টোকিও অলিম্পিক তিরন্দাজিতে ভারতের শেষ আশা দীপিকা ও অতনু, চাপে বিশ্বের ১ নম্বর
টোকিও অলিম্পিকের তিরন্দাজিতে ভারতের পদক জয়ের আশা এখনও টিকে পাওয়ার কাপলের জন্যই। দলগত বা মিক্সড ইভেন্ট থেকে আগেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। আজ ব্যক্তিগত ইভেন্টে অলিম্পিক অভিযান শেষ হয়ে গিয়েছে প্রবীণ যাদব ও তরুণদীপ রাইয়ের। কাল সকাল সাড়ে ৭টায় প্রথম রাউন্ড তথা ১/৩২ এলিমিনেশন রাউন্ডে নামবেন অতনু দাস। তাঁর স্ত্রী তথা বিশ্বের এক নম্বর তারকা দীপিকা কুমারী কঠিন চ্যালেঞ্জ সামলে এদিনই পৌঁছে গিয়েছেন ব্যক্তিগত বিভাগের প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে। তবে বিশ্বের এক নম্বর হিসেবে তাঁর উপর প্রত্যাশা যে চাপ তৈরি করছে সে কথা এদিন স্বীকার করে নিয়েছেন দীপিকা।
অলিম্পিকের চাপ
প্রথম রাউন্ডে ভুটানের কর্মাকে সহজেই হারালেও দ্বিতীয় রাউন্ডে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অষ্টাদশী জেনিফার মুসিনো-ফার্নান্দেজ দীপিকাকে ভালো চাপে ফেলে দিয়েছিলেন। প্রবীণ, তরুণদীপদের ছিটকে যাওয়ার পর তিনি যে নার্ভাস ছিলেন সে কথা মেনে নিয়েছেন দীপিকা কুমারী। ৬-৪ ব্যবধানে জিতে প্রি কোয়ার্টার বা ১/৮ এলিমিনেশনে পৌঁছে দীপিকা বলেছেন, আমি নার্ভাস ছিলাম। অলিম্পিকে পদক জয়ের জন্য বছরের পর বছর কঠোর পরিশ্রম করি আমরা, কিন্তু এখানকার মতো চাপ অন্য কোথাও থাকে না। এখানে পদক জয়ের লড়াইটা যেন নিজের সঙ্গেই। ব্যাপারটা অনেকটা, নিজেই নিজের সঙ্গে লড়াই করে জেতার মতো।
চাপ কাটাতে
তবে দেশবাসীর প্রত্যাশা নয়, নিজের উপর নিজেরই প্রত্যাশাই চাপ তৈরি করে বলে মত দীপিকার। তিনি বলেন, সব সময়ই পারফরম্যান্স আরও উন্নত করার প্রয়াস চালিয়ে যেতে হয়। দেশের মানুষের প্রত্যাশার চাপ লক্ষ্যভেদের সময় মাথায় থাকে না। কিন্তু নিজের মানসিক চাপই অনেক সময় হিসেব ওলটপালট করে দিতে পারে। আমরা সেই চাপকেই জয় করার চেষ্টা করি সব সময়।
পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট নন
২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিকেও বিশ্বের ১ নম্বর হিসেবেই অংশ নিয়েছিলেন দীপিকা, ছিটকে যান প্রথম রাউন্ডেই। রিওতেও প্রত্যাশা ছিল তাঁকে ঘিরে, কিন্তু প্রি কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায় নেন। এবার টোকিওয় শুক্রবার প্রি কোয়ার্টার, কোয়ার্টার, সেমিফাইনালের বাধা টপকে পদকের রাউন্ড। শুক্রবার শুরুতেই দীপিকাকে নামতে হবে, কিন্তু তাঁর প্রতিপক্ষ এদিন নির্ধারিত হয়নি। দীপা বলেন, আমার ভাগ্য সব সময়ই খারাপ। কেন জানি না অলিম্পিকের আগেই বড় কিছু জিতে লাইমলাইটে চলে আসি। যেটা আমি একেবারেই পছন্দ করি না, কিন্তু সেটাই হয়ে যায়! অলিম্পিকে দীপিকা নবম বাছাই হয়েছেন। প্রথম রাউন্ডে বিশ্বের ১৯৩ নম্বর তিরন্দাজ কর্মার বিরুদ্ধে পড়েছিলেন। তিন সেটের মধ্যে একবারই ১০ মারতে সক্ষম হন। দ্বিতীয় রাউন্ডেও চারবার রেড সার্কেলের মধ্যে মারেন। নিজের চেনা ছন্দে না থাকলেও শেষ হাসি অবশ্য তিনিই হাসেন।
কঠিন চ্যালেঞ্জ সামনে
নিজের ছন্দে না থাকার কারণ হিসেবে দীপিকা বলেন, আজ যেভাবে খেলেছি তা টোকিওয় ২০১৯ সালের টেস্ট ইভেন্টের পুরো উল্টো ফল। হাওয়ার গতি বুঝতে পারিনি সঠিকভাবে। বেশ হাওয়া দিচ্ছিল। মেনে নিচ্ছি আজকের পারফরম্যান্সে আমি সন্তুষ্ট নই। তার মধ্যে যে একটা শট ছয় মারলাম তা আমার কাছে শক। ভালো রিলিজের পরও কীভাবে এমনটা হল বুঝতে পারছি না। বাজে শট মারলে নার্ভাস হয়ে যাই, কিন্তু তা সত্ত্বেও নিজের সেরাটা দিয়েই আত্মবিশ্বাসী থাকতে চেষ্টা করি। তবে প্রকৃতি তো কারও হাতে নেই। প্রতি সেকেন্ডে হাওয়ার গতি বদলায়। আশা করি, পরের দিন ভালো করব। তবে দীপিকার পথে বড় বাধা হতে পারে ফর্মে থাকা কোরিয়াই।