পঞ্চায়েতে দু-একটায় হারলেও যায় আসে না, শুভেন্দুর জেলায় কী স্ট্র্যাটেজি অভিষেকের
আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের জন্য জেলায় জেলায় জল মাপছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তিনি শুভেন্দু অধিকারীর জেলার তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠক করলেন।
আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটের জন্য জেলায় জেলায় জল মাপছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার তিনি শুভেন্দু অধিকারীর জেলার তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠক করলেন। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি ও তমলুক সাংগঠনিক জেলার নেতৃত্বকে তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন কী করণীয় আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে।
শুভেন্দুর জেলায় বাড়তি সংযোজন একটাই
প্রতিটি জেলার সাংগঠনিক বৈঠকেই অভিষেক যে সার কথা বলছেন, সেটা হল- ২০১৮-র পুনরাবৃত্তি চাই না। কোনওভাবেই পঞ্চায়েত ভোটে পেশিশক্তি প্রয়োগ নয়, সংগঠনের জোরে জিততে হবে। বুথ সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে, তার জন্য বাড়াতে হবে জনসংযোগ। শুভেন্দুর জেলার ক্ষেত্রে শুধু বাড়তি সংযোজন করলেন একটাই।
দু-চারটে হারলেও কিছু যায় আসে না!
মঙ্গলবার অভিষেক জেলা নেতৃত্বকে বার্তা দেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে দু-চারটে হারলেও কিছু যায় আসে না। কিন্তু কোনওভাবেই জোর খাটানো যাবে না। মানুষের প্রতি আস্থা রাখতে হবে। তার জন্য যদি কোথাও হারতে হয় তো হারব, কিন্তু মানুষের অধিকারে আমরা বাধা হয়ে দাঁড়াব না। এটা সবার আগে নিশ্চিত করতে হবে।
মানুষের ভোটেই জিতবেন, পেশি শক্তিতে না
অভিষেক তাঁর এই বার্তার মধ্য গিয়ে বুঝিয়ে দেন, শুভেন্দু অধিকারীর গড়ে তিনি জেতার ব্যাপারে আশাবাদী। তিনি মনে করেন, মানুষের ভোটে তারা জিতবেন। তাহলে অযথা কেন পেশি শক্তির প্রয়োগ করা হবে। বেশিরভাগ আসনেই তৃণমূল জয়ী হবে। বড়ো জোর দু-চারটে আসন হারাতে হতে পারে। তার জন্য কিছু এসে যায় না।
হার মানলে হবে না, জনসংযোগ বাড়াতে হবে
পরক্ষণেই তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, আমরা যেখানে পিছিয়ে আছি, সেখানে আগে থেকে হার মেনে সরে গেলে হবে না। আমাদের আরও বেশি জনসংযোগ বাড়াতে হবে। রাজ্য সরকার যে মানুষের পাশে রয়েছে, তাদের জন্য বিভিন্ন জনকল্যাণকর পরিষেবা দিচ্ছে, তা তুলে ধরতে হবে। তিনি এদিন সৌমেন মহাপাত্র ও ফিরোজা বিবিদের বোঝান মানুষের কথা তুলে ধরতে, মানুষের কাছে আরও বেশি করে যেতে।
বুথ সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে
সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল, মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক করেন। তাঁদেরই তিনি একই বার্তাই দিয়েছেন। বলেছেন, যেখানে আমাদের সংগঠন শক্তিশালী সেখানে আমরা জিতব, যেখানে শক্তিশালী নই আমরা, সেখানেও জয়ই হবে আমাদের লক্ষ্য। সে জন্য বুথ সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। কিন্তু জোর করে জয় হাসিল করব না।
২০২৪-কে স্মরণীয় করে রাখাই উদ্দেশ্য
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের সাফ কথা, পঞ্চায়েতে কোনওরকম বিশৃঙ্খলা করা যাবে না। ঐক্যবদ্ধ মানুষের মন জয় করতে হবে। মানুষের পাশে থাকতে হবে। কেননা ২০১৮-য় তৃণমূল সমস্ত আসনে জিততে গিয়ে পেশি শক্তির প্রয়োগও ঘটিয়েছিল। তার মাশুল দিতে হয়েছে ২০১৯-এ। তাই ২০২৩-এর পঞ্চায়েতে তার পুনরাবৃত্তি চায় না দল। চায় না ২০১৯ ফিরে আসুক ২০২৪-এও। ২০২৪-কে এবার স্মরণীয় করে রাখাই তৃণমূলের উদ্দেশ্য।