
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফা দিতে বললেন অভিষেক! কেন এমন নির্দেশ পঞ্চায়েত ভোটের মুখে
শুভেন্দুর বাড়ির দরজা থেকে ২০০ মিটার দূরে সভা করছেন অভিষেক। আর সেই সভা থেকে একের পর এক বোমা বর্ষণ করে গেলেন তিনি। শুভেন্দুকে তো নিশানা করলেনই। এমনকী নিজের দলের নেতা-নেত্রীদেরও ছাড়লেন না। আসছে পঞ্চায়েত ভোট। তাঁর আগে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফা দেওয়ার নিদান দিলেন অভিষেক।

কাঁথিতে শনিবার সভা শুরুর আগে হঠাৎ একটি গ্রামে প্রবেশ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গাড়ি থেকে নেমে সটান হেঁটে তিনি ঢোকেন গ্রামে। গ্রামবাসীদের কাছ একাধিক অভাব-অভিযোগের কথা শোনেন তিনি। সেখান থেকেই তিনি কড়া নির্দেশ দেন দলকে। কাঁথির মারিশদা গ্রামে গিয়ে তিনি ঘোরেন অন্তত ৮-১০টি বাড়িতে।
গ্রামবাসীদের মুখে সমস্ত বৃত্তান্ত শুনেই তিনি পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান ও অঞ্চল সভাপতির উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন। মানুষের কথা শুনে বলেন, ওই অঞ্চলের পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান ও অঞ্চল সভাপতিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফা দিতে হবে। তারপর সভা মঞ্চেও তিনি সরব হন বিষয়টি নিয়ে। একেবারে নাম করে তিনি প্রধান, উপপ্রধান ও অঞ্চল সভাপতিকে উদ্দেশ্য করে ইস্তফার বার্তা দেন।
অভিষেক এদিন বলেন, আজ গ্রামে গেলাম। মারিশদার গ্রামে বেশ কিছু এসটি পরিবারের বাস। তাঁদের দুর্দশা দেখে অভিষেক বিস্ময় প্রকাশ করেন। ওঁরা বললেন প্রধান-উপপ্রধানকে বলে কোনও লাভ হয়নি। বাড়ি নেই, পানীয় জল নেই। কী করুণ অবস্থা দেখে এলাম। তাঁরা কেউ টাকা পয়সা চাইছেন না। আমি বললাম, যাঁরা কনভয় হাঁকিয়ে ঘুরে বেড়ান, তাঁদের কাছে কেন যাননি? তাঁরা বলেন, গিয়েও লাভ হয়নি, কেউ কথা শুনতে চাননি।

একথা বলার পরেই অভিষেক বলেন, মারিশদা অঞ্চলের প্রধান ঝুনুরানি মণ্ডল, উপপ্রধান রমাকৃষ্ম মণ্ডল, অঞ্চল সভাপতি গৌতম মিশ্ররাও দায়ী। তাঁদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফা দিতে হবে। না হলে আইনি ব্যবস্থা হবে। মানুষের জন্য কাজ না করতে পারলে, রাজনীতি করে লাভ নেই। অভিষেকের কথায় চুপ হয়ে যায় গোটা মঞ্চ।
অভিষেক এরপর বলেন, যা বলছি বুঝতে পারছেন, ওঁদের ইস্তফা দিতে বলবেন দুদিনের মধ্যে। এরপর তিনি পরামর্শ দেন সবাইকে জনসংযোগ করতে হবে। বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হয়ে যদি গ্রামে গ্রামে যেত পারেন, বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তাঁদের পাশে দাঁড়াতে পারেন, তাহলে আমরা কে এমন হনু যে, আমরা পারব না।
এরপর তিনি বলেন, তৃণমূল করতে গেলে মানুষের পাশে থাকতে হবে, মানুষের কাজ করতে হবে। তাই কাল থেকেই প্রত্যেকে ১০টা করে গ্রামে যান। ৫০ জন নেতা আছেন অন্তত, তাঁরা ৫০০ গ্রামে যান। মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ গড়ে তুলুন, যাঁরা অসহায় অবস্থায় আছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়ান।