল ধরার পর বেসুরো হয়ে বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী মন্তব্য করেন বিজেপি কাজ করার উপযুক্ত প্লাটফর্ম নয়। এমনকী তিনি সাংসদের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে বলেন, তাঁর জনপ্রিয়তায় অখুশি ছিলেন সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী। তাই তাঁকে হারাতে চেয়েছিলেন তিনি। এমনকী তিনি দল থেকে তাড়ানোর চক্রান্ত করছেন বলেও অভিযোগ করেন কল্যাণী। সম্প্রতি রায়গঞ্জের সুপার মার্কেট সংলগ্ন বিজেপির দলীয় কার্যালয়ের বাইরের গেট ও সামনের পোস্টারে থাকা দেবশ্রী চৌধুরীর ছবি সাদা কাগজে ঢেকে দেওয়া নিয়ে উভয়ের বিতর্ক শুরু হয়।
সাংসদ দেবশ্রীকে কটাক্ষ রায়গঞ্জের বিধায়কের
সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে কৃষ্ণ কল্যাণী বলেন, উনি রায়গঞ্জ থেকে বিধানসভায় দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। উনি নাকি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়েও ছিলেন। এখন শুনছি রায়গঞ্জের সাংসদ নাকি বিজেপি রাজ্য সভানেত্রী হবে। তাই যদি হয়, তাহলে বিজেপিতে ১০ জন বিধায়কও থাকবেন না। সাংসদের বিরুদ্ধে চাঁছাছোলা ভাষায় এই মন্তব্য করেন রায়গঞ্জের বিধায়ক। যা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে।
বিজেপি ছেড়ে কি তৃণমূলের দিকে ঝুঁকেছেন কৃষ্ণ
উল্লেখ্য, একটা সময় দেবশ্রী চৌধুরীর হাত ধরেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এখন সেই দেবশ্রীর সঙ্গেই তাঁর অহি-নকুল সম্পর্ক। এখন প্রশ্ন বারবার কৃষ্ণ কল্যাণীর এই বেসুরো হওয়া, দলীয় নেতৃত্বের সমালোচনা, সাংসদের বিরুদ্ধাচারণ করা কীসের ইঙ্গিত। তবে কি কৃষ্ণ কল্যাণীও দলবদলের পথে হাঁটতে চলেছেন। বিজেপি ছেড়ে তিনিও কি তৃণমূলের দিকে ঝুঁকতে শুরু করে দিয়েছেন।
অন্য ভাবনায় লুকিয়ে কল্যাণীর দলবদলের জল্পনা
এই অবস্থায় কৃষ্ণ কল্যাণী দলবদলের জল্পনা সমূলে উড়িয়ে দিয়ে প্রথম বলেছিলেন, অন্য রাজনৈতিক দল থেকে কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তাই দলবদলের প্রশ্নই নেই। এখন তিনি তাঁর বেসুরো বাজা বলবৎ রেখেই জানিয়ে দিলেন, দল সময় নিয়েছে বিরোধ মেটানোর, বন্দোবস্ত না নিলে অন্য ভাবনা।