কোন বছরের অলিম্পিক আয়োজনের দিকে তাকিয়ে ভারত, জানালেন আইওসি প্রধান
২০৩৬ কিংবা ২০৪০ সালের অলিম্পিক আয়োজন করতে চায় ভারত, জানিয়ে দিলেন থমাস বাচ।
সদ্য শেষ হওয়া টোকিও অলিম্পিক যে ভারতীয় ক্রীড়াক্ষেত্রকে পুনরুজ্জীবিত করেছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষ করে জ্যাভলিন থ্রোয়ার নীরজ চোপড়াপ হাত ধরে অলিম্পিকের অ্যাথলেটিক্সে সোনা জেতাটাও ভারতের সামনে মানদণ্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখান থেকে উত্থান ছাড়া যে আর কোনও পথ খোলা নেই, তা মেনে নিচ্ছেন বিশ্বের ক্রীড়া বিশেষজ্ঞরা। সেই আবহে আত্মবিশ্বাসের কলস পূর্ণ করতে এবার অলিম্পিক আয়োজনের জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠেছে ভারত। এ সম্পর্কে বিশেষ খবর দিলেন ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটির প্রধান থমাস বাচ।
অলিম্পিক আয়োজন করতে চায় ভারত
২০২৪ ও ২০২৮ সালের অলিম্পিক কোথায় হবে, তা ঠিক হয়ে গিয়েছে। আগামী অলিম্পিয়াডের আসর বসবে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে। তার চার বছর পর আমেরিকার লস অ্যাঞ্জেলেসে বসবে অলিম্পিকের পরবর্তী সংস্করণ। গত মাসেই ২০৩২ সালের অলিম্পিকের আয়োজক নির্বাচিত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেন। ২০৩৬ সালের অলিম্পিককে পাখির চোখ করতে চাইছে ভারত। কোনও মতে সেবার গেমস আয়োজনের দায়িত্ব না পেলে ২০৪০ সালের অলিম্পিকও হাতে রাখতে চাইছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দেশ। ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটির প্রধান থমাস বাচের তরফে এ কথা জানানো হয়েছে। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন যে ২০৩২ সালের অলিম্পিক আয়োজনের জন্যও ইচ্ছাপ্রকাশ করেছিল ভারত।
দীর্ঘমেয়াদী হোস্টিং পরিকল্পনা
থমাস বাচ জানিয়েছেন, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার প্রস্তুতি হিসেবে ২০২৬ সালের যুব অলিম্পিকের আয়োজক হওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে ভারত। ২০৩০ সালের এশিয়ান গেমসের আয়োজক তকমাও পেতে উদগ্রীব হয়ে গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দেশ। বাচের কথায়, দীর্ঘমেয়াদী হোস্টিং স্ট্রাটেজির দিকে ঝুঁকতে চাইছে ভারত। দেশের ক্রীড়ার পরিকাঠামোগত ও অ্যাথলিটদের দক্ষতার মানোন্নয়নে এই উদ্যোগ প্রশংসনীয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরাও। উল্লেখ্য কয়েকদিন আগেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়েছিলেন ২০৪৮ সালের অলিম্পিক তাঁরা দেশের রাজধানীতে আয়োজন করতে আগ্রহী। যা প্রমাণ করে দেশে অলিম্পিকের আসর বসাতে কতটা মরিয়া ভারতীয় প্রশাসন।
টোকিও গেমসে ভারতের সফলতা
টোকিও গেমস শেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিক ছিল পারফরম্যান্সের নিরিখে ভারতের সেরা। ওই গেমস থেকে দুটি রুপো ও চারটি ব্রোঞ্জ সহ মোট ৬টি পদক জিতেছিল দেশ। শুরুটা করেছিলেন মীরাবাঈ চানু। পিভি সিন্ধু, লাভলিনা বরগোহাঁই, রবিকুমার দাহিয়ারা পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন। পদক জয়ের তালিকায় নাম লিখিয়েছে ভারতীয় হকি দলও। দেশের অলিম্পিক অভিযানের শেষ দিনে বজরং পুনিয়ার ব্রোঞ্জের পর নীরজ চোপড়ার সোনার হাত ধরে পদক জয়ের নিরিখে টোকিও গেমসে নতুন রেকর্ড গড়ল টিম ইন্ডিয়া। একটি সোনা, দুটি রুপো এবং চারটি ব্রোঞ্জ সহ চলতি অলিম্পিকে ভারতের সর্বমোট পদক সংখ্যা সাতে পৌঁছে গিয়েছে। খুব কাছে পৌঁছে ভারতীয় মহিলা হকি দল, গল্ফার অদিতি অশোক ও কুস্তিগীর দীপক পুনিয়ার পদক হাতছাড়া না হলে সংখ্যাটা দশে পৌঁছে যেতে পারত।
নীরজের কীর্তি
টোকিও অলিম্পিকের পুরুষদের জ্যাভলিন থ্রো ইভেন্টের ফাইনালে ৮৭.৫৮ মিটার দূরত্ব বর্শা নিক্ষেপ সক্ষম হয়েছিলেন নীরজ চোপড়া। দেশের হাতে তুলে দিয়েছিলেন ঐতিহাসিক সোনা। ওই ইভেন্টের যোগ্যতা অর্জন পর্বেও প্রথম হয়েছিলেন নীরজ। ওই রাউন্ডে ৮৬.৬৫ দূরত্বে বর্শা ছুঁড়েছিলেন ভারতের গর্ব। নীরজের গর্বে গর্বিত গোটা দেশ।