আলিপুরদুয়ারে গেরুয়া কাণ্ডারী, পৃথক রাজ্যের দাবি করা জন বার্লাই মোদী মন্ত্রিসভার নতুন মুখ
বিধানসভা নির্বাচনে মেলেনি আশানুরূপ ফল। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগে বঙ্গ বিজেপিকে চাঙ্গা করতে বেশ কিছুদিন আগে থেকেই ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে পদ্ম ব্রিগেড। এদিকে শেষ নির্বাচনে দক্ষিণবঙ্গের তুলনায় উত্তরবঙ্গে অনেক ভালো ফল করেছে বিজেপি। এবার তারই পুরষ্কার স্বরূপ নিশীথ প্রামানিকের পাশাপাশি মোদী মন্ত্রিসভায় জায়গা পেতে চলেছেন উত্তরবঙ্গের আর এক সাংসদ জন বার্লা।
উত্তরবঙ্গ থেকে দুই মন্ত্রী
এদিকে মোদী মন্ত্রীসভার সম্প্রসারণ নিয়ে সকাল থেকেই চলছে চূড়ান্ত নাটকীয়তা। একের পর এক পদত্যাগ করছেন একাধিক মন্ত্রী। তালিকায় রয়েছে বাংলার সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর নাম। তবে নতুন মোদী মন্ত্রিসভায় যে বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর, ও কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামানিক জায়গা পেতে চলেছেন তা একপ্রকার নিশ্চিত হয়েই গিয়েছিল। চমকটা এল জন বার্লার নাম সামনে আসতেই।
পৃথক রাজ্যের দাবি করা বার্লাই মোদী মন্ত্রিসভার নতুন মুখ
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য চেয়ে কিছুদিন ধরেই বিতর্কের শিরোনামে রয়েছেন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা। যদিও তার দাবির পর রাজ্যের শাসক দলের সাথে সাথে বাম-কংগ্রেসও কড়া প্রতিক্রিয়া জানালেও মুখে কুলুপ এঁটেছিল বঙ্গ বিজেপি। এবার পৃথক রাজ্যের দাবি করা সেই বিতর্কিত জন বার্লাই ঠাঁই পেতে চলেছেন মোদী মন্ত্রিসভায়।
আদিবাসী ভোটব্যাঙ্কের সিংহভাগই বার্লার দখলে
এদিকে উত্তরবঙ্গে আদিবাসী ভোটের অন্যতম প্রধান মুখ বলা চলে এই জন বার্লাকেই। বিশেষ করে ডুয়ার্সে আদিবাসী ভোটব্যাঙ্কের সিংহভাগই নিজের দখলে রেখেছেন বার্লা। এমনকী তাঁর জনপ্রিয়তার ধারেকাছেও শাসক-বিরোধী কোনও শিবির থেকেই কোনও নেতা নেই বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের। আর তাতেই মুখের হাসি অনেকটা চওড়া হয়েছে পদ্ম শিবিরের।
বার্লার হাত ধরেই আলিপুরদুয়ারের সবকটা আসনে ফুটেছে পদ্ম
এদিকে আলিপুরদুয়ারে গেরুয়া উত্থানের মূল কারিগর হিসাবেও ধরা হয় এই বার্লাকেও। তুমুল তৃণমূল ঝড়ে শেষ নির্বাচনে যখন রীতিমতো বেকায়দায় মোদী ব্রিগেড তখন আলিপুরদুয়ারে বার্লার নেতৃত্বেই সবকটা আসন ধরে রাখে বিজেপি। বার্লার লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কালচিনি, কুমারগ্রাম, ফালাকাটা, মাদারিহাট, আলিপুরদুয়ার, তুফানগঞ্জ ও নাগড়াকাটা সহ সমস্ত বিধানসভা কেন্দ্রেই ফুটেছে পদ্ম।
রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকের পরেই জোর জল্পনা
এই সমস্ত কারণেই বেশ কয়েকমাস ধরেই মোদী-শাহের সুনজরে পড়েন এই বিতর্কিত সাংসদ। এদিকে কিছুদিন আগেই উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে বার্লার সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন রাজ্যপাল। এমনকী তখনও ফের উত্তরবঙ্গকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার জোরালো দাবি জানান বার্লা। তারপর থেকেই বার্লার মন্ত্রীত্ব নিয়ে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল বিভিন্ন মহলে। যদিও তিনি মন্ত্রী হওয়ার পর উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য করার দাবি কতটা জল পায় এখন সেটাই দেখার।