উচ্চতা তিন ফুটেরও কম, নেটে ৯৯ শতাংশ পেয়ে তাক লাগালেন বিরল রোগে আক্রান্ত পিয়াসা
উচ্চতা তিন ফুটেরও কম, নেটে ৯৯ শতাংশ পেয়ে তাক লাগালেন বিরল রোগে আক্রান্ত পিয়াসা
উচ্চতা তিন ফুটেরও কম। চলার ক্ষমতা প্রায় নেই বললেই চলে। কিন্তু সেটা তাঁর সম্পূর্ণ পরিচয় নয়। বুদ্ধি আর মেধায় তাঁর উচ্চতা এখন সবথেকে বেশি। তিনি নদিয়ার পিয়াসা মহলদার। শুধুমাত্র মনের জোরেই সব প্রতিবন্ধকতা জয় করেছেন তিনি। নেট পরীক্ষায় তাঁর প্রাপ্তি ৯৯.৩১ শতাংশ। ২৫ বছর বয়সী পিয়াসা কার্যত তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সবাইকে।
কনজেনিটাল ফোকোমেলিয়ায় আক্রান্ত তিনি। জন্ম থেকেই এই বিরব রোগে ভুগছেন। তাঁর শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গে বৃদ্ধি হয়নি সঠিকভাবে। গত শনিবার নেট পরীক্ষার ফল ঘোষণা হয়েছে। ৯৯ শতাংশের বেশি নম্বর প্রাপ্তির পর স্বাভাবিকভাবেই রিসার্চ ফেলোশিপের জন্য নির্বাচিত হলেন তিনি। এছাড়া কলেজ সার্ভিস কমিশন থেকে ইন্টারভিউ-এর জন্য ডাকও পেতে চলেছেন তিনি।
নদিয়ার শান্তিপুরের মামদোপাড়ায় বাস করেন পিয়াসা। বর্তমানে তাঁর উচ্চতা আড়াই ফুট, ওজন ৩০ কেজি। তিনি নেট পরীক্ষার জন্য কোনও রাইটারও নেননি। তাই তাঁর সাফল্য সত্যিই চমকপ্রদ। পিয়াসা বলছেন, আমার কাছে এটা চ্যালেঞ্জ ছিল, আর আমি সেটা করে দেখিয়েছি। এই সাফল্য আশাতীত। এটাই আমার প্রথম নেট পরীক্ষা ছিল। ভগবানের আশীর্বাদে সফল হয়েছি।
কনজেনিটাল ফোকোমেলিয়ায় হল একটি বিরল রোগ। ভারতে এটি কমই দেখা যায়। এটি ক্রোমোজোমের সমস্যা। এতে বিভিন্ন অঙ্গে প্রভাব পড়ে। যার ফলে সঠিক বৃদ্ধি হয় না। এই ধরনের রোগীরা বেশিরভাগ সময়ই শুয়ে থাকেন।
পিয়াসার মা সুপ্রিয়াদেবী জানিয়েছেন, তাঁর মেয়ে বরাবরই মেধাবী। গত বছর কৃষ্ণনগর গভমেন্ট কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন তিনি। সুপ্রিয়াদেবী জানান, পিয়াসার যখন এক বছর বয়স, তখন তাঁরা বুঝতে পারেন, তাঁদের মেয়ে আর পাঁচটা শিশুর মতো নয়। তাঁর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ স্বাভাবিক নয়। এরপর অনেকেই তাঁদের এড়িয়ে যেতেন, কিন্তু পিয়াসা তাঁর মেধায় সবাইকে পিছনে ফেলে দিয়েছেন।
কৃষ্ণনগর গভমেন্ট কলেজের বাংলার অধ্যাপিকা দেবাহুতি সরকার জানান, তিনি পিয়াসার মনের জোরকে সম্মান জানাতে চান। পিয়াসাকে রোল মডেল হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। তবে পিয়াসার মায়ের একটাই আশঙ্ক, তাঁরা যখন থাকবেন না, তখন পিয়াসার কী হবে, কে দেখাশোনা করবে। তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
বরাবরই পরীক্ষায় ভাল ফল করতেন পিয়াসা। এলাকায় প্রত্যেকেই তাঁকে চেনেন। সারাদিন শুয়ে কাটালেও, স্বপ্ন তাঁর শিখর ছোঁয়া। আগামিদিনে অধ্যাপিকা হতে চান তিনি।
হঠাৎ বোধদয় নাকি নিজের ভুল বুঝলেন মাস্ক! ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের ডেকে পাঠাচ্ছেন টুইটার কর্তা