'ভবানীপুর বড় বোন,নন্দীগ্রাম মেজবোন', অধিকারীগড়ে মাস্টারস্ট্রোক দিয়ে দু' জায়গা থেকে লড়ার ইঙ্গিত মমতার
কেউ আশাই করেননি তিনি ১৮ জানুয়ারি অধিকারীগডৃ় নন্দীগ্রামের মাটি থেকে এত বড় বোমা ফাটাবেন! এখানেই কার্যত বিরোধীদের সমালোচনা সত্ত্বেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান দিয়ে দিলেন রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজিতে লড়াইয়ের ময়দানে তাঁর নিপুণ দখল কতটা! এদিন নন্দীগ্রামের সভা থেকে মমতা কার্যত ইঙ্গিত দিয়ে রাখলেন ২০২১ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটে তাঁর রণনীতির।


নন্দীগ্রাম, ভবানীপুর থেকে লড়াই মমতার
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সাফ ঘোষণা করেন, তিনি নন্দীগ্রামের পাশাপাশি, ভবানীপুর থেকেও লড়াই করতে পারেন। অধিকারীগড়ের মাটিতে দাঁড়িয়ে তাঁর বার্তা,' নন্দীগ্রাম থেকে আমি দাঁড়াব। .. আমার বিবেক আমাকে জাগ্রত করে বলল, ওরে নন্দীগ্রাম থেকে ঘোষণাটা কর। এটাই তোদের লাকি জায়গা। ' এখানেই শেষ নয়, মমতা স্পষ্ট করে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন, তাঁর পূর্বতন কেন্দ্র ভবানীপুর থেকেও তিনি লড়তে পারেন। ফলে, অই বক্তব্যের হাত ধরে বাংলার ভোটের টি ২০তে কার্যত রুদ্ধশ্বাস স্লগ ওভার শুরু করে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো!

'ভবানীপুর বড়বোন, নন্দীগ্রাম মেজবোন'
মমতা এদিন বলেন, 'ভবনীপুরকে আমি নেগলেক্ট করব না। নন্দীগ্রাম আমার লড়াইয়ের জায়গা। নন্দীগ্রাম বড় বোন, ভবানীপুর মেজ বোন।' ফলে তিনি স্পষ্ট করে জানিয়ে রাখলেন যে ভবানীপুরে তাঁর দখলের জমি যেমন তিনি ধরে রেখে এই লড়াইয়ে নামবেন, তেমনই তিনি নতুন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে আদর্শ ক্যাপ্টেনের মতোই 'লিডিং ফ্রম দ্যা ফ্রন্ট' মেজাজে চালিয়ে ব্যাটিং করতে প্রস্তুত। তাই কলকাতায় আসন ভবানীপুর ও কলকাতা থেকে ১২৮ কিলোমিটার দূরের নন্দীগ্রামের আসন দুটিতেই স্বয়ং জননেত্রী তৃণমূলের তরফে নামতে চলেছেন বিজেপিতে চ্যালেঞ্জে রেখে।

টার্গেট শুভেন্দু! নন্দীগ্রাম ফ্যাক্টর ও মমতা
প্রসঙ্গত, নন্দীগ্রামের মমতার এই নিজস্ব প্রার্থী পদ ঘোষণা মূলত, শুভেন্দুকে সরাসারি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার সামিল।যে ধাক্কা শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দিয়ে মমতা শিবিরকে দিয়েছে, তা ফিরয়ে দিতে মরিয়া ঘাসফুল ক্যাম্প। আর সেই জায়গা থেকেই কার্যত এদিন অধিকারীদের টার্গেটে রেখে মমতা নিজের প্রার্থী পদের ঘোষণা করে দিয়েছেন। এদিকে, নন্দীগ্রামের বুকে তৃণমূল সুপ্রিমোর আন্দোলনের লড়াইয়ের ইতিহাস যেমন একটা আবেগের জায়গা করেছে , তেমনই এখানের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কও বেশ প্রাসঙ্গিক মমতা শিবিরের কাছে। প্রসঙ্গত ২০১৯ সালে মমতার ভোটঝাঁপিতে সংখ্যা লঘু ভোটব্যাঙ্কের ফুলেফেঁপে ওঠার ঘটনা তৃণমূলে মাইলেজ দিয়েছে। সেই জায়গা থেকে নন্দ্রীগ্রাম মমতার কাছে একটি পোক্ত পিচ হয়ে উঠতে পারার সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে, শুভেন্দু বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় নন্দীগ্রাম আন্দোলনে ফিরোজা বিবিদের মতো অনেকেই শুভেন্দু বিরোধিতা শুরু করেছেন। সেই আবেগকে কাজে লাগাতেও মরিয়া তৃণমূল।

ভবানীপুর ফ্যাক্টর ও মমতা
এদিকে, ভবানীপুর মমতার নিজের কেন্দ্র। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকেই দক্ষিণ কলকাতার একটা বড় অংশ মমতাপন্থী। সেখানে তৃণমূলের রমরমাও জোরদার। তবে ২০১৯ লোকসভা ভোটের পর ভবানীপুরের মতো দক্ষিণ কলকাতার কেন্দ্রে হিন্দিভাষী ভোটব্যাঙ্ক খানিকটা তৃণমূলকে উদ্বেগে রেখেছে। সেই জায়গা থেকে দলনেত্রীর নন্দীগ্রাম আসন প্রাসঙ্গিক হতে পারে। আর এমনই রাজমৈতিক ধাঁধার মাঝে মমতার এদিনের ঘোষণা বাংলার আসন্ন রাজনীতিতে মাস্টারস্ট্রোক বলে মনে করছেন অনকেই।
২১-এর নির্বাচনে নন্দীগ্রাম থেকেই প্রার্থী! তৃণমূলের সভা থেকে ঘোষণা মমতার