পাহাড়ে নির্বাচন চান না বিমল গুরুং, মমতাকে চিঠি লিখে তাহলে কীসের দাবি মোর্চার
মমতাকে চিঠি দিয়ে জিটিএ নির্বাচনের বিরোধিতা করলেন বিমল গুরুং। রাজ্য সরকার যখন পাহাড়ে দ্রুত ভোট করাতে চাইছে, তখন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা প্রধান বিমল গুরুংয়ের এই চিঠি আবার নতুন করে জট তৈরি করে দিল।
মমতাকে চিঠি দিয়ে জিটিএ নির্বাচনের বিরোধিতা করলেন বিমল গুরুং। রাজ্য সরকার যখন পাহাড়ে দ্রুত ভোট করাতে চাইছে, তখন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা প্রধান বিমল গুরুংয়ের এই চিঠি আবার নতুন করে জট তৈরি করে দিল। বিমল গুরুং বিগত নির্বাচন থেকেই তৃণমূলের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করে এসেছেন। এখন কেন তিনি বেঁকে বসলেন জিটিএ নির্বাচন থেকে।
পাহাড়ে দীর্ঘদিন বন্ধ জিটিএ নির্বাচন। তাই এবার পাহাড় সফরে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমস্ত পাহাড়ি দলের সঙ্গে বৈঠক করে স্থির করে এসেছিলেন শীঘ্রই জিটিএ নির্বাচন করবেন। সেইমতো তিনি জিটিএ নির্বাচনের দিনক্ষণ প্রায় স্থির করে ফেলেন। আগামী মাসেই জিটিএ নির্বাচন হতে পারে, এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি। রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে এই মর্মে প্রস্তাবও পাঠানো হয়। এই অবস্থায় এল বিমল গুরুংয়ের চিঠি।
রাজ্য সরকার চাইছে বর্ষা নামার আগেই জিটিএ নির্বাচন করে নিতে। পাহাড়ের অন্যান্য দলও একমত নির্বাচন করতে। মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে সবাই জিটিএ নির্বাচন নিয়ে সহমত হলেও বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা বিরোধিতা করেন। বৈঠকেই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, আগে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হোক, তারপর ভোট।
এবার জিটিএ নির্বাচনের দামামা বেজে যাওয়ার পর গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা প্রধানের চিঠি এল নবান্নে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্যোি পাধ্যায়কে চিঠি লিখে তিনি জানান, তিনি এখনই জিটিএ ভোট চান না। আগে চান পাহাড়ের ১১টি গোর্খা জনগোষ্ঠীকে যতক্ষণ না তফশিলি জাতির তকমা দেওয়া হচ্ছে। ততক্ষণ সমাধান সম্ভব নয়। তিনি চান দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান হোক আগে। তারপর হোক নির্বাচন।
এই চিঠিতে তিনি ২০১১ সালের চুক্তি অনুযায়ী স্থানী রাজনৈতিক সমাধান চেয়ে আরএ বেশি ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবে করেছেন তিনি। উত্তরবঙ্গের ৩৯৬টি মোর্চাকে জিডিএর অধীনে আনার দাবিও জানান তিনি। ২০১৭ সালেও তিনি জিটিএ নির্বাচনের বিরোধিতা করেছিলেন। তানি তখন স্পষ্ট করেছিলেন তিনি পৃথক গোর্খাল্যান্ড চান। বিমল গুরুংয়ের বিরোধিতায় তখন স্থগিত হয়ে গিয়েছিল নির্বাচন।
তখন বিমল গুরুং ছিলেন বিজেপির বন্ধু। আর পাহাড়ের একচ্ছত্র ক্ষমতা ছিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার হাতে। এখন রাজনৈতিক পট পরিবর্তন হয়েছে রাজ্যে, পট পরিবর্তন হয়েছে পাহাড়ে। বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার জন সমর্থন কমেছে। তিনি এখন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে বন্ধু হয়েছেন। এই অবস্থায় তিনি জিটিএ নির্বাচনের বিরোধিতা করে চিঠি লেখার পর কোন দিকে মোড় নেবে পাহাড়ের রাজনৈতিক অবস্থান, সেটাই দেখার। কারণ গুরুং চিঠিতে লিখেছেন এখনই পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচন চান না, তবে তিনি গোর্খাল্যান্জের দাবিও উত্থাপন করেননি।