পিভি সিন্ধুর বিদায় এশীয় ব্যাডমিন্টন থেকে, সেমিফাইনালে ইয়ামাগুচির কাছে হারলেও জিতলেন ব্রোঞ্জ
পিভি সিন্ধু বিদায় নিলেন ব্যাডমিন্টন এশিয়া চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে। সেমিফাইনালে তিনি হেরে গেলেন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন তথা ক্রমতালিকায় বর্তমানে দ্বিতীয় স্থানে থাকা জাপানের আকানে ইয়ামাগুচির কাছে। ১ ঘণ্টা ৬ মিনিট ধরে চলা লড়াইয়ে প্রথম গেমটি সিন্ধুই জিতেছিলেন, ২১-১৩ ব্যবধানে। যদিও পরের দুটি গেম ২১-১৯, ২১-১৬ ব্যবধানে জিতে ফাইনালে পৌঁছে যান বিশ্বের প্রাক্তন ১ নম্বর তারকা শাটলার। ২০১৪ সালের পর এবারও ফের ব্রোঞ্জ জিতেই ফিরতে হচ্ছে সিন্ধুকে।
|
ব্রোঞ্জ সিন্ধুর
২০১৯ সালের পর এবারই প্রথম ম্যানিলায় বসেছে এশীয় ব্যাডমিন্টনের আসর। করোনা পরিস্থিতিতে ২০২০ ও ২০২১ সালে এই প্রতিযোগিতাটি হয়নি। ২০১৪ সালে গিমচেওনে ব্যাডমিন্টন এশিয়া চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ জেতার পর এবারই প্রথম শেষ চারে পৌঁছেছিলেন পিভি সিন্ধু। বিশ্বের সাত নম্বর সিন্ধু যে ছন্দে ছিলেন তাতে অনেকে আশা করেছিলেন, এবার পদকের রং বদলাতে পারবেন দেশের এক নম্বর শাটলার। তবে কাজটা কঠিনও ছিল। কারণ, সেমিফাইনালে সিন্ধুর সামনে ছিলেন ইয়ামাগুচি। জাপানের এই শাটলার বর্তমানে বিশ্বের ২ নম্বর শাটলার। ২০১৯ সালে তিনি বিশ্বের ১ নম্বর শাটলারও হয়েছিলেন। পারস্পরিক দ্বৈরথে অবশ্য ইয়ামাগুচির চেয়ে ১৩-৮ ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন সিন্ধুই। কিন্তু শেষরক্ষা হলো না।
এশীয় ব্যাডমিন্টনে ভারতের সাফল্য
ভারতের প্রাক্তন শাটলার দীনেশ খান্না পুরুষদের সিঙ্গলসে ১৯৬৫ সালের এশীয় ব্যাডমিন্টনে সোনা জিতেছিলেন। তিনি ছাড়া আর কোনও শাটলার এই প্রতিযোগিতার সিঙ্গলস ফাইনালে ওঠেননি। খান্না ১৯৬৯ সালে ব্রোঞ্জও জেতেন। ১৯৭৮ সালে ডাবলস ফাইনালে সৈয়দ মোদী ও প্রকাশ পাড়ুকোন এশীয় ব্যাডমিন্টনে রুপো জেতেন। দীনেশ খান্নার পর সিন্ধুই প্রথম যিনি এশীয় ব্যাডমিন্টন থেকে দুটি পদক জিতলেন, তবে দুটিই ব্রো়ঞ্জ। পুরুষদের সিঙ্গলসে এইচএস প্রণয় ২০১৮ সালে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন। তারপর সিন্ধুই প্রথম যিনি এশীয় ব্য়াডমিন্টন থেকে ভারতকে পদক জেতালেন।
|
প্রথম গেম জিতেও হার
এদিন শুরু থেকেই দাপট দেখিয়ে সিন্ধু প্রথম গেম জিতে নেন। একটা সময় ১৫-৮ ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন তিনি। দ্বিতীয় গেমে পিছিয়ে পড়ার পর টানা ৬টি পয়েন্ট জিতে সিন্ধু ৭-৫ ব্যবধানে এগিয়ে যান। বিরতিতে তিনি এগিয়ে ছিলেন ১১-৬ ব্যবধানে। সতর্ক করার পরও সিন্ধু সময় নষ্ট করায় তাঁর পেনাল্টি হয়। তখনও তিনি ১৪-১২ ব্যবধানে এগিয়ে। এরপরই লিড বাড়াতে থাকেন ইয়ামাগুচি। সিন্ধুও লড়াই চালাতে থাকেন। ১৯-১৯ করে ফেলেন। দীর্ঘ র্যালি চলতে থাকে, দুজনের নেট প্লে প্রশংসিত হয়। কিন্তু সিন্ধুর কিছু ভুলে দ্বিতীয় গেম ইয়ামাগুচি জিতে নেন ২১-১৯ ব্যবধানে।
দুরন্ত লড়াই
তৃতীয় তথা নির্ণায়ক গেমে অবশ্য আগাগোড়া অগ্রগমন ধরে রাখেন ইয়ামাগুচি। শুরুতেই তিনি এগিয়ে ছিলেন ৩-০ ব্যবধানে। বিরতিতেও তিনি সিন্ধুর চেয়ে চার পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন। পরে ব্যবধান কমাতে সিন্ধু মরিয়া লড়াই চালালেও সফল হননি। শেষে ২১-১৬ ব্যবধানে তৃতীয় গেম জিতে নেন বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। ৮ বছর পর এশীয় ব্যাডমিন্টনের সেমিফাইনালে উঠেও ফের ব্রোঞ্জ জিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো সিন্ধুকে।