নবদ্বীপে রথ টানার অনুমতি পেল বিজেপি, সোশ্যাল মিডিয়াতে খোঁচা তৃণমূলের
নবদ্বীপে রথ টানার অনুমতি পেল বিজেপি, সোশ্যাল মিডিয়াতে খোঁচা তৃণমূলের
কলকাতাঃ বাংলায় বিজেপির রথযাত্রা করার জন্যে অনুমতি মিলবে কিনা তা নিয়ে ধোঁয়াশায় ছিলেন খোদ বিজেপি নেতারা। প্রয়োজনে আদালতের যাওয়ারও ভাবনা চিন্তা করে ফেলেছিলেন দিলীপ ঘোষরা। কার্যত রথযাত্রাকে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক অভিযোগকে খন্ডন করে রথযাত্রার অনুমতি দিল প্রশাসন। নদিয়াতে এই রথযাত্রার অনুমতি স্থানীয় জেলা প্রশাসনের। আর এরপরেই সোশ্যাল মিডিয়াতে তৃণমূলের খোঁচা, রথযাত্রার অনুমতি পাওয়া নিয়ে বিজেপির দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা!
রথযাত্রা সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য চাইল জেলা প্রশাসন
বিধানসভা ভোটের আগে রথ বার করছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। গত লোকসভা নির্বাচনের আগেও এহেন রথ বার করতে চায়। কিন্তু অনুমতি পেতে কার্যত আদালত পর্যন্ত ছুটতে হয় বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে। এবারও রাজ্য প্রশাসনের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল বিজেপি। রথ টানার অনুমতি চেয়ে প্রথমে নবান্নে আবেদন জানানো হয়। এরপরেই নবান্নের তরফে পালটা জানানো হয় যে, অনুমতির জন্যে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাতে হবে। আর তাতেই সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করে বিজেপি। অনুমতি দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করতে থাকে।
বিজেপির কাছে তথ্য চাইল প্রশাসন
কার্যত আজ শুক্রবার নদিয়া জেলা প্রশাসন নবদ্বীপে রথযাত্রা নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বের কাছে বিস্তারিত তথ্য চাইল। তথ্য চেয়েছে নদিয়া জেলা পুলিশও। শনিবার মিছিল কোন কোন রাস্তা দিয়ে যাবে, কোথায় কোথায় সভা হবে, মিছিলকারীরা কোথায় রাত্রিবাস করবেন - সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি, চিঠিতে বলা হয়েছে, করোনা আবহে এই কর্মসূচি হচ্ছে। ফলে অবশ্যই কোভিড পরিস্থিতি মেনে চলতে হবে বিজেপি নেতৃত্ব। প্রয়োজনে সমস্ত রকম ব্যবস্থা রাখতে হবে বলে জানানো হয়েছে। সমস্ত তথ্য পাওয়ার পরেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা পুলিশ এবং প্রশাসনের তরফে নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
বিজেপিকে কটাক্ষ তৃণমূলের
রথযাত্রার অনুমতি পাওয়র পরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির বিরুদ্ধে মিথ্যা এবং বিভ্রান্তকর তথ্য দেওয়ার অভিযোগ তৃণমূলের। শুধু তাই নয়, অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজনীতির অভিযোগকে কার্যত খারিজ করে দিয়েছে শাসকদল। রথযাত্রার অনুমতি পাওয়ার পরেই এই সংক্রান্ত একের পর এক টুইট শাসকদল তৃণমূলের। টুইট করে তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে যে, রাজ্য প্রাসন রথযাত্রার অনুমতি দিতে অস্বীকার করেনি। বিজেপির দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং মিথ্যা বলে দাবি তৃণমূলের। তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রমাণ্য নথি প্রকাশ করার দাবি জানানো হয়েছে তৃণমূলের তরফে। যদিও ইতিমধ্যে রথযাত্রা ইস্যুতে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হয়েছে মামলা।
তৃণমূলের বক্তব্য
তৃণমূলের তরফে ওই মামলা প্রসঙ্গও টুইটে উল্লেখ করা হয়েছে। টুইটে তৃণমূল জানাচ্ছে, বিজেপির তরফে রথযাত্রার অনুমতি পেতে একটি আবেদনপত্র জমা পড়ে মুখ্যসচিবের কাছে। সেই আবেদনপত্রে রথযাত্রার রুটম্যাপও উল্লেখ করেছিল গেরুয়া শিবির। তবে মুখ্যসচিবের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় স্থানীয় প্রশাসনই অনুমতি দেবে। সেই অনুযায়ী নদিয়ায় রথযাত্রার অনুমতি মিলেছে। এছাড়া হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। তা এখনও বিচারাধীন। তাই ওই মামলা প্রসঙ্গে কোনও কিছু বলা সম্ভব নয় বলে তৃণমূলের তরফে টুইটে এমনটাই দাবি করা হয়েছে।
অনুমতি পেলেও রথযাত্রা ঘিরে রয়েছে সংশয়
আগামীকাল শনিবার প্রথম রথ বের হওয়ার কথা রয়েছে। নবদ্বীপ থেকে বের হবে সেই রথ। আর এই রথ বের হলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে। আর তা যদি হয় তাহলে ভোটের আগে সমস্যা হতে পারে বাংলাইয়। আর তাই এই রথযাত্রার অনুমতি বাতিলের দাবিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। সম্ভবত আজ শুক্রবার প্রধান বিচারপতির এজলাসে এই মামলার শুনানি হতে পারে। তবে আদালত রায় রথযাত্রার বিরুদ্ধে গেলে অবশ্যই ডিভিশন বেঞ্চে বিজেপি আবেদন জানাবে বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ।
তৃণমূল অন্তিমযাত্রা, কটাক্ষ দিলীপের
বাংলায় তৃণমূলের দিন শেষ হয়ে এসেছে। বিজেপির এই রথযাত্রার মধ্যে দিয়েই শাসকদল তৃণমূলের অন্তিমযাত্রার সূচনা হবে বলে কটাক্ষ বিজেপির রাজ্য সভাপতির। দীলিপ ঘোষের দাবি, তৃণমূল ভয় পেয়েছে। বাংলায় রথ বার হলে ওদের সমস্যা হতে পারে। আর তাই তা বন্ধ করতে আগেভাগে আদালতে চলে গিয়েছে ওরা। প্রয়োজন হলে আমরাও যাব, মন্তব্য সাংসদের।
‘চৈতন্যচেতনা রথ’ টানতে রাতেই কলকাতায় অমিত শাহ
শনিবার রাজ্যের মোট পাঁচটি জায়গা থেকে পাঁচটি পরিবর্তনের রথযাত্রা বের করার কথা বিজেপির। যেগুলি ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্র ছুঁয়ে যাবে। নবদ্বীপ থেকে যাত্রার সূচনা করার কথা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার। আজ শুক্রবার রাতেই কলকাতায় চলে আসছেন বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি। নবদ্বীপ থেকে প্রথম এই রথের সূচনা হবে। ওই এলাকার জোনের রথের নাম ' চৈতন্যচেতনা রথ'। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে,'চৈতন্যচেতনা রথ' শনিবার নবদ্বীপ থেকে যাত্রা শুরু করবে। ১৮ দিন ধরে বিভিন্ন স্থান পরিক্রমা করবে। এমনই আরও বেশ কয়েকটি রথ বের হবে। প্রত্যেক বিধানসভা কেন্দ্রে ১৫ থেকে ২০ দিন ধরে থাকবে। এভাবেই গোটা বাংলা চষে বের হবে এই রথ। জে পি নাড্ডা ছাড়াও উত্তরের রথ টানতে আসবেন কেন্দ্রীয় সরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
১০ দফায় ভোট চান দিলীপরা, কেন্দ্রীয় বাহিনী থেকে অফিসার বদলি একাধিক দাবি নিয়ে কমিশনে বিজেপি