নন্দীগ্রাম বিধানসভা সিল করল কমিশন! বিশেষ দায়িত্বে 'বিতর্কিত' এসপি পদমর্যাদার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী
একুশের ভোটের দ্বিতীয় দফায় হটস্পট নন্দীগ্রামে ভোট। এই কেন্দ্রের দিকেই তাকিয়ে আছে বাংলা। একদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী।
একুশের ভোটের দ্বিতীয় দফায় হটস্পট নন্দীগ্রামে ভোট। এই কেন্দ্রের দিকেই তাকিয়ে আছে বাংলা। একদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী।
এই নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। হেভিওয়েটদের নিয়ে এসে শেষবেলার প্রচারে ঝড় তুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। অন্যদিকে নন্দীগ্রামের অলিতে গলিতে, পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে ভোট চেয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে হাইভোল্টেজ নন্দীগ্রাম নিয়ে বিশেষ তৎপরতা নন্দীগ্রামে।
গোটা নন্দীগ্রামেই জারি হল ১৪৪ ধারা
নন্দীগ্রাম সহ ৩০টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট হলেও কমিশনের নজরে যে নন্দীগ্রাম তা স্পষ্ট। যে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বুধবার সকাল থেকেই আকাশে উড়েছে নির্বাচন কমিশনের হেলিকপ্টার। আকাশপথ থেকেই চলেছে নজরদারি। সন্ধ্যার পর গোটা নন্দীগ্রামেই জারি করা হল ১৪৪ ধারা। যা আগামী ২ তারিখ পর্যন্ত বলবত থাকবে বলে জানানো হয়েছে। ১৪৪ ধারা জারির পরে বিভিন্ন জায়গায় কমিশনের তরফে মাইকিং করা হয়। যাতে কেউ একসঙ্গে পাঁচজনের বেশি জড়ো না হয়। এছাড়াও নন্দীগ্রামে ঢোকার মুখে নাকা চেকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেক গাড়ি, ব্যাক্তিকে পরীক্ষা করা হচ্ছে। করা হচ্ছে চেকিংয়ের ভিডিগ্রাফিও। একেবারে কড়া হাতে মোকাবিলা করা হচ্ছে।
বিশেষ দায়িত্বে এসপি পদমর্যাদার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠীকে
হাইভোল্টেজ লড়াই। কোনও জায়গা ছাড়তে নারাজ নির্বাচন কমিশন। দফায় দফায় জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক নির্বাচন কমিশনের। ভোটের আগে নন্দীগ্রামে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হল এসপি পদমর্যাদার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠীকে। হলদিয়ার দায়িত্ব পেলেন প্রবীণ ত্রিপাঠি। তাঁরা এডিজি ওয়েস্ট জোন রাজেশ কুমারকে সাহায্য করবেন। প্রথম দফায় এমন কোনও আইপিএস অফিসারকে রাখা হয়নি। কার্যত উল্লেখযোগ্যভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল কমিশনের তরফে।
এই প্রবীণ ত্রিপাঠীকে ঘিরে বিতর্ক
এই প্রসঙ্গে বলা প্রয়োজন যে, ডায়মন্ডহারবারে যাওয়ার সময় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনায় এই প্রবীণ ত্রিপাঠীকেই সরিয়ে দেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কিন্তু সেই সময় রাজ্য সেই নির্দেশ মানেনি। যা নিয়ে চরমে ওঠে কেন্দ্র এবং রাজ্য সংঘাত। কিন্তু বাংলার ভোটে সেই তাঁকেই ফের কমিশন ভোটের দায়িত্ব দিল। শুধু তাই নয়, শান্তিপূর্ণ এবং অবাধ ভোট করানোর ক্ষেত্রে রাজ্যের আইপিএসের ওপরেই ভরসা রাখল নির্বাচন কমিশন।
বিধানসভাকে সিল করল কমিশন
ভোটের দিন অশান্তি করতে বিভিন্ন এলাকায় বহিরাগতদের জড়ো করেছে বিজেপি। কোন কোন বাড়িতে বহিরাগতদের রাখা হয়েছে এই প্রমাণ্য পত্রও কমিশনকে ইতিমধ্যে জমা দিয়েছে তৃণমূল। এই বিষয়ে সতর্ক নির্বাচন কমিশন। কমিশন সূত্রের খবর, সমস্ত হোটেল, লজগুলিতে বাড়তি নজরদারি রাখতে বলা হয়েছে স্থানীয় থানাগুলিকে। এছাড়াও নন্দীগ্রামে অশান্তি এড়াতে ও বহিরাগত প্রবেশ রুখতে বিধানসভাকে কেন্দ্র করে সীমানা সিল করে দিল কমিশন। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ফেরি ঘাটও। কার্যত নন্দীগ্রামকে একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নন্দীগ্রামের সব বুথ স্পর্শকাতর
নন্দীগ্রামের সব বুথকেই স্পর্শকারত হিসেবে ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। শুধুমাত্র নন্দীগ্রামেই ২০০০-র বেশি আধাসেনা মোতায়েন করা হচ্ছে। প্রতিবুধে ৮ জন করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে বলে জানানো হয়েছে কমিশনের তরফে। ভোটের আগের দিন থেকেই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা এলাকা। এছাড়াও সমস্ত বুথেই থাকবে মাইক্রো অবজার্ভার। ৭৫ শতাংশ বুথে ওয়েব কাস্টের মাধ্যমে নজরদারি চালানো হবে। নন্দীগ্রামে ১ জন করে সাধারণ পর্যবেক্ষক, পুলিশ পর্যবেক্ষক ও ব্যয় পর্যবেক্ষক নিযুক্ত করা হয়েছে।