বিশ্বনাথন আনন্দ বিশ্ব দাবার নিয়ামক সংস্থার প্রশাসনে আসছেন, তাহলে কি অবসরের সিদ্ধান্ত?
বিশ্বনাথন আনন্দ এবার আসতে চলেছেন বিশ্ব দাবার নিয়ামক সংস্থার প্রশাসনে। আন্তর্জাতিক দাবা সংস্থার প্রেসিডেন্ট আরেকডি ডরকোভিচ। আসন্ন নির্বাচনে তাঁরই প্যানেলে রাখা হচ্ছে আনন্দকে। ফিডের নির্বাচনে আনন্দ ডেপুটি প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। বর্তমান শাসকগোষ্ঠীই পুনরায় ফিডের পরিচালনভার পেতে চলেছে বলে নিশ্চিত ভারতের কিংবদন্তি গ্র্যান্ডমাস্টার তথা পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আনন্দ।
বিশ্বনাথন আনন্দ সম্প্রতি নরওয়ের দাবা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে তিনি হারান বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ম্যাগনাস কার্লসেনকে। আনন্দ বলেছেন, তিন-চার বছর আগের তুলনায় এখন সক্রিয় দাবাড়ু হিসেবে বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণের সংখ্যা কমিয়ে এনেছি। বহু বছর ধরেই দাবার প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া আমার লক্ষ্য ছিল। ফিডের ডেপুটি প্রেসিডেন্ট হলে অনেক কিছু শেখার বিরাট সুযোগ পাব। আমার মূল লক্ষ্যই হলো, ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের দাবার প্রতি আগ্রহ বাড়ানো, তারা যাতে আরও সিরিয়াসভাবে দাবা খেলাকে বেছে নেয় সেজন্য তাদের উদ্বুদ্ধ করা। আমি আজ যে জায়গায় পৌঁছেছি তা দাবার জন্যই। এবার দাবাকে কিছু ফিরিয়ে দেওয়ারও সময় এসে গিয়েছে।
আনন্দ বলেন, আমি চাই আরও অনেকে পেশাদার দাবাকেই যেন বেছে নেন। আমি নির্বাচনে জিতে এলে আমি এ সংক্রান্ত আমার আইডিয়া ও ভিশন স্পষ্ট করব। ডরকোভিচের নেতৃত্বে ফিডে যেভাবে দাবার বিকাশে নিরলস কাজ করেছে তাতে শাসকগোষ্ঠীর ফের জয়লাভ করা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা বলেই মনে করেন আনন্দ। তাঁর কথায়, বর্তমানে যাঁরা বিশ্ব দাবার নিয়ামক সংস্থা পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে তাঁরা করোনা পরিস্থিতিতেও দাবার জনপ্রিয়তা অক্ষুণ্ণ রেখেছেন। আর সে কারণেই আমি প্যানেলে নিজের নাম রাখার সম্মতি দিই এবং ডেপুটি প্রেসিডেন্ট পদের জন্য মনোনয়ন জমা করেছি।
১৯৮৭ সালে আনন্দ দেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছিলেন। এখন সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭৪। সম্প্রতি হায়দাবাদের বাসিন্দা ১৯ বছরের রাহুল শ্রীবাস্তব পেড্ডি নতুন গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছেন। আনন্দ এই প্রসঙ্গে বলেন, আমার দৃঢ় ধারণা ছিল আমাদের দেশে অনেক গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার মতো দাবাড়ু রয়েছেন। আমার কেরিয়ারের প্রথম দশ বছরে আমার পাশাপাশি দাবার গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছিলেন প্রবীণ থিপসে ও দিব্যেন্দু বড়ুয়া। অনেক উত্থান-পতন পেরিয়ে ভারতীয় দাবার যে উন্নতি হয়েছে এবং এখন গ্র্যান্ডমাস্টারের সংখ্যাটা যে জায়গায় পৌঁছেছে তা বিশেষভাবে আমাকে তৃপ্তি দেয়। বিশ্বনাথন আনন্দের আকাদেমিতে অনেক প্রতিভা বিকশিত হচ্ছে, ননা বয়সের এই দাবাড়ুদের জন্য বিভিন্ন ফেলোশিপের বন্দোবস্ত রয়েছে। ফিডেরও কিছু প্রকল্প রয়েছে। ভারতে প্রতিভার অভাব নেই। প্রশাসক হিসেবে আনন্দ চান ভারতের সেই প্রতিভাদের গাইড করতে যাঁরা বিশ্বমঞ্চে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা দখলের অধিকারী হতে পারেন। তবে প্রশাসনে এলেও দাবার বোর্ডকে এখনই বিদায় জানাবেন না বলেও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ৫২ বছরের আনন্দ।