নিমতিতার ঘটনায় স্পষ্ট জঙ্গি যোগ! ব্যবহার হয়েছে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন IED
নিমতিতার ঘটনায় ব্যবহার হয়েছে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন IED
নিমতিতার ঘটনায় ক্রমশ বাড়ছে জঙ্গি যোগের সম্ভবনা। বিস্ফোরণের পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে দূর থেকে মন্ত্রীর উপর হামলা করা হয়েছে। এই ঘটনার তদন্তভার যায় সিআইডির হাতে।
তদন্তে তৈরি করা হয় বিশেষ তদন্তকারী দল অর্থাৎ সিট। গত কয়েকদিন ধরে তদন্তকারীরা আধিকারিকরা এই ঘটনার পিছনে বড়সড় ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছিলেন। তবে সম্প্রতি তদন্তে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।
আইইডি ব্যবহারের তত্ত্বেই শিলমোহর
মন্ত্রী জাকির হোসেনের উপর হামলার ঘটনায় রয়েছে বড়সড় ষড়যন্ত্র। শুধু তাই নয়, উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কোনও বোমা এই ঘটনায় ব্যবহার করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তদন্তকারীরা। ঘটনাস্থল থেকে নমুনাও সংগ্রহ করা হয়। আর খতিয়ে দেখার পর ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের মত, নিমতিতা স্টেশনে বিস্ফোরণে আইইডি ব্যবহার করা হয়েছে। সঙ্গে ছিল অ্যান্টি হ্যান্ডিং ডিভাইস। শুধু তাই নয়, উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন এই বোমা দক্ষ হাতে ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে করছেন ফরেন্সিকের বিশেষজ্ঞরা। সূত্রের খবর, তদন্তে যে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে তা ইতিমধ্যেই সিআইডি এবং সিটের তদন্তকারী আধিকারিকদের রিপোর্ট হিসাবে তুলে দিয়েছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। তদন্তে যে তথ্য উঠে এসেছে তা যথেষ্টই চাঞ্চল্যকর বলে মনে করা হচ্ছে।
জঙ্গি সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না
যেভাবে দক্ষ হাতে আইইডি'র মতো বোমা ব্যবহার করা হয়েছে এর পিছনে সাধারণ কোনও হাত নেই বলেই মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যে ধরণের বোমা এখানে ব্যবহার করা হয়েছে তা সাধারণত ব্যবহার করা হয় না। জঙ্গিরাই তা ব্যবহার করে থাকে। ফলে মন্ত্রীর উপর হামলার ঘটনায় জেএমবি বা অন্য কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর জড়িত থাকার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারী আধিকারিকরা।
স্টেশনে একটি গর্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে
ঘটনার পরেই ঘটনাস্থলে পৌঁছন তদন্তকারী আধিকারিকরা। বিশেষ তদন্তকারী দল এবং সিআইডি গত কয়েকদিন দফায় দফায় নিমতিতা স্টেশনে তদন্ত চালায়। কীভাবে বিস্ফোরণ সেই সূত্রে পৌঁছানোর চেষ্টা করে। তদন্ত চলাকালীন স্টেশনের ছাদ থেকে মন্ত্রীর একটি শরীরের অংশ খুঁজে পান তদন্তকারীরা। । সূত্রের খবর, স্টেশনে একটি গর্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। কীভাবে এই গর্ত তৈরি হল তা এখন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। তবে তদন্তকারীরা মনে করছেন, সাধারণভাবে আইইডি কিংবা এই ধরনের শক্তিশালী বিস্ফোরণের কারণেই এইরকম গর্ত তৈরি হয়। ফলে তদন্তকারীরা একপ্রকার নিশ্চিত যে বিস্ফোরণে আইইডি ব্যবহার করা হয়েছে। ফরেন্সি বিশেষজ্ঞদের দাবি, স্রেফ উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন আইইডি নয়, হামলাকারী অ্যান্ট হ্যান্ডিং ডিভাইসও ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে কে বা কারা এই ধরণের বিস্ফোরণ ব্যবহার করল? ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। তবে জঙ্গি যোগ একপ্রকার নিশ্চিত বলেই দাবি তদন্তকারীদের।
রাজ্যের পাশাপাশি তদন্তে এনআইএ
নিমতিতার বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এনআইএ। ইতিমধ্যেই তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসার পর আসত তথ্য জানা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সিআইডি তদন্ত শুরু করেছে। আলাদা করে সিট গঠন করেছে মমতা সরকার। তার পরেও বিজেপি এনআইএ-র দাবি জানিয়েছিল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে বলেছিলেন রাজ্য চাইলে এনআইএ তদন্ত হতে পারে।
জঙ্গিযোগ কতটা? তদন্তে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা
নিমতিতায় বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তের রিপোর্ট কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে দিতে চলেছে এনআইএ। প্রথমে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের একটি পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট তাঁরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে দেবে। তারপরে নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট পাঠানো হবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে। ঘটনায় কোনও জঙ্গি সংগঠনের হাত রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতেই মূলত এনআইএ-র হস্তক্ষোপ বলে মনে করা হচ্ছে।