প্রধানমন্ত্রী মোদী চিহ্নিত করলেন ক্রীড়াক্ষেত্রে ভারতের সাফল্যের কারণ, অচিন্ত্য-সৌরভকে কাল সংবর্ধনা রাজ্যের
কমনওয়েলথ গেমসে এবার শ্যুটিং না থাকা সত্ত্বেও ভারত ২২টি সোনা-সহ ৬১টি পদক জিতেছে। ভারতের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ লালকেল্লায় দেশের ৭৬তম স্বাধীনতা দিবস অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে গুরুত্ব পেল খেলার দুনিয়ায় দেশের সাফল্যের কথা। মোদী চিহ্নিত করলেন ঠিক কোন কারণটিতে ধারাবাহিক সাফল্য আসছে।
স্বজনপোষণ ঘুচিয়ে
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণে উঠে আসে কীভাবে নেপোটিজম বা স্বজনপোষণ রাজনীতির পাশাপাশি ক্রীড়াক্ষেত্রেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। যদিও এখন কোনও গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্টের জন্য খেলোয়াড় নির্বাচন প্রক্রিয়া স্বচ্ছ্ব হওয়ায় তা সাফল্যের পথ সুগম করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজনীতিতে ভাই-ভাইপোবাদের মতো আগে বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য খেলোয়াড় বাছাইয়ে স্বচ্ছ্বতা ছিল না। অনেক প্রতিভা নষ্ট হয়ে যাওয়ার অন্যতম বড় ফ্যাক্টর এই স্বজনপোষণ। ফলে প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও খেলোয়াড়দের কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হয়েছে। কিন্তু এখন সেই পরিস্থিতি বদলেছে। সে কারণেই খেলোয়াড়রা আকাশ ছুঁতে পারছেন। সোনা ও রুপোর পদকের ঔজ্জ্বল্য খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর পক্ষেও সহায়ক হয়েছে।
সাফল্যের সরণিতে
প্রধানমন্ত্রী খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করে বলেন, ভারত ক্লান্তও হয় না, থেমেও যায় না। সবে তো শুরু হয়েছে। সেই দিন বেশি দূরে নেই যখন আমরা আরও বেশি সোনা জিতব। উল্লেখ্য, গত বছর টোকিও অলিম্পিকে ভারত ১টি সোনা, ২টি রুপো ও ৪টি ব্রোঞ্জ জিতেছিল। বার্মিংহ্যাম কমনওয়েলথ গেমস থেকে ভারতের ঝুলিতে এসেছে ২২টি সোনা-সহ ৬১টি পদক। কোনও প্রতিযোগিতার আগে ও পরে প্রধানমন্ত্রী নিয়মিতভাবে খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলেন, তাঁদের প্রয়োজনীয়তার কারণ জানেন, নানাভাবে উৎসাহিতও করে থাকেন। টোকিও অলিম্পিকের মতো কমনওয়েলথ গেমস-ফেরত ক্রীড়াবিদদের নিজের বাসভবনে আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি সংবর্ধিত করেন।
পরিবারতন্ত্র ও দুর্নীতিমুক্ত ক্রীড়া সংস্থা
দেশের ক্রীড়া ফেডারেশনে যাতে কোনও দুর্নীতি না থাকে তা নিশ্চিত করার পক্ষে সওয়াল করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক প্রতিষ্ঠানেই পরিবারতন্ত্র রয়েছে। সে কারণে অনেক প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি হয়েছে, নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে প্রতিভাবানদের উপর। ফলে দেশও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পায়নি। যা দুর্নীতির ঘটনাও বাড়িয়েছে। তবে এ সব থেকে প্রতিষ্ঠানগুলিকে মুক্ত করতে হবে। পরিবারের স্বার্থ কখনও দেশের স্বার্থের উপর হতে পারে না। আসুন সকলে মিলে ভারতের রাজনীতি ও প্রতিষ্ঠানগুলিকে পরিবারবাদের হাত থেকে মুক্ত করি। ক্রীড়াক্ষেত্রেও তেমনটাই করতে হবে। এ সবের বিরুদ্ধে বিপ্লব করতে হবে, এটাই আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা। স্বচ্ছ্বতা আনতেই হবে। উল্লেখ্য, সাইয়ের টার্গেট অলিম্পিক পোডিয়াম স্কিমও ক্রীড়াক্ষেত্রে ভারতের সাফল্যের ক্ষেত্রে গেম চেঞ্জার হয়েছে। সাই প্রতিভাদের উপর নজর রাখছে বছরভর, টপস-এ আসার প্রক্রিয়াটিও স্বচ্ছ্ব।
রাজ্যের সংবর্ধনা কমনওয়েলথে পদকজয়ীদের
এদিকে, আগামীকাল পশ্চিমবঙ্গে খেলা হবে দিবস পালিত হবে। দুপুরে নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে কমনওয়েলথ গেমসে ভারোত্তোলনে সোনাজয়ী অচিন্ত্য শিউলি ও স্কোয়াশে ব্রোঞ্জয়ী সৌরভ ঘোষালকে সংবর্ধনা জানানো হবে। উপস্থিত থাকবেন ক্রীড়া ও যুবকল্যাণমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।