বিজেপির সঙ্গে জোট নৈব নৈব চ! ১০ নেতাকে বহিষ্কার করে ‘শিক্ষা’ দিল সিপিএম
বিজেপির সঙ্গে জোট নৈব নৈব চ! ১০ নেতাকে বহিষ্কার করে ‘শিক্ষা’ দিল সিপিএম
তৃণমূলকে হারাতে বিজেপি-সিপিএম জোট করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একাধিক সমবায় সমিতিতে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। নন্দকুমার সমবায় সমিতিতে নির্বাচনে জয়ের পর থেকেই বাম-বিজেপি জোট তত্ত্ব নিয়ে চর্চাও শুরু হয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে। নন্দকুমার মডেলের প্রয়োগের বাড়বাড়ন্ত শুরু হতেই শক্ত হাতে রাশ ধরল সিপিএম।
নন্দকুমার মডেল অনুসরণ করে বিজেপি ও সিপিএম এক ছাতার তলার আশার চেষ্টা করছিল সম্প্রতি। কিন্তু রামের সঙ্গে বামের জোটকে কোনওভাবেই মানতে পারছে না জেলা সিপিএম। তাই যাঁরা এই জোটের সঙ্গে যুক্ত তাঁদেরকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সিপিএম কমিটি। সম্প্রতি গঠরা সমবায় সমিতির নির্বাচনের বিজেপির সঙ্গে জোট করার ফলে সিপিএম নেতাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
আগামী ৪ ডিসেম্বর তমলুক খারুই গঠরা সমবায় সমিতি নির্বাচন। আর এই নির্বাচনে সিপিএম এবং বিজেপি জোট বেঁধে নির্বাচন এবং মনোনয়নপত্র জমা দেয়। সমবায় বাঁচাও মঞ্চ গড়ে সিপিএম ও বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হয়েছিল। তবে জেলা সিপিএমের তরফ থেকে জানানো হয় এই জোটের কোনও সিদ্ধান্ত জেলা নেতৃত্বকে জানানো হয়নি।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সিপিএম সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, আমরা কোনওদিন তৃণমূল বা বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচন লড়ব না। যাঁরা তৃণমূল বা বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচন লড়বে, তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। আমরা জানতে পেরেছি যে, খারুই গঠরা সমবায় সমিতির নির্বাচনে সিপিএমের সঙ্গে বিজেপি জোট বেঁধে নির্বাচন করছে।
এরপরই পার্টির অবস্থান জানিয়ে কমিটির সদস্যদের দলের নির্দেশ মেনে চলার বার্তা দেওয়া হয়। সিপিএম এরিয়া কমিটির সুরেন্দ্রনাথ আচার্য, রঘুনাথ ভৌমিক, দীনেশ মণ্ডল-সহ সিপিএম সমর্থিত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা বলা হয়। জেলা নেতৃত্বের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, তাঁরা যদি প্রার্থীপদ প্রত্যাহার না করেন, তাহলে দল তাঁদের বহিষ্কার করবে।
জেলা নেতৃত্ব এই মোতাবেক একটি কমিশন তৈরি করে। সেই কমিশনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়, সমবায় সমিতি নির্বাচনে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে যাঁরা বিজেপির সঙ্গে আঁতাত গড়ায় যুক্ত তাঁদের চিহ্নিত করে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার। সোমবার দুপুরে দুটো পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার সময় ছিল। সূত্রের খবর, দলের সিদ্ধান্তকে অমান্য করে খারুই গঠরা সমবায় সমিতি নির্বাচনের সিপিএমের কোনও প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করা হয়নি। এরপরউ সিপিএম জেলা কমিটি বৈঠকে বসে সিদ্ধান্ত নেয়, সিপিএম এরিয়া কমিটির সদস্য-সহ প্রার্থীদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।
যদিও বিজেপি জেলা নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছে, সিপিএমের সঙ্গে বিজেপির কোনও আসন সমঝোতা হয়নি। আমরা কয়েকটি আসনে প্রার্থী দিয়েছি, বাকি আসনে কী হয়েছে, তা আমরা জানি না। আর এটা দেখার বিষয়ও আমাদের নয়। সব মিলিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর জেলায় সমবায় ভোট ঘিরে ক্রমশ রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে নন্দকুমার মডেল প্রয়োগের দাবি উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। নীচুতলায় তলে তলে জোট করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কোমর বাঁধছে বিজেপি ও সিপিএম। ইতিমধ্যে বিজেপির তরফে সিপিএমকে নানাভাবে আহ্বান জানানো হয়েছে। কিন্তু সিপিএম নেতৃত্ব এই অশুভ আঁতাতের বিরোধিতা করে। এবার কড়া ব্যবস্থা নিতেও দুবার ভাবল না সিপিএম।
দুয়ারে রেশন চলবে রাজ্যে! হাইকোর্টের রায় স্থগিতাদেশে মিলল সুপ্রিম স্বস্তি