নদিয়া ধর্ষণ-কাণ্ড: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্তঃস্বত্ত্বা-মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন নাবালিকার বাবার
নদিয়া ধর্ষণ-কাণ্ড: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্তঃস্বত্ত্বা-মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন নাবালিকার বাবার
নদিয়ার হাঁসখালিতে নাবালিকা ধর্ষণ-কাণ্ড নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লাভ অ্যাফেয়ার্সে অন্তঃসত্ত্বা বলে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার তাঁর সেই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করলেন নাবালিকার বাবা। নাবালিকার বাবা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মেয়ের অপমান করছেন। তাঁর কথায় আমরা মর্মাহত।
নাবালিকার বাবার দাবি, নদিয়ার হাঁসখালি এলাকায় স্থানীয় তৃণমূল নেতার ছেলের জন্মদিনের পার্টিতে তাঁর ১৪ বছরের কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। রবিবার তাঁর মেয়ের মৃত্যু হয়। পুলিশ এরপর এখন পর্যন্ত প্রধান অভিযুক্ত তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সমর গোয়ালার ছেলে ব্রজগোপাল গোয়ালা এবং ব্রজগোপালকে জেরায় উঠে আসা একজন সহ-অভিযুক্ত প্রভাকর পোদ্দারকে গ্রেফতার করেছে৷
নদিয়ার হাঁসখালির এই গণধর্ষণ মামলার রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সোমবার কলকাতার এক অনুষ্ঠান থেকে প্রশ্ন তোলেন, "এটা কি ধর্ষণ ছিল? নাকি লাভ অ্যাফেয়ার্সের কারণে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছিল? তারা কি তা তদন্ত করে দেখেছে? তদন্তের আগেই ওই কিশোরীর শেষকৃত্য সেরে ফেলা হয়। তাহলে প্রকৃত তদন্ত কী করে হবে? প্রশ্ন তোলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, "মেয়েটি ৫ এপ্রিল মারা গিয়েছিল এবং ১০ এপ্রিল পুলিশ জানতে পেরেছিল। যদি সে ৫ এপ্রিল মারা যায়, তাহলে এতদিন কেন অভিযোগ করা হল না। যদি কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকে, তাহলে ঘটনার দিন তারা কেন পুলিশের কাছে গেল না? আবার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর আগেই তারা কিশোরীর দেহের শেষকৃত্য করে ফেলল। পুলিশ এখন প্রমাণ পাবে কোথায়?
মুখ্যমন্ত্রীর এই বিবৃতির পর নির্যাতিতার বাবা বলেন, "একজন মুখ্যমন্ত্রী কীভাবে এমন কথা বলতে পারেন? তিনি কী করে জানলেন আমার মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা ছিল। আমি এর বিচার চাই।" অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়েছেন নির্যাতিতার বাবাও। মুখ্যমন্ত্রীর পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বিরোধী দলগুলিও। এমনকী বুদ্ধিজীবী মহলের একাংশও এই ঘটনাকে নিন্দনীয় ব্যাখ্যা করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর ওইরূপ মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলছেন এই ঘটনা অনভিপ্রেত এবং নিন্দনীয়। আবার তিনি একথাও বলছেন, এই ঘটনা নিছক ধর্ষণ নাকি কোনও প্রেমের সম্পর্কের কারণে ঘটেছে তা না জেনে তদন্ত না করেই সকলে মন্তব্য করছেন। পাল্টা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন নির্যাতিতার বাবা ও বিরোধীরা। একের পর এক ঘটনায় অভিযোগ ধেয়ে আসছে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের দিকে।