ম্যাচ গড়াপেটায় দোষী সাব্যস্ত জাতীয় টেবিল টেনিস কোচ সৌম্যদীপ রায়
ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগে দোষী প্রমাণিত হলেন জাতীয় টেবিল টেনিস কোচ সৌম্যদীপ রায়। দিল্লি হাইকোর্টের রায়ে একই সঙ্গে জাতীয় টেবিল টেনিস ফেডারেশনের কার্যকরী সমিতিকে ছয় মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। এবং প্রশাসক নিয়োগ করা হয়েছে। এই ঘটনা দেশের টেবিল টেনিসের ইতিহাসে নজিরবিহীন। তার আরও একটি কারণ হল - সৌম্যদীপের ছাত্রী টেবিল টেনিস তারকা মনিকা বাত্রা তাঁর কোচের বিরুদ্ধে গড়াপেটার অভিযোগ এনেছিলেন, যা প্রমাণিত হয়েছে।
অলিম্পিকের কোয়ালিফায়ার ম্যাচে সৌম্যদীপ এই ম্যাচ গড়াপেটায় ইন্ধন জুগিয়েছিলেন বলে অভিযোগ ছিল। বিচারপতি রেখা পল্লী সবদিক দেখে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরে রায় শুনিয়েছেন। রায়ে বলা হয়েছে, সবকিছু জানার পরেও টেবিল টেনিস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া তাদের আধিকারিকদের বাঁচাতে তৎপরতা দেখিয়েছিল। কিন্তু খেলোয়াড়দের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি। মনিকা বাত্রা কমনওয়েলথ গেমসে সোনাজয়ী টেবিল টেনিস তারকা এবং খেলরত্ন সম্মানে ভূষিত। তিনি জাতীয় কোচ সৌম্যদীপের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
মনিকার অভিযোগ ছিল, জাতীয় কোচ সৌম্যদীপ তাঁকে চাপ দেন যাতে তিনি অলিম্পিকের কোয়ালিফায়ার ম্যাচ হেরে যান। এদিন আদালত ফেডারেশনকে তোপ দেগে সৌম্যদীপের স্বার্থের সংঘাতের বিষয়টিকে তুলে ধরেয জাতীয় কোচ কীভাবে একটি প্রাইভেট অ্যাকাডেমি চালাতে পারেন, এই নিয়ে আদালত প্রশ্ন তুলেছে। এবং জাতীয় টেবিল টেনিস ফেডারেশনকেও ভর্ৎসনা করে।
আদালত রায়ে বলেছে, খেলোয়াড়রা দেশের গৌরব। তাঁদের সঙ্গে এই ব্যবহার কোনওভাবে মানা যায় না। পাশাপাশি আধিকারিকেরা যে খেলার উর্ধ্বে নন সেটাও আদালত স্পষ্ট জানিয়েছে এবং ফেডারেশনের আধিকারিকদের সাসপেন্ড করে প্রসাশক বসানোর কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
গত সেপ্টেম্বরে মনিকা বাত্রা মামলা দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, জাতীয় কোচ তাঁকে ইচ্ছা করে কোয়ালিফায়ার ম্যাচ হারতে বলেন। যাতে তার ছাত্রী সুতীর্থা মুখার্জি কোয়ালিফাই করতে পারেন। এরপরে টেবিল টেনিস ফেডারেশনের তরফে মনিকা বাত্রাকে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়। কেন তিনি অলিম্পিকের সময় জাতীয় কোচের তত্ত্বাবধানে খেলতে চাননি, সেই বিষয়ে শোকজ করা হয়। যার জবাবে মনিকা স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, তিনি খেলার প্রতি কোনওরকম অসম্মান করেননি। পরে এশিয়ান টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশিপে মনিকাকে দলে না নেওয়া হলে মনিকা আদালতের দ্বারস্থ হন। সেই মামলাতেই এদিন আদালত রায় শুনিয়েছে এবং জাতীয় কোচ যে ম্যাচ গড়াপেটায় ইন্ধন দিয়েছেন তা যেমন রায় দিয়েছে তেমনই ফেডারেশনের স্বেচ্ছাচারিতাকেও সামনে এনে ফেলেছে।