নিজেকে ছয় ঘণ্টা অক্সিজেন ছাড়াই গঙ্গার নিচে রেখে সাঁতারু মুকেশ গুপ্ত জলের নীচে রেকর্ড গড়েছেন
নিজেকে ছয় ঘণ্টা অক্সিজেন ছাড়াই গঙ্গার নিচে রেখে সাঁতারু মুকেশ গুপ্ত জলের নীচে রেকর্ড গড়েছেন
সম্প্রতি বিনা অক্সিজেনে এভারেস্ট গিয়েছিলেন বাংলার মেয়ে পিয়ালি বসাক। সেখান থেকে সাফল্যকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরছেন পিয়ালি। তবে সঙ্গী অনেক অর্থ কষ্ট। কারণ স্পন্সরের অভাব। বাংলার অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসে যে কী হাল তাঁর প্রমাণ মেলে এ থেকেই। বাংলার এক যুবক এবার গোল্ডেন বুক রেকর্ডে নাম তুলল ছয় ঘণ্টা অক্সিজেন ছাড়া জলের তলায় থেকে। অর্থাৎ সুউচ্চ পর্বত থেকে পাতাললোক বাংলার ছেলে মেয়েদের সাফল্য তরতরিয়ে এগোচ্ছে। তবে সঙ্গে নেই কোনও সাহায্য। এদের সবার নীতি , একলা চলো এবং সেই নীতি নিয়েই গঙ্গার তলায় সাপ্লিমেন্টরি অক্সিজেন ছাড়া কাটালেন বাংলার ছেলে মুকেশ গুপ্তা।
মুকেশ এই বিষয়ে বলেন , 'আমি শুধু একটা পাইপ নিয়েছিলাম। সেটা মুখে নিয়ে পাইপের উপরের অংশটা জলের উপরে রাখা ছিল। আর কিছু ছিল না।" এভাবে এক ঘণ্টা , দু ঘণ্টা থাকা যেতে পারে। ছ'ঘন্টা ! মুকেশ বলেছেন , "এটা খুবই শক্ত ব্যপার। এটার জন্য প্র্যাকটিস করতে গিয়ে কিছুদিন আগে আমার লিভারের অংশে হঠাৎ জলের তলাতেই ব্যাপক চাপ পড়তে শুরু করেছিল। তারপরে বুঝতে পারলাম যে আবার শরীর বেঁকে গিয়েছিল। জল ওখানে চাপ মারছিল। আমাকে ছ'ঘন্টা তাই এই রেকর্ডের জন্য সোজা হয়ে জলে ডুবে থাকতে হবে। শরীর বেঁকে যাবে না।" কিন্তু এটাও তো বেশ শক্ত। মুকেশ বলেন , "আমি জলকে ভালোবাসি। জলের সঙ্গে দিনরাত কাটাই। আমি জানি কোথায় কখন কী হয় না হয়। তাই আমার হয়তো একটু সমস্যা হবে। তবে সেটা নিয়ে খুব চিন্তিত নই।"
মুকেশ আসলে শালকিয়ার বাসিন্দা। জলের সঙ্গে এক অদ্ভুত আত্মিক সংযোগ ওঁকে ঘোর বাড়ি ছাড়া করেছে। থাকে এখন তেলকল ঘাটে। মা, বাবা অনেক বলেও বাড়িও ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি। প্রথমে না বুঝলেও এখন বোঝেন ছেলের স্বপ্ন, ভাবনা, দূরদর্শিতা। তাই এখন ছেলের সমস্ত লড়াইয়ের পাশে থাকেন। বাবা রামচন্দ্র বলেন , "আমাদের একটা চায়ের দোকান আছে এই ঘাটের ধারেই। তা থেকে যা ইনকাম হয় সেটাই আমাদের সম্বল। আর আমার ছেলে এই সাঁতারের জন্য দোকান দেখে আবার অন্য নানা কাজ করে। সংসারটা ভালিয়ে নিই। কিন্তু ওঁকে সাহায্য করবার জন্য কেউ নেই। অনেকে স্বপ্ন দেখিয়েও পিছিয়ে গিয়েছেন। ও এখন তাই একাই লড়ছে। আজকে যেমন জয়ী হল সামনের দিনে ও আরও বড় কিছু করবে বলে আমাদের বিশ্বাস"
Recommended Video