শুভেন্দুর খাসতালুকে অভিষেকের সভায় 'খেলা হবে' স্লোগান, কোমর দোলালেন কর্মীরা
একদিকে বাংলায় জে পি নাড্ডা অন্যদিকে শুভেন্দু গড়ে অভিষেক! বাংলার দুই প্রান্তে দুটি হাইভোল্টেজ সভা ঘিরে জমজমাট শনিবাসরীয় দুপুর। তবে একেবারে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ি থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে সভা করতে চলেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সভা ঘিরে তৃণমূল কর্মীদের উন্মাদনা তুঙ্গে। অভিষেককে কাঁথিতে স্বাগত জানাতে রাস্তার প্রতিটি মোড়ে তৃণমূল কর্মীদেরও উচ্ছ্বাস চোখে পড়ার মতো। কোথাও শাখ বাজিয়ে অভিষেককে স্বাগত জানাচ্ছেন মহিলারা তো কোথাও আবার ঢাকের তালে বাজছে। দীর্ঘ কয়েকবছর পর কাঁথিতে সভা করছেন অভিষেক। তাও আবার শুভেন্দুকে দলবদলের পরে। এই সভা থেকে কি বার্তা অভিষেক দেন সেদিকেই নজর গোটা বাংলার।
'খেলা হবে' স্লোগান অভিষেকের সভার আগে
ভোটের আগে খেলা হবে স্লোগান ঘিরে ইতিমধ্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কখনও অনুব্রত মন্ডল বলছেন খেলা হবে তো আবার কখনও রাজ্যের মন্ত্রীদের সভায় বাজছে খেলা হবে গান। 'খেলা হবে' স্লোগানের পালটা ইতিমধ্যে বিজেপি নয়া স্লোগান তৈরি করেছে। তবে এতটা জনপ্রিয় নয়। তবে খেলা হবে স্লোগানে বিজেপি নেতৃত্ব বলছেন, এবার তৃণমূল নয়, খেলা খেলবে বিজেপি। আর সাইডে বসে দেখবে তৃণমূল নেতারা। তবে বিতর্কের মধ্যেই এবার খেলা হবে স্লোগান অভিষেকের সভায়। দুপুরে সভায় বক্তব্য রাখবে অভিষেক। আর তাঁর আগে সভাস্থলে শোনা যায় খেলা হবে স্লোগান। শুধু তাই বাজছে খেলা হবে গানও। আর সেই গানের তালে নাচতে দেখা যাচ্ছে স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীদের। কোমর দোলাচ্ছেন মহিলা তৃণমূল কর্মীরাও।
এটাই সংস্কৃতি! বলছে বিজেপি
ডায়মন্ডহারবারের সাংসদের বক্তব্য রাখার আগে খেলা হবে স্লোগান-গান। সভাস্থলে গানের সঙ্গে উন্মাদনা তৃণমূল কর্মীদের। মঞ্চ থেকে নজর রাখছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এই স্লোগান ঘিরে ইতিমধ্যে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, খেলা হবে খেলা হবে বলে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করা হচ্ছে। এই সব করে লাভ কিছু হবে। মানুষ বুঝে গিয়েছে পরিবর্তন দরকার। আর সেই পরিবর্তন এবার ঘটতে চলেছে বলে দাবি স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের। আর ডিজে বাজিয়ে এভাবে তারস্বরে গান বাজানো, লাফালাফি তৃণমূলের সংস্কৃতির মধ্যেই পড়ে বলে দাবি স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের। যদিও এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। তাঁদের দাবি, মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁদের সঙ্গে রয়েছে। প্রায় লক্ষাধিক জমায়েত হবে বলে দাবি তৃণমূলের।
সভার দিকে নজর রাজ্যনৈতিকমহলের
হাইভোল্টেজ সভা। একবারে শুভেন্দুর খাসতালুকে অভিষেকের এই সভা। দলবদলের পর থেকেই শুভেন্দু এবং অভিষেক দুজনেই, একে অপরের সঙ্গে বাকযুদ্ধে জড়িয়েছেন৷ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অবশ্য দুই নেতা পরস্পরের নাম না নিয়েই আক্রমণ করেছেন৷ অমিত শাহের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েই তোলাবাজ ভাইপো বলে অভিষেককে আক্রমণ শানিয়েছেন শুভেন্দু। পালটা, বিশ্বাসঘাতক, মির্জাফর বলে আক্রমণ করেছেন অভিষেক। শুধু তাই নয়, কয়লা কেলেঙ্কারি, গরু পাচার নিয়ে অভিষেককে আক্রমণ শানিয়েছেন শুভেন্দু। অভিষেকের স্ত্রীয়ের অ্যাকাউন্টেও বেআইনি টাকা ঢুকেছে বলে অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু। একে অপরকে ইতিমধ্যে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছেন। কেউ কাউকে একচুলও জায়গা ছাড়তে নারাজ। এই অবস্থায় একেবারে শুভেন্দুর গড়ে অভিষেকে সভা। যা অন্যমাত্রা পেয়েছে৷
রাজনৈতিকমহলের মতে, একেবারে শুভেন্দুর খাসতালুকে দাঁড়িয়ে অধিকারী পরিবারকে একহাত নিতে পারেন অভিষেক। উল্লেখ্য, এর আগে ভাইরাস বলে আক্রমণ করেছিলেন। আজ ঝাঁঝ আরও বাড়াতে পারেন অভিষেক, এমনটাই মনে করা হচ্ছে। তবে এবারও শিশির অধিকারী কিংবা দিব্যেন্দু অধিকারী সভায় থাকছেন না বলেই খবর। যদিও শিশির অধিকারীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বলে দাবি তৃণমূলের।