'প্রভাবশালী' তৃণমূল জেলা সভাপতির শোভাযাত্রায় জয় শ্রী রাম স্লোগান! জোর বিতর্ক
ভোটের আগে রাম-রাজ্য তৈরির কথা বিজেপি নেতাদের মুখে। কেন রামের কথা শুনলে রেগে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? সেই প্রশ্ন এখন বিজেপি নেতাদের মুখে। শুধু রাজ্য নেতৃত্ব নয়, কেন্দ্রীয় নেতারাও বাংলায় দাঁড়িয়ে রাম নাম নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ শানাচ্ছেন। কেন রামের নামে তিনি রেগে যান সেই প্রশ্ন তোলেন।
গত কয়েকদিন আগেই উত্তরবঙ্গে দাঁড়িয়ে অমিত শাহ বলেন, মমতাকেও জয় শ্রী রাম বলতে হবে। আর তা বলতে হবে ভোটের শেষে। এমনকি, পালটা উত্তর দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। অমিত শাহকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে সাংসদ বলেন, 'যদি বাপের বেটা হই, ভোট শেষ হওয়ার আগে তোমাদের দিয়ে জয় সিয়া রাম বলিয়ে ছাড়ব।' ফলে ভোটের আগে রীতিমত রাম-নামে উত্তাল রাজ্য-রাজনীতি। আর সেখানে দাঁড়িয়ে রামের নামে স্লোগান! তাও আবার কিনা হেভিওয়েট তৃণমূল জেলা সভাপতির সামনে...!!
তৃণমূল জেলা সভাপতির মিছিলে জয় শ্রী রাম স্লোগান!
চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি শহরে। সেখানকার একটি হনুমান মন্দিরের পক্ষ থেকে বিশাল মিছিল বার করা হয়। আর সেই মিছিলের একেবারে সামনে ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণ কুমার কল্যাণী। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেই মিছিল থেকে স্লোগান উঠছে জয় শ্রী রাম! আর তা শুনেও চুপ রয়েছেন কিনা তিনি? যেখানে দলনেত্রী রাম নামে রাজনীতি করা নিয়ে ক্ষুব্ধ হচ্ছেন সেখানে তাঁর মিছিলে স্লোগান উঠছে কিনা রামের নামে। আর তাতে চুপ কিনা তিনি। ফলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। ছড়ায় জল্পনা।
নিজেকে হিন্দু বলেই মন্তব্য জেলা সভাপতির
জল্পনা উঠতেই সংবাদমাধ্যমের তরফে যোগাযোগ করা হয় তৃণমূলের জেলা সভাপতি কৃষ্ণ কুমার কল্যাণীর সঙ্গে। এক সংবাদমাধ্যমকে এই প্রসঙ্গে জানাতে গিয়ে বলেন, আমি প্রথমে একজন হিন্দু। আর হিন্দু দেবতারা কারও সম্পত্তি নন। সুতরাং জয় শ্রী রাম স্লোগানে তাঁর আপত্তি নেই বলেই দাবি তাঁর। শুধু তাই নয়, তিনি জানিয়েছেন, অগ্নিকান্ডের ঘটনার পর স্থানীয় হনুমান মন্দিরটি পুড়ে যায়। কিন্তু মূর্তিটি সরিয়ে রাখা হয়। আর তা ফের প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এর মধ্যে কোনও রাজনীতি নেই বলেই মন্তব্য তাঁর।
হিন্দুত্বকে সামনে রেখে রাজনীতি নয়
ওই তৃণমূল নেতার দাবি, যারা তৃণমূল কংগ্রেস করেন তাঁরা হিন্দুত্বকে সামনে রেখে রাজনীতি করে না। সাম্প্রদায়িক রাজনীতিও করে না। হিন্দুদের নিয়ে কেবল রাজনীতি করে বিজেপিই। হনুমানজি রামচন্দ্রকে জয় সিয়ারাম বলতেন , সেটাকে নিয়ে রাজনীতি করে বিজেপি জয় শ্রী রাম বলছে বলে দাবি ওই বিজেপি নেতার।
কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি
ভোটের বাজারে মন্দির প্রতিষ্টার মধ্যে রাজনীতির গন্ধ পাচ্ছে বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, ভোটের আগে এমন দৃশ্য স্বাভাবিক। ঠেলায় না পড়লে বিড়াল গাছে ওঠে না, তীব্র কটাক্ষ বিজেপির।
এক নজরে ঘটনা
২০১৫ সালে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যায় জলপাইগুড়ির দিনবাজারের টিনের শতাধিক দোকান। ক্ষতিগ্রস্তগ হয় স্থানীয় হনুমান মন্দিরটিও। বাজারটি নতুন করে তৈরি করেছে সরকার। ক্ষতিগ্রস্থ মন্দিরটি ভেঙে ফেলে নতুন ভাবে একটি মন্দির তৈরি করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে হনুমানের বিগ্রহটিও। আর তাঁর আগে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। যেখানে প্রথমেই দেখা যায় তৃণমূল নেতৃত্বদের। আর সেই মিছিল থেকেই স্লোগান উঠতে শুরু করে জয় শ্রী রাম!