কমনওয়েলথ গেমসে অংশগ্রহণকারী ক্রীড়াবিদের সংখ্যার নিরিখে পিছিয়ে বাংলা, কোন রাজ্যগুলি অনেক এগিয়ে?
বাংলায় রাজ্য সরকার চালু করেছে খেলা হবে দিবস। ১৬ অগাস্ট সাড়ম্বরে তা পালন করা হচ্ছে। বেশ কিছু ক্রীড়াক্ষেত্রের আকাদেমিও রয়েছে। যদিও সেগুলি যে পেশাদারিত্বের সঙ্গে সিরিয়াসভাবে চালানো উচিত তা হচ্ছে না। তাই অনেক ঢাক পিটিয়েও সামগ্রিক নিরিখে পিছিয়েই থাকছে এগিয়ে বাংলা স্লোগান দেওয়া রাজ্য! কমনওয়েলথ গেমস তা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল।
পিছিয়ে বাংলা
অচিন্ত্য শিউলি হাওড়ার পাঁচলার বাসিন্দা। তিনি সোনা জিততেই অভিনন্দনের বন্যা। কিন্তু তাঁর দাদা তথা প্রাক্তন ভারোত্তোলক একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেছিলেন, রাজ্য সরকারের তরফে অচিন্ত্য কোনও সাহায্যই পাননি! কমনওয়েলথ গেমসে পদকজয়ীদের জন্য যখন আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করছে বিভিন্ন রাজ্য, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখনও তেমন ঘোষণা করেনি। বাংলায় পরিকাঠামোর যে তথৈবচ দশা, তা প্রমাণিত অচিন্ত্যদের ভিনরাজ্যে অনুশীলন করার মধ্যেই। সোনার ছেলের সোনালি সাফল্যেও বাংলায় ক্রীড়া পরিকাঠামো উন্নয়নে আদৌ জোর দেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় থাকছেই। অথচ এগিয়ে বাংলা স্লোগান দেওয়া রাজ্য তো দেখে শিখতেই পারে পড়শি ওডিশা থেকে।
পাঞ্জাব ও হরিয়ানা থেকে সর্বাধিক
বার্মিংহ্যাম কমনওয়েলথ গেমসে ভারতের ২১৫ জন ক্রীড়াবিদ দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। দেখা যাচ্ছে, হরিয়ানা থেকে সবচেয়ে বেশি ৩৪ জন ক্রীড়াবিদ বিভিন্ন ইভেন্টে নামছেন। পাঞ্জাবের ক্ষেত্রে সেই সংখ্য়া ২৬, তামিলনাড়ুর ১৬, মহারাষ্ট্র ও দিল্লি থেকে ১৪ জন করে, কেরলের ১৩ ও কর্নাটকের ১১ জন কমনওয়েলথ গেমসে অংশ নিয়েছেন। বাংলার ক্ষেত্রে সেই সংখ্যা মাত্র চার।
কোন রাজ্যের কত?
এবার দেখা যাক অন্য কোন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে কতজন এবারের কমনওয়েলথ গেমসে দেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। ঝাড়খণ্ডের ৮, তেলঙ্গানার সাত, উত্তর প্রদেশের ৬, অসম, গুজরাত ও ওডিশা থেকে পাঁচজন করে, উত্তরাখণ্ড, রাজস্থান ও বাংলা থেকে চারজন করে, মনিপুর ও চণ্ডীগড়ের ৩ জন করে, মিজোরাম, হিমাচল প্রদেশ, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ও মধ্যপ্রদেশ থেকে ২ জন করে এবং জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ১ জন কমনওয়েলথ গেমসে অংশ নিয়েছেন।
মণিপুরের দাপট
ফুটবলে যেমন বিভিন্ন দলে মণিপুরীদের দাপট, তেমন বিভিন্ন ক্রীড়াক্ষেত্রে মণিপুরের উন্নতি চোখে পড়ার মতো। যেমন তেলঙ্গানার জনসংখ্যার ১২ ভাগের এক ভাগ রয়েছে মণিপুরে। অথচ মণিপুর ও তেলঙ্গানা থেকে সাতজন করে কমনওয়েলথ গেমসে গিয়েছেন। পাঞ্জাব ও হরিয়ানা থেকে ক্রীড়াবিদদের সংখ্যা বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ পুরুষ ও মহিলা হকি দলের খেলোয়াড়দের সিংগভাগই এই দুই রাজ্যের। পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করলে দেখা যাচ্ছে, এবারের গেমসে অংশগ্রহণকারী মোট ভারতীয় ক্রীড়াবিদের প্রায় ৩০ শতাংশই পাঞ্জাব ও হরিয়ানার। যার মধ্যে হরিয়ানার ১৮.১ শতাংশ, পাঞ্জাবের ১২.১ শতাংশ। গেমসে প্রতিনিধি পাঠানোর নিরিখে শতাংশের নিরিখে তামিলনাড়ু রয়েছে তিনে (৭.৯ শতাংশ)। দিল্লি ৬.৫ শতাংশ, মহারাষ্ট্র ৬.৫ শতাংশ, কেরল ৬ শতাংশ, কর্নাটক ৫.১ শতাংশ, উত্তরপ্রদেশ ৫.৬ শতাংশ, ঝাড়খণ্ড ৩.৭ শতাংশ, অসম, মণিপুর ও তেলঙ্গানা ৩.৩ শতাংশ, গুজরাত ও ওডিশা ২.৩ শতাংশ। অন্ধ্রপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গ ১.৯ শতাংশে দাঁড়িয়ে।