নন্দীগ্রাম শুভেন্দুকে প্রত্যাখ্যান করেছে, নতুন দায়িত্বে গিয়েই বোমা ফাটালেন কুণাল
পূর্ব মেদিনীপুর নিয়ে আমি নতুন দায়িত্ব হিসাবে দেখছি না। আমাকে সর্বোচ্চ নেতৃত্ব নির্দেশ দিয়েছেন। হলদিয়াকে কেন্দ্র করে দেখতে বলেছেন। আমি সৈনিক হিসাবে দেখব। আমি সাধ্যমতো সাহায্য করব। আমাকে সময় দিতে হবে।
নন্দীগ্রাম শুভেন্দুকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ শুভেন্দু-গড়ে নতুন দায়িত্ব নিয়েই ঝাঁঝালো আক্রমণ করবলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে। মঙ্গলবার তিন নন্দীগ্রামের বিদ্রোহী বিজেপি নেতাদের সঙ্গে চা চক্রে অংশ নেওয়ার পর বলেন, নন্দীগ্রাম বিশ্বাসঘাতকদের মানবে না। তাই শুভেন্দু অধিকারীকে তারা প্রত্যাখ্যান করেছে।
কুণাল ঘোষ বলেন, সব জায়গায় আমাদের কর্মীরা উজ্জীবিত। তাঁরা উৎসাহ নিয়ে দেওয়াল লিখছেন৷ স্বতঃস্ফূর্তভাবে হয়ে কাজ করছেন। তাঁরা বুঝে গিয়েছে, দুয়ারে সরকার হল তৃণমূলের। আর দুয়ারে বেইমান হল শুভেন্দু। শুভেন্দুকে নিশানা করে কুণাল হুঙ্কার ছাড়েন, উনি আগে ট্যুইট করে জানান, ওনার পরিবার কী কী সুবিধা পেয়েছেন।
এদিনই কুণাল ঘোষকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শুভেন্দু অধিকারীর মোকাবিলায় কুণাল ঘোষকে পূর্ব মেদিনীপুরে পাঠিয়েছে তৃণমূল। তাঁর দায়িত্ব সমন্বয়সাধন। তৃণমূলের মুখপাত্র বলেন, পূর্ব মেদিনীপুরকে আমি নতুন দায়িত্ব হিসাবে দেখছি না। আমাকে সর্বোচ্চ নেতৃত্ব নির্দেশ দিয়েছেন। হলদিয়াকে কেন্দ্র করে দেখতে বলেছেন। আমি সৈনিক হিসাবে দেখব। আমি সাধ্যমতো সাহায্য করব। তৃণমূল প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এই জেলায় দারুন কাজ করেছে, করছেও। আমাকে এই জেলায় পাঠানো হয়েছে সহযোগী করে। আমি সহযোগীর ভূমিকা পালন করব।
তিনি বলেন, শুভেন্দু অধিকারী হলেন একজন বিশ্বাসঘাতকতার প্রতীক। সিম্বল অফ গদ্দার। তাঁর গদ্দারির জন্যই তৃণমূলে খানিক জটিলতা তৈরি হয়েছিল। তাঁকে বিশ্বাস করে নন্দীগ্রাম-সহ পূর্ব মেদিনীপুর ছেড়ে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্ত তিনি সেই বিশ্বাসের মর্যাদারক্ষা করেননি। তাই তৃণমূল নেতৃত্বের মধ্যে একটু সমন্বয়ের অভাব ছিল। সেই সমন্বয় রক্ষা করতেই আমাকে পাঠানো হয়েছে।
কুণাল ঘোষ বলেন, আমি কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে আসিনি। ও আমার এলাকায় ফ্ল্যাট নিয়ে থাকলে, আমার এখানে থাকলে কী দোষ? জানি তো কোন ওষুধে ওর গা চিড়বিড় করে। আমি এখানে আসলে ওর গায়ে জ্বালা ধরে কেন? তিনি বলেন, আমরা সবাই মিলে টক্কর দিচ্ছি। তৃণমূল কংগ্রেস এখন জনসমুদ্রের নাম। আর মানুষ সই তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা মানবে না। নন্দীগ্রামে কারচুপি করে জিতেছেন শুভেন্দু। মামলা এদিক ওদিক করতে চাইছেন। নন্দীগ্রামে মানুষ এখন ওনার বিপক্ষে চলে গিয়েছেন।
কুণাল ঘোষ আরও বলেন, শুভেন্দুর মতো ডাকাতদের জিন্দাবাদ ঘোষণা করতে হয়। কয়েক মিনিটে দেখুন কী কী ঘোষণা আসে। আপনাদের যা যা অভিযোগ তা অধিকারী প্রাইভেট লিমিটেড বিরুদ্ধে৷ আদি বিজেপি বিদ্রোহ করছে। আর নন্দীগ্রামও শুভেন্দুকে প্রত্যাখ্যান করেছে। শুভেন্দুরে নিশানায় তিনি বলেন, কেন্দ্রের টাকা আবার কী? ওটা রাজ্য থেকে রেভিনিউ কালেকশন করা। বাংলাকে টাকা না দিলে, বাংলার মানুষকে করমুক্ত ঘোষণা করো। ওটা শুভেন্দুর পৈতৃক সম্পত্তি নয়৷ আমি সাধু-চলিত দুটো ভাষা জানি৷ ও যে ভাষা প্রয়োগ করে, সেই ভাষাতেও আমি উত্তর দিতে জানি। শুভেন্দু তো ওর বাবাকে হিংসা করে৷ ও বাবার শপথ বয়কট করেছিল। ওর কোনও তালজ্ঞান আছে নাকি?
শুভেন্দু অধিকারীকে এদিন মানসিক বিকারগস্ত ও দেউলিয়া বলে ব্যাখ্যা করেন কুণাল। তিনি বলেন, এই শুভেন্দু বলত সিএএ, এনআরসি হতে দেব না। কীসের সিএএ? বলত, মোদী হটাও দেশ বাঁচাও। এখন ইডি-সিবিআইয়ের হাত থেকে বাঁচতে বিজেপির জুতো পালিশ করছে। সেই বিজেপি আবার সেতু বিপর্যয় থেকে নজর ঘোরাতে গুজরাতে সিএএ চালু করছে ঘুরপথে। এরা বিভ্রান্ত করছেন। এরা নজর ঘোরাতে চাইছেন।
শুভেন্দুকে নিশানায় তিনি আরও বলেন, নির্লজ্জ বেহায়া শুভেন্দু অধিকারী। যদি রাজ্য পুলিশ দিয়ে ভোট না হয়, তাহলে গোটা দেশ করতে হবে। বাংলায় এক আর ত্রিপুরায় আর এক নিয়ম, এটা হয় না। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে গো-হারা হেরেছেন। আগে উনি সায়ন্তনের চিঠি পড়ুন, তারপর ওসব বলবেন। এরপরই তিনি বলেন, আগে ঘর সামলা পরে ভাববি বাংলা। কুণালের কথায়, ওর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই৷ ভবঘুরে আবাসে ওর জন্য বেড রাখা থাকবে। দিশাহীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সব ভোটে হারছে। কাঁথিতে হেরেছে নিজের বুথে। আবার সে যাচ্ছে জ্ঞান দিতে। ও একটা ঘন্টার নেতা।