Tokyo Paralympics: কাবুল থেকে টোকিওয় আফগান প্যারা-অ্যাথলিটরা, সঙ্গী রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা
তালিবানরা দখল করে দেশ। এই সময় আফগান প্যারা-অ্যাথলিট জাকিয়া খুদাদাদি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও-বার্তা দিয়ে আর্তি জানিয়েছিলেন উদ্ধার করার জন্য। যাতে টোকিও প্যারালিম্পিক গেমসে অংশ নিতে পারেন। এরপরই নাটকীয়ভাবে কাবুল থেকে উদ্ধার করা হয় তাইকোন্ডো খেলোয়াড় জাকিয়া খুদাদাদি ও ট্র্যাক অ্যাথলিট হোসেন রাসৌলিকে। যদিও মাঝের কয়েক দিন তাঁরা কোথায় তা নিয়ে শুরু হয়েছিল উৎকণ্ঠা। ইন্টারন্যাশনাল প্যারালিম্পিক কমিটির তরফে আশ্বস্ত করে বলা হয়, দুই আফগান প্যারা অ্যাথলিটকে উদ্ধার করা হয়েছে আফগানিস্তান থেকে। তাঁরা নিরাপদ জায়গাতেই রয়েছেন। যাবতীয় জল্পনার অবসান হয়েছে গতকাল।
কাবুল টু টোকিও
প্যারিস থেকে বিমানে টোকিও পৌঁছান জাকিয়া ও হোসেন। আইপিসি-র তরফে জানানো হয়, কাবুল থেকে এই দুই আফগান অ্যাথলিটকে উদ্ধার করে প্যারিসে নিয়ে রাখা হয়েছিল। সেখান থেকেই তাঁরা কাবুলে পৌঁছান। করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ রিপোর্ট আসার পর তাঁদের গেমস ভিলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, টোকিও প্যারালিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আফগানিস্তানের পতাকা সে দেশের কেউই বহন করতে পারেননি। তবু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিল আফগানিস্তানের পতাকা। ইন্টারন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটি এর মাধ্যমে আফগানিস্তানের পাশে থাকার বার্তাও দেয়। কিন্তু তারপরও অনিশ্চিত ছিল দুই আফগান অ্যাথলিটের অংশগ্রহণের বিষয়টি। আইপিসি জানিয়েছিল, উদ্ধারের পর ওই দুই অ্যাথলিটের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার প্রতি যত্ন নিয়ে তবেই খেলায় অংশগ্রহণের বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যদিও জাকিয়া ও হোসেনের মনের জোরকে কুর্নিশ জানাতেই হবে, যেভাবে অশান্ত দেশ থেকে এসেও তাঁরা টোকিওয় প্যারালিম্পিকে নামতে চলেছেন লক্ষ্যপূরণের জন্য।
|
অনিশ্চিত ছিল অংশগ্রহণ
ইন্টারন্যাশনাল প্যারালিম্পিক কমিটি জাকিয়া ও রসৌলির প্যারালিম্পিকে অংশগ্রহণকে আফগানিস্তান তথা বিশ্ববাসীর প্রতি তাঁদের আশা, শান্তি ও সংহতির বার্তা বহন হিসেবেই দেখছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এই দুই প্যারা-অ্যাথলিটের ১৭ অগাস্ট টোকিও পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু তালিবানরা আফগানিস্তান দখলের পর দেশ থেকে পালাতে চেয়ে কাতারে কাতারে মানুষ কাবুল বিমানবন্দরে জড়ো হন এবং যে পরিস্থিতি তৈরি হয় তাতে জাকিয়াদের পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। এরপর খুদাদাদির ভিডিও বার্তা আফগানিস্তান প্যারালিম্পিক কমিটির মাধ্যমে পৌঁছে যায় সংবাদসংস্থার কাছে। যে ভিডিও বার্তায় জাকিয়া খুদাদাদি বলেছিলেন, আমি সকলের তরফে অনুরোধ করছি, আফগানিস্তানের একজন মহিলা তথা আফগানিস্তানের মহিলাদের প্রতিনিধি হিসেবে সহযোগিতা করুন। আফগান অ্যাথলিটদের সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও তাঁদের পক্ষে ২৪ অগাস্ট থেকে শুরু হওয়া প্যারালিম্পিকে অংশগ্রহণ সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় ছিল আইপিসি কর্তাদের। কিন্তু এরপরই মেজর গ্লোবাল অপারেশনের মাধ্যমে এই দুই অ্যাথলিটকে কাবুল থেকে টোকিও নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে।
|
আবেগাপ্লুত সকলেই
২০০৪ সালে এথেন্স প্যারালিম্পিক গেমসের পর জাকিয়া খুদাদাদি হলেন প্রথম আফগান মহিলা অ্যাথলিট যিনি প্যারালিম্পিকে নামবেন। মহিলাদের তাইকোন্ডোয় তাঁর ইভেন্ট ২ সেপ্টেম্বর। পরের দিন ৪০০ মিটার দৌড়ের হিটে অংশ নেবেন হোসেন রাসৌলি। গেমস ভিলেজে এই দুজনকে স্বাগত জানানোর সময় আবেগঘন পরিস্থিতি তৈরি হয়। সকলের চোখেই ছিল জল। এত প্রতিকূলতা, ঝড়ঝাপটা সামলে টোকিওয় পৌঁছে স্বস্তিতে জাকিয়া ও রাসৌলি। তাঁদের স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন খোদ ইন্টারন্যাশনাল প্যারালিম্পিক কমিটির প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু পারসন্স। এটাও তো এক যুদ্ধজয়! অসম্ভবকে সম্ভব করে এবার শুধু এগিয়ে চলার পালা।