বাংলায় সিএএ কার্যকর হওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা, মমতাকে বিসর্জন বার্তা শুভেন্দুর
শুভেন্দু অধিকারী এদিন মতুয়া আবেগ উসকে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভের আগুন প্রজ্বলিত করার বার্তা দেন।
বাংলায় সিএএ কার্যকর হওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। সিএএ নিয়ে ফের শুভেন্দু অধিকারী নিশানা করলেন তৃণমূলকে। শনিবার নবদ্বীপে মতুয়া মেলা থেকে তিনি সিএএ তাস খেললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। এদিন মঞ্চ থেকে মমতাকে নিশানায় শুভেন্দু বলেন, নাগরিকত্ব থাকলে কেন ১৯৭১-এর দলিল চায় ডিআইবি।
শুধু সিএএ কার্যকর হওয়ার বার্তা দিয়েই ক্ষান্ত থাকেননি শুভেন্দু, তিনি মমতা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গণতান্ত্রিকভাবে বিসর্জন দেওয়ার কথাও বলেন। শুভেন্দু বলেন, যিনি মতুয়া ধর্মগুরুদের নাম ভুল বলেন, মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের বলব, তাঁকে গণতান্ত্রিকভাবে বিসর্জন দিতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গণতান্ত্রিকভাবে বিসর্জন দিয়ে বাংলাকে শুদ্ধিকরণ করব।
শুধু শুভেন্দু অধিকারীই নন, এদিন নবদ্বীপের এই মেলায় মতুয়াদের একাংশ ক্ষোভ প্রদর্শন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ থেকে ভুল ও বিকৃত ধর্মগুরুদের নাম উচ্চারিত হওয়ায়। আর শুভেন্দু বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকার পরিবারবাদ আর তোষণ ছাড়া কিছু বোঝেন না।
শুভেন্দু অধিকারী এদিন মতুয়া আবেগ উসকে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভের আগুন প্রজ্বলিত করার বার্তা দেন। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রায়ই বলেন, মতুয়ারা তো নাগরিক, তাহলে আবার নাগরিকত্ব আইন প্রণয়ন বা নাগরিকত্ব প্রদানের কী আছে? এই ইস্যুতেই তিনি পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দেন শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি ১২ বছর ধরে পুলিশমন্ত্রীও। তাহলে তিনি বলুন, কেন মতুয়াদের কাছে ডিআইবি ১৯৭২ সালের দলিল চায়। নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মতুয়াদের বিভ্রান্তি ছড়াতেই তিনি এসব কথা বলেন বলে অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
এরপর মতুয়া মেলার মঞ্চ থেকে শুভেন্দু অভয় দেন মতুয়াদের। তিনি বলেন, নাগরিকত্ব আইন লাগু হওয়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। আর নাগরিকত্ব আইন লাগু হয়ে গেলে মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে কোনও প্রশ্ন উঠবে না। কেউ আর ১৯৭১ সালের দলিলের কথাও বলবে না। মতুয়াদের হাতে নাগরিকত্বের প্রমাণ থাকবে।
শুভেন্দুর এই বার্তা নিয়ে পাল্টা কটাক্ষ ছুড়তে পিছপা হয়নি তৃণমূল। তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, কারা বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছেন তা ভারতের মানুষ দেখতে পাচ্ছেন। সাড়ে তিন বছরে আগে গায়ের জোরে নাগরিকত্ব আইন পাস করিয়ে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়েও লাগু করতে পারেনি বিজেপি।
প্রত্যেকবার ভোট এলেই নাগরিকত্ব আইন নিয়ে আকাশের চাঁদ দেখাচ্ছে বিজেপি। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি বিজেপিই। তাই মতুয়ারা বুঝেছেন, বিজেপি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট হরণ করবে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই একমাত্র ভরসা। তিনি যেভাবে শেষদিন পর্যন্ত বড়মায়ের পাশে ছিলেন, মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের পাশেও থাকবেন।