বিশ্ব কিকবক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা, তাও কোনও সরকারি সহায়তা নেই বিহারের মেয়ের
বিশ্ব কিকবক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা, তাও কোনও সরকারি সহায়তা নেই বিহারের মেয়ের
দেশের অ্যাথলিটরা অভাবনীয় সাফল্যের নিদর্শন রেখেছেন টোকিও অলিম্পিক ও প্যারা-অলিম্পিকে৷ দেশের প্রধানমন্ত্রীও বারবার খেলাধূলোয় প্রতিভাবানদের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলছেন৷ কিন্তু সেখানেই দেশের এক প্রতিভাবান কিকবক্সিং বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অভিযোগ জানাচ্ছেন বিহার সরকার কোনওভাবেই তাঁর পাশে দাঁড়য়নি। এরকমই অভিযোগ করলেন কাইরো থেকে কিকবক্সিংয়ে সোনা জিতে ফেরা বিহারের মেয়ে পল্লবী রাজ।
শুধু কাশ্মীরি মেয়ে তাজামুল ইসলাম নয়,বিশ্ব কিকবক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতেছেন ১৫ বছর বয়সী পল্লবী রাজ। একটি প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক বিজয়ীদের মধ্যে ছিলেন পল্লবী। যেখানে ১১টি সোনা সহ ২৬টি পদক জিতেছে ভারত। পল্লবী বিহারের সারান জেলার দিঘওয়ারার একটি ছোট জায়গা অম্বিকা ভবানীর অমি গ্রাম থেকে উঠে এসেছেন। তাঁর বাবা সাহারা ব্যাংকে একজন সাধারণ কর্মচারী। পল্লবীর নিজের ভাষায়, তাঁদের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভালো নয়।
যদিও আর্থিক অবস্থা পল্লবী বা তার পরিবারের বড় স্বপ্নের পথে বাধা হতে পারেনি। কিকবক্সিং চলাকালীন মিশরের কায়রো ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে পাঁচটি বাউটের জন্য লড়াই করেন পল্লবী৷ সবকটিই জিতেছিল সোনার পদক নিশ্চিত করেন ১৫ বছরের এই প্রতিভাবান মেয়ে৷ কায়রোতে তাঁর প্রথম লড়াই ছিল ফ্রান্সের বিপক্ষে, দ্বিতীয় এবং চতুর্থ মিশরের বিপক্ষে, তৃতীয় উগান্ডার বিপক্ষে এবং তার চূড়ান্ত প্রতিপক্ষ ছিল পোল্যান্ডের। পদক জয়ের পর দেশে ফিরে সংবাদমাধ্যমকে পল্লবী বলেন, আমার পরিবার শুরু থেকেই আমাকে সাপোর্ট করেছে, যে কারণে আমি বিশ্বস্তরে এরকম জায়গাতে পৌঁছতে পেরেছি। তাঁরা চান ভবিষ্যৎ-এ আমি অলিম্পিক স্বর্ণপদক জিতি৷
২০১৪ সালে অক্টোবর মাসে কিকবক্সিং খেলা শুরু করেন পল্লবী। মাত্র দুই মাস পরে, তিনি কুরুক্ষেত্রে (হরিয়ানা) নিজের প্রথম জুনিয়র জাতীয় কিকবক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করেন। প্রথমবারেই স্বর্ণপদক জিতেছিলেন পল্লবী। ১৫ বছর বয়সী বিহারের মেয়েটি বর্তমানে একজন ছয়বারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন এবং ২৯শে আগস্ট, ২০১৯-এ তাকে 'বিহার খেল সম্মান' দিয়েও সম্মানিত করা হয়েছিল। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের আগে, পল্লবী এবং দেশের অন্যান্য কিকবক্সারদের ১ অক্টোবর থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত নয়াদিল্লিতে একটি ক্যাম্প ছিল। ১৭ অক্টোবর তাঁদের দলটি জাতীয় রাজধানী ছেড়ে পরের দিন কায়রোতে পৌঁছেছিল। পল্লবীর প্রথম ম্যাচ ছিল ১৯ অক্টোবর।
মিশরে কিকবক্সিং বিশ্ব-চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক জেতার পর ২৭ অক্টোবর নয়াদিল্লিতে ফেরেন বিহারের মেয়ে৷ পরের দিন ট্রেনে দিঘোয়ারা যান। সংবাদমাধ্যমকে পল্লবী জানিয়েছেন, আমার সাফল্যে বাবা-মা খুব খুশি ছিলেন, আমার প্রতিবেশী এবং আমার অনুশীলনের জায়গার লোকজন স্টেশনে আমাকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের (বিহার) তরফে তখন বা তারপর কেউ আসেননি৷ তিনি আরও বলেন, আমি দেখেছি অন্যান্য রাজ্যের পদকপ্রাপ্তরা তাঁদের রাজ্য সরকারের কাছ থেকে সম্মানিত হচ্ছে, কিন্তু আমার সোনা জেতার পরও বিহার সরকার কিছুই করেনি। আমাদের সরকার জানেই না যে রাজ্যের একটি মেয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতেছে।