গুরুংয়ের পাহাড় এবার অনীতের! হামরো পার্টিকে উড়িয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ একা বিজিপিএম
গুরুংয়ের পাহাড় এবার অনীতের! হামরো পার্টিকে উড়িয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ একা বিজিপিএম
পাহাড়ের নির্বাচনে বিপুল জয় পেল অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা বা বিজিপিএম। বিমল গুরুংয়ের পাহাড়ে প্রতিষ্ঠা হল অনীত-রাজ। হামরো পার্টির উত্থান রুখে এবার জিটিএ-র দখল নিতে সমর্থ হল একা বিজিপিএম। কারণ তাঁরা একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে এবারের ভোটে। তবে তাঁরা একা বোর্ড গড়বে, নাকি তৃণমূলকেও সঙ্গে নেবে, তা বলবে ভবিষ্যৎ।
বিজিপিএম পালাবদল ঘটিয়ে দিল পাহাড়ে
দার্জিলিং পুরসভায় হামরো পার্টি জয়ী হয়েছিল। অজয় এডওয়ার্ডের এই পার্টি অবশ্য খুব বেশি সুবিধা করতে পারল না জিটিএ নির্বাচনে। অনীত থাপার দলের কাছে হেরে প্রধান বিরোধী দল হয়েই খুশি থাকতে হল তাদের। দার্জিলিং পুরসভায় হারের বদলা নিয়ে বিজিপিএম পালাবদল ঘটিয়ে দিল পাহাড়ে।
জিটিএ নির্বাচনে বিজিপিএমের দখলে কটি আসন
পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচন হল মোট ৪৫টি আসনে। তার মধ্যে এককভাবে ২৭টি আসনে জয়যুক্ত হলেন অনীত থাপার দলের প্রার্থীরা। অনীত থাপা নিজে দুটি আসনে জয় পেয়েছেন। ২৩টি আসন পেতে হবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে। তার তুলনায় বেশি আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জিটিএ দখল করতে চলেছেন তাঁরা।
জিটিএর বাকি আসনের কে কটি দখল করল
এবার নির্বাচনে অনীত থাপার দলের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি। হামরো পার্টি পেয়েছে ৮টি আসন। এবারই প্রথম জিটিএ-তে খাতা খুলল তৃণমূল কংগ্রেস। বিনয় তামাংয়ের হাত ধরে তৃণমূল পাঁচটি আসন জিতেছে এবার। আর নির্দল প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন ৫টি আসনে। অর্থাৎ প্রধান বিরোধী দল হয়েছে হামরো পার্টি। উল্লেখ্য, এবারের জিটিএ নির্বাচনে বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি, বিজেপির জোটসঙ্গী জিএনএলএফ অংশ নেয়নি। তবে ২১০ জন নির্দল প্রার্থীর আড়ালে ছিল তাদের আনাগোনা।
তৃণমূল ও নির্দলের সমর্থনও অনীতের দিকে!
এতদিন পাহাড়ে বিমল গুরুংয়ের শাসন চললেও এবার পাহাড়ে অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টির সঙ্গে মূল লড়াই ছিল অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা বা বিজিপিএমের। শেষমেশ অনীত থাপাই শেষ হাসি হেসেছেন। জিটিএ-র দখল নিতে চলেছেন তিনি। তবে তাঁরা একক সংখ্যাগরিষ্ঠ পেলেও সুসম্পর্কের কারণে তৃণমূলকেও সঙ্গে নিতেও পারে। আবার জয়ী নির্দল প্রার্থীরা অনীত থাপার দিকে ঢলতে পারেন।
চতুর্মুখী লড়াইয়ে শেষ হাসি অনীতের
সুবাস ঘিসিংয়ের পর বিমল গুরুংয়ের হাতে দীর্ঘদিন ছিল পাহাড়ের শাসন। কিন্তু ২০১৭ সালে পাহাড় অশান্ত হওয়ার পর থেকেই গুরুংয়ের পায়ের তলার জমি সরে যেতে থাকে। তিনি প্রায় তিন বছর পাহাড় ছাড়া ছিলেন। ২০২১-এর ভোটের আগে পাহাড়ে ফিরলেও আর পুরনো ক্ষমতা ফিরে পাননি। গুরুংয়ের অনুপস্থিতিতে ক্ষমতা বণ্টন হয়ে গিয়েছিল বিনয় তামাং ও অনীত থাপার মধ্যে। তাঁরাই মূল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু একুশের পরবর্তী সময়ে অনীত থাপা নতুন দল গড়েন এবং বিনয় তামাং তৃণমূলে যোগ দেন। বাকি পড়ে থাকে গুরুংয়ের মোর্চা। আর পাহাড়ে উত্থান হয় হামরো পার্টির। এই চতুর্মুখী লড়াইয়ে শেষ হাসি অনীতের।
ছবি সৌজন্য: টুইটার
পাহাড়ে পালাবদল! হামরো পার্টিকে টেক্কা দিয়ে জিটিএ নির্বাচনে জয়ের পথে বিজিপিএম