ইতিহাসে স্থান পেল মেয়ে, জলপাইগুড়ির বাসায় আনন্দাশ্রুতে ভরে গেল মা-এর চোখ
ছুটছেন স্বপ্না। আর কিছুটা। জলপাইগুড়ির এক চিলতে টিন দিয়ে ঘেরা ঘরটায় তখন শুধু একাধিক চোখ ছোট্ট টিভি সেটটার দিকে।
ছুটছেন স্বপ্না। আর কিছুটা। জলপাইগুড়ির এক চিলতে টিন দিয়ে ঘেরা ঘরটায় তখন শুধু একাধিক চোখ ছোট্ট টিভি সেটটার দিকে। এক এক করে স্বপ্না পিছনে ফেলে দিয়েছেন প্রতিপক্ষদের। দৌড়টা শেষ হতেই আনন্দের কান্না আর চেপে রাখা গেল না। বাসনা বর্মণের শরীরটা তখন কান্নায় কেঁপে উঠছে। চোখের সামনে তখন ভেসে বেড়াচ্ছে অভাবের সেই দিনগুলো। যখন সন্তানদের ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করানোটাও অসম্ভব বলে বোধ হত। এমন ঘরের মেয়ে আজ ইতিহাসের পাতায়। ভারতের প্রথম মহিলা হিসাবে হেপ্টাথেলনে এশিয়ান গেমসে পদক জিতলেন।
মেয়ের সারা শরীর জুড়ে চোট। তবু থেমে যায়নি সে। আসলে ছোট থেকেই বড্ড জেদি স্বপ্না। জানালেন মা বাসনা বর্মণ। যেটা করবে তা একবার ঠিক করে নিলে ও সেটাই করে। এশিয়ান গেমসের আগে চোটে জর্জরিত হয়ে গিয়েছিল মেয়েটা। তবু হাল ছাড়েনি। অসম্ভবকে সম্ভব করার জেদ নিয়ে পাতিয়ালায় ট্রেনিং ক্যাম্পে চলে গিয়েছিলেন স্বপ্না। তাঁর মা বাসনা জানালেন অনেক কষ্ট করে স্বপ্নাকে খেলা-ধূলোর সঙ্গে জুড়ে রাখতে পেরেছিলেন। পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে খেলাধূলোতেও উৎসাহ দিতেন বাসনা।
ইন্দোনেশিয়ায় যাওয়ার আগে স্বপ্না মা-কে জানিয়েছিল সে সোনা জিতেই ফিরবে। কথা রেখেছেন স্বপ্না। জলপাইগুড়িতেও এখন খুশির হাওয়া। বাসনা বর্মণ জানালেন মেয়েকে এতদূর পৌঁছে দিতে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে। তবে স্বপ্না-যে পদক জিতবেই তা নাকি আগেই বুঝতে পেরেছিলেন। আপাতত ইতিহাসে নাম তোলা মেয়ের অপেক্ষায় চোখ লাগিয়ে জলপাইগুড়িতে বসে আছেন বাসনা বর্মণ।