বিরাট ভাঙন পাহাড়ের হামরো পার্টিতে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে শক্তি বাড়াচ্ছেন অনীত
বিরাট ভাঙন পাহাড়ের হামরো পার্টিতে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে শক্তি বাড়াচ্ছেন অনীত
পঞ্চায়েত ভোটের আগে পাহাড়ে শক্তি বাড়িয়েই চলেছেন অনীত থাপা। তিনমাসের মধ্যে পার্টি গড়ে দার্জিলিং পুরসভা নির্বাচনে বিপুল জয় তুলে নিয়েছিলেন অজয় এডওয়ার্ড। অজয় এডওয়ার্ডের সেই হামরো পার্টি ভেঙেই চলেছে। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের আগে পাহাড়ে দলবদলের হিড়িক পড়ে গিয়েছে। অনীত থাপার বিজিপিএমে ভিড় বাড়ছে।
হামরো পার্টি বনাম গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা
পশ্চিমবঙ্গের সমতলে বর্তমানে লড়াইটা মূলত তৃণমূল বনাম বিজেপির মধ্যে। তেমনই পাহাড়ের বুকে এই লড়াইটা বর্তমানে সীমাবদ্ধ হামরো পার্টি ও গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার মধ্যে। হামরো পার্টি যখন দার্জিলিং পুরসভা নির্বাচনে জিতেছে, তেমনই অনীথ থাপার ভারতীয় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা জিতেছে জিটিএ নির্বাচনে। এবার সামনে পঞ্চায়েত, তার আগে এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে দার্জিলিং পুরসভার দখলও অনীত থাপার দল নিতে পারেন।
পাহাড়ের ২৩০টি পরিবার ছাড়ল হামরো পার্টি
হামরো পার্টি ছেড়ে ৬ জন কাউন্সিলর সম্প্রতি যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিএমে। তারপর ফের বড়সড় ভাঙন ধরল হামরো পার্টিতে। হামরো পার্টি ছেড়ে গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চাতে সামিল হলেন পাহাড়ের ২৩০টি পরিবার। দলবদলের পালা অব্যহত দার্জিলিং পাহাড়ে। রবিবার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার জর্জবাজার সংলগ্ন দলীয় কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পন্ন হল এই যোগদান পর্ব।
গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার শক্তিবৃদ্ধি পাহাড়ে
এদিন দার্জিলিংয়ের রেলিং কৈজল সমষ্টির প্রায় ২৩০টি পরিবার গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় শামিল হয়। এই যোগদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জিটিএ প্রধান তথা গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা প্রধান অনীত থাপা এবং অমর লামা-সহ দলের অন্যান্য নেতা-কর্মীরা৷ যোগদানকারীদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন অনীত থাপা। তাঁদের সাদরে অভ্যর্থনা জানানো হয়।
সুবাস ঘিসিং থেকে গুরুং হয়ে অনীত থাপা
সুবাস ঘিসিংয়ের পর এতদিন পাহাড় শাসন করেছেন গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা প্রধান বিমল গুরুং। কিন্তু ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই গুরুংয়ের দাপট কমতে শুরু করে। ২০১৯-এ বিজেপিকে সমর্থন দিয়ে খানিক প্রভাব বিস্তার করলেও ২০২১-এ পুরোপুরি নিঃশেষ হয়ে যায় গুরুংয়ের ক্ষমতা। তারপরই তাঁর দলের অনীত থাপার উত্থানের শুরু। নতুন পার্টি করে অনীত থাপা হয়ে ওঠেন পাহাড়ের প্রশাসক।
হামরো পার্টি চমক দেখালেও ব্যাকফুটে
২০২১-এর নির্বাচনে তৃণমূলকে সমর্থনের বার্তা দিলেও ভোটে ভরাডুবি হয় গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দাপট শেষ হয়ে যাচ্ছে দেখেই সেই পার্টি থেকে বেরিয়ে যান বিনয় তামাং, অনীত থাপা-রা। বিনয় তামাং সরাসরি যোগ দেন তৃণমূল কংগ্রেসে। আর অনীত থাপা গড়েন নতুন পার্টি গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। কিন্তু তাঁদের অবাক করে দার্জিলিং পুরসভা নির্বাচনে জয়ী হয় হামরো পর্টি। মাত্র তিনমাস আগে নতুন পার্টি গড়ে অজয় এডওয়ার্ডস চমক দেন পাহাড়ে।
বিজিপিএম পার্টির সুপ্রিমোর হাতেই পাহাড়ের রাশ
কিন্তু জিটিএ নির্বাচনে বিপুল জয় তুলে নেওয়ার পর অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দিকেই ঢলেছে পাহাড়। তার ফলে দার্জিলিং পুরসভার দখল বর্তমানে হামরো পার্টির হাত থেকে ঘুরে যাচ্ছে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার দিকে। বিজিপিএম পার্টির সুপ্রিমোর হাতেই কার্যত পাহাড়ের রাশ এখন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে অনীত থাপার হাত প্রতিদিনই শক্ত হয়ে চলেছে।
২২ বছর পর নির্বাচনের আগে পাল্লাভারী অনীতের
সম্প্রতি রাজ্যের তৃণমূল সরকার ঘোষণা করেছে, রাজ্যের সমস্ত জেলার সঙ্গে পাহাড়েও পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে। ২২ বছর পর নির্বাচন হতে চলেছে, তার আগে দলবদল তাৎপর্যপূর্ণ। এর আগে হামরো পার্টি ছেড়ে গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চায় যোগ দিয়েছে দার্জিলিংয়ের কার্শিয়াং মহকুমার ৬৭টি পরিবার। কার্শিয়াংয়ের নতুন বাজার টাউন হলে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের হাতে দলীয় পতাকরা তুলে দেওয়া হয় অনীত থাপার গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার পক্ষ থেকে। এবার ২৩০টি পরিবার অনীত থাপার দলে যোগ দিলেন হামরো পার্টি ছেড়ে।
অনুব্রতহীন জেলায় জনসংযোগে ক্ষোভের মুখে শতাব্দী, পঞ্চায়েতের মুখে চাপ বাড়ছে তৃণমূলের