গোর্খাল্যান্ডের দাবিই এক করছে গুরুং-তামাংকে, পাহাড়ে দোসর হয়ে হাজির অজয়ও
গোর্খাল্যান্ডের দাবিই এক করছে গুরুং-তামাংকে, পাহাড়ে দোসর হয়ে হাজির অজয়ও
গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সামনে রেখেই পাহাড়ে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন বিমল গুরুং ও বিনয় তামাংরা। এবার আবার তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন হামরো পার্টির অজয় এডওয়ার্ড। দার্জিলিং পুরসভায় ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তিনি এবার গুরুংদের সঙ্গেই হাত মিলিয়েছেন। পাহাড়ে তৈরি হচ্ছে অঘোষিত জোট।
পাহাড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সমীকরণ বদলাতে শুরু করেছে। গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নতুন দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা তৈরি করেছেন অনীত থাপা। তারপর তিনিই হয়ে উঠেছেন পাহাড়ের একচ্ছত্র অধিপতি। তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থন রয়েছে তাঁর দিকেই। এই পরিস্থিতিতে অনীতের বিরুদ্ধে এক জোট হচ্ছেন বিমল গুরুং, বিনয় তামাং ও অজয় এডওয়ার্ড।
গোর্খাল্যান্ড আবেগকে পাথেয় করে পাহাড়ে বিমল-বিনয়-অজয় এক সুত্রে বাঁধা পড়তে চলেছে। নতুন রাজ্য গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে পাহাড়ে। সেখানে রয়েছেন পাহাড়ের তিন নেতা। এই নয়া কমিটিতে তিন নেতা ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সংগঠনও।
পাঁচ বছর আগে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল পাহাড়। হিংসার আবহে পাহাড় ছাড়া হতে হয়েছিল বিমল গুরুংকে। তারপর থেকেই পাহাড়ে তাঁর রাশ আলগা হয়ে শুরু করে। তিন বছর পর পাহাড়ে যখন তিনি ফেরেন, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার চাবিকাঠি তখন ছিল বিনয় তামাং ও অনীত থাপার হাতে।
গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা তারপর থেকে আড়াআড়ি দু-ভাগ হয়ে যায়। আর সেই ফায়দা লুটে বিধানসভায় পাহাড়ে ফায়দা লোটে বিজেপি। একটি আসন পায় বিনয় তামাং গোষ্ঠীর এক প্রার্থী। কিন্তু একুশের পরই পালাবদল হতে শুরু করে। অনীত থাপা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ছেড়ে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা গঠন করেন। আর বিনয় তামাং সরাসরি যোগ দেন তৃণমূলে।
বিমল গুরুংযের অনুপস্থিতিতে আরও একটি দল তৈরি হয় পাহাড়ে। তা হল হামরো পার্টি। তিনমাস দল গড়েই হামরো পার্টি দার্জিলিং পুরভোটে সাফল্য পায়। অনীত থাপার গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চাকে হারিয়ে পুরসভরা দখল নেন অজয় এডওয়ার্ড। কিন্তু জিটিএ নির্বাচনে অনীত থাপার দলের সাফল্যে খেলা ঘুরে যায় পাহাড়ের। দার্জিলিং পুরসভাও দখল করে নেয় অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা।
এরই মধ্যে পাহাড়ে পঞ্চায়েত ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। তার আগে পাহাড়ে আবার উঠে পড়েছে গোর্খাল্যান্ডের দাবি। গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে এবার সরব হয়ে তিন প্রধান মুখ আবার এক হয়েছেন পাহাড়। সেইসঙ্গে তাঁরা জিটিএ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। এই বিষয়ে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতিকে চিঠি দিচ্ছেন তাঁরা।
বিমল গুরুং যুক্তি দেন, ২০১২ সালে জিটিএ-র ত্রিপাক্ষিক চুক্তিতে কেন্দ্র, রাজ্যের পাশাপাশি তাদের দলেরও স্বাক্ষর রয়েছে৷ তাঁর মতে এই ঘটনায় রাজ্য নয়, কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়বে। গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে জোরদার করতে পাহাড়ে আজ তাই একটি নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ভারতীয় গোর্খাল্যান্ড সংগ্রাম কমিটি। এই কমিটিতে যেমন বিমল গুরুং রয়েছেন, তেমনই বিনয় তামাং ও অজয় এডওয়ার্ড-সহ পাহাড়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক সংগঠনও রয়েছে।
বিজেপির পথে কাঁটা ২০১৮-র জোটসঙ্গীই, ভোটের মুখে অশনি সংকেত দিলেন প্রদ্যোৎকিশোর