সফলতম টোকিও অলিম্পিকের ভারতীয় অ্যাথলিটদের 'হাই টি'-তে আমন্ত্রণ রাষ্ট্রপতির
টোকিও অলিম্পিকে অংশ নেওয়া ভারতীয় অ্যাথলিটদের চা চক্রে আমন্ত্রণ জানালেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
ভারতের সফলতম অলিম্পিক টোকিও গেমসে অংশ নেওয়া অ্যাথলিটদের জন্য দেশের নাগরিকদের গর্বের শেষ নেই। বিশেষ করে যাঁরা ওই প্রতিযোগিতা থেকে পদক জিতে দেশে ফিরেছেন, তাঁদের তো মাথায় তুলে রাখতে প্রস্তুত রাষ্ট্র। এহেন পরিবেশে দেশের অ্যাথলিটদের কীর্তিতে গর্বিত রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ইতিহাস রচনাকারী নীরজ চোপড়া, পিভি সিন্ধু, মীরাবাঈ চানুদের সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্যোগ নিলেন। দেশের স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে সদ্য শেষ হওয়া টোকিও গেমসে অংশ নেওয়া দেশের অ্যাথলিটদের নিজ ভবনে চা চক্রে আমন্ত্রণ জানালেন রাষ্ট্রপতি।
রামনাথ কোবিন্দের আমন্ত্রণ
টোকিও অলিম্পিকের প্রতিটি ইভেন্টে ভারতীয় অ্যাথলিটদের সাফল্য এবং ব্যর্থতায় সরব হয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। সোশ্যাল মিডিয়ায় পদকজয়ীদের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি অল্পের জন্য প্রথম তিনে জায়গা করে নিতে ব্যর্থ হওয়া অ্যাথলিটদের তিনি সান্ত্বনা দিয়েছেন, পাশে দাঁড়িয়েছেন। এবার সেই অ্যাথলিটদের সঙ্গেই মুখোমুখি সাক্ষাতের ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ। স্বাধীনতা দিবসের একদিন আগে অর্থাৎ ১৪ অগাস্ট রাষ্ট্রপতি ভবনের কালচারাল সেন্টারে ইতিহাস রচনা করা নীরজ চোপড়া, পিভি সিন্ধু, মীরাবাঈ চানুদের চা চক্রে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রামনাথ কোবিন্দ।
স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লায় অ্যাথলিটরা
১২১ বছর পর অলিম্পিকের অ্যাথলেটিক্সে সোনা জিতেছে ভারত। নীরজ চোপড়ার দুর্দান্ত বর্শা নিক্ষেপের সৌজন্যে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্রীড়াযজ্ঞের ট্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে প্রথমবার সোনা জিতেছে দেশ। ২০০৮ সালের অভিনব বিন্দ্রার পর অলিম্পিকের ব্যক্তিগত ইভেন্টে ফের সোনা জেতা ভারতের মস্তক প্রায় গগন ছুৃঁই ছুঁই। সবমিলিয়ে টোকিও গেমস যে ভারতের সামনে নবদিগন্ত উন্মোচন করেছে, তা আগেই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সফল অ্যাথলিটদের শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি বিফলদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের উদ্বুদ্ধ করেছেন দেশের প্রশাসনিক প্রধান। সেই তিনিই টোকিও গেমস থেকে ফেরা দেশের সব অ্যাথলিটদের স্বাধীনতা দিবস অর্থাৎ ১৫ অগাস্ট দিল্লির লালকেল্লায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সেদিন প্রত্যেক অ্যাথলিটদের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
পদক সংখ্যায় ইতিহাস
টোকিও গেমস শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিক ছিল পারফরম্যান্সের নিরিখে ভারতের সেরা। ওই গেমস থেকে দুটি রুপো ও চারটি ব্রোঞ্জ সহ মোট ৬টি পদক জিতেছিল দেশ। শুরুটা করেছিলেন মীরাবাঈ চানু। পিভি সিন্ধু, লাভলিনা বরগোহাঁই, রবিকুমার দাহিয়ারা পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন। পদক জয়ের তালিকায় নাম লিখিয়েছে ভারতীয় হকি দলও। দেশের অলিম্পিক অভিযানের শেষ দিনে বজরং পুনিয়ার ব্রোঞ্জের পর নীরজ চোপড়ার সোনার হাত ধরে পদক জয়ের নিরিখে টোকিও গেমসে নতুন রেকর্ড গড়ল টিম ইন্ডিয়া। একটি সোনা, দুটি রুপো এবং চারটি ব্রোঞ্জ সহ চলতি অলিম্পিকে ভারতের সর্বমোট পদক সংখ্যা সাতে পৌঁছে গিয়েছে। খুব কাছে পৌঁছে ভারতীয় মহিলা হকি দল, গল্ফার অদিতি অশোক ও কুস্তিগীর দীপক পুনিয়ার পদক হাতছাড়া না হলে সংখ্যাটা দশে পৌঁছে যেতে পারত।
নীরজের কীর্তি
টোকিও অলিম্পিকের পুরুষদের জ্যাভলিন থ্রো ইভেন্টের ফাইনালে ৮৭.৫৮ মিটার দূরত্ব বর্শা নিক্ষেপ সক্ষম হয়েছিলেন নীরজ চোপড়া। দেশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন ঐতিহাসিক সোনা। ওই ইভেন্টের যোগ্যতা অর্জন পর্বেও প্রথম হয়েছিলেন নীরজ। ওই রাউন্ডে ৮৬.৫৯ দূরত্বে বর্শা ছুঁড়েছিলেন ভারতের গর্ব। টোকিও গেমস থেকে রুপো জিতেছেন ভারোত্তোলক মীরাবাঈ চানু ও কুস্তিগীর রবিকুমার দাহিয়া। ব্রোঞ্জ জেতেন পিভি সিন্ধু, লাভলিনা বরগোহাঁই ও বজরং পুনিয়া। ৪১ বছর পর অলিম্পিক থেকে পদক (ব্রোঞ্জ) জিততে সক্ষম হয় ভারতের পুরুষ হকি দলও।