অলিম্পিক্সের আগে জাপানে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ, জারি জরুরি অবস্থা
করোনা সংক্রমণ রোধে টোকিও-সহ চার জায়গায় তৃতীয় পর্যায়ের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করল জাপান সরকার। তিন মাস পর টোকিওতে অলিম্পিক গেমসের আসর বসবে। তার আগে এই পদক্ষেপে করোনা সংক্রমণ বাগে আনা যাবে বলেই আশা প্রকাশ করা হচ্ছে। জাপানের প্রাইম মিনিস্টার ইয়োশিহিদে সুগা এপ্রিলের ২৫ তারিখ থেকে ১১ মে অবধি টোকিও, ওসাকা, কিয়োটো ও হিয়োগোতে জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা করেছেন।
এপ্রিলের শেষ থেকে মে-র প্রথম সপ্তাহ অবধি জাপানে গোল্ডেন উইক চলাকালীন যাতে মানুষের অবাধ যাতায়াতে করোনা সংক্রমণ না ছড়ায় সে কথা মাথায় রেখেই এই পদক্ষেপ বলে জাপান সরকারের তরফে জানানো হয়েছে। টোকিওতে জরুরি অবস্থার মেয়াদ শেষের এক মাস পরেই ফের এই তৃতীয় পর্যায়ের এমারজেন্সি জারি করা হচ্ছে। করোনা সংক্রমণ রোধে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও তা ফলপ্রসূ না হওয়ার পর কড়া পদক্ষেপ করতে বাধ্য হলো সরকার। করোনা বাগে আনার পর সকলকে শুধু সতর্ক থাকার বার্তা দেওয়া হলেও অনেকেই তা মানছিলেন না বলে অভিযোগ। গত ফেব্রুয়ারিতে বেশ কিছু জরুরি পরিষেবা বাদে বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাশ টেনে, বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করার পাশাপাশি আইন অমান্যকারীদের জরিমানার ব্যবস্থাও করা হয়। কিন্তু তাতেই প্রত্যাশিতভাবে অবস্থার উন্নতি হয়নি।
তবে এদিন বার, ডিপার্টমেন্টাল স্টোরস, মল, থিম পার্ক, থিয়েটার, মিউজিয়াম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রেস্তোরাঁতে অ্যালকোহল মিলবে না। গণ পরিবহন ব্যবস্থা অন্য সময়ের তুলনায় আগে বন্ধ হয়ে যাবে। স্কুল খোলা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা হবে অনলাইনে। জাপানে মোট ৫ লক্ষ মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন, ১০ হাজার জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে জাপানে লকডাউন জারি হয়নি। অর্থনৈতিক ক্ষতি এড়াতে বেশ কিছু বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছিল। তবু তাতেও অধৈর্য হয়ে বহু মানুষ করোনা-বিধি না মেনে চলাতেই ফের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ওসাকায়, ব্রিটেনের স্ট্রেনের সন্ধান মিলেছে। হাসপাতালে বেড অমিল। এই অবস্থায় সেমি স্টেট এমারজেন্সিতে কাজ না হওয়ায় জরুরি অবস্থা জারির আবেদন করেছিল ওসাকা প্রশাসন।
এরই মধ্যে জাপান সরকার সমালোচনার মুখেও পড়েছেন। দেশে দাবি উঠেছে অলিম্পিক্স পিছিয়ে দেওয়ার। ১১ মে জরুরি অবস্থার মেয়াদ শেষ হবে। তা আবার জাপানে ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটির প্রধান টমাস বাক যাওয়ার ঠিক আগেই। ফলে এমন কথাও উঠছে জাপান জনস্বাস্থ্যের চেয়ে অলিম্পিক্সকেই প্রাধান্য দিচ্ছে। কেন না, জাপান নিজেরা এখনও ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে উঠতে পারেনি। অন্য দেশ থেকে এনে তা দ্রুত দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়নি। ফলে অলিম্পিক্স শুরুর আগে বহু মানুষ ভ্যাকসিনই পাবেন না। অলিম্পিক্স দেখতে বিদেশিদের জাপানে প্রবেশ নিষিদ্ধ হলেও দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে অলিম্পিকের খেলাগুলি হবে কিনা বা দর্শক প্রবেশের অনুমতি দিলে তা কত সংখ্যক সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি।