উড়ছে বিয়ার, চলছে খেলা দেখা! জমজমাট ফুটবল উৎসব কলকাতার রেস্তোরাঁয়
বিশ্বকাপ নক আউট পর্বে ঢুকতেই কলকাতার রেস্তোরাঁগুলিতে ফুটবলের জ্বরের প্রাদুর্ভাব ঘটছে।
শেষ মুহূর্তের গোলে টিকে গিয়েছে মেসি আর্জেন্টিনা। নেইমারের ব্রাজিল এখনও পুরো ফর্মে না এলেও ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে। জার্মানি বেরিয়ে গেছে। কিন্তু ক্রমশ জমে উঠছে ফুটবল বসন্ত। আর কোকিল ডাকছে রাশিয়া থেকে ৫০০০ কিলোমিটার দূরের এই কলকাতা শহরে। জমজমাট ফুটবল উৎসবে মাততে বন্ধু-বান্ধব কি পরিবার নিয়ে রেস্তোরাঁ নাইটক্লাবে ভিড় জমাচ্ছেন কোলকাতান-রা।
গত বছর যুব বিশ্বকাপের পর বাঙালীর ফুটবল-প্রেম এখন সারা বিশ্ব জানে। সেই ফুটবল প্রেমেরই চুড়ান্ত নিদর্শন মিলছে ফুটবলের মহোফসবের সময়। কয়েক বছর আগেও পাড়ার ক্লাবে ক্লাবে টিভি ভাড়া করে কিংবা বন্ধুদের বাড়িতে জড়ো হয়ে একসঙ্গে ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনা কখনও ইংল্য়ান্ডের জন্য গলা ফাটাতো বাঙালী।
এখনও সেই চল নেই তা নয়, তবে বিশ্বায়নে কত বদলই তো এসেছে। তেমনই এখন বাঙালী ঝুঁকেছে রেস্তোরাঁয়, নাইটক্লাবে বা পাবে বসে খাদ্য পানীয় সহযোগে খেলা দেখায়। অনেকটাই ইউরোপিয় ফুটবল ভক্তদের ধাঁচে। তাই বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্যায় পেরোতে না পেরোতেই শহরের বারগুলিতে, পাবে, নাইটক্লাবে ভিড় বেড়ে গিয়েছে ১৫ শতাংশেরও বেশি। বিয়ারের বিক্রি বেড়েছে ৩০ শতাংশ!
নকআউট পর্যায়ের জমজমাট লড়াই শুরু হয়ে যাচ্ছে শনিবার থেকে। বার-রেস্তোরাঁর মালিকরা আশা করছেন ফুটবলপ্রেমীদের ভিড় আরও বাড়বে। আর এবার তো নকআউট পর্যায়ের সব ম্যাচই শুরু হচ্ছে ভারতীয় সময় সাড়ে সাতটা থেকে। কাজেই খেলা দেখে নৈশভোজ সেরে বাড়ি ফেরার কোনও সমস্যাই নেই।
তাতে নাইকক্লাব-পাব-রেস্তোরাঁ মালিকরা আরই খুশি। কারণ বাড়ি ফেরার ট্যাক্সি মিলবে না ভেবে যারা পিছিয়ে যেতেন তারাও হাজির হবেন ফুটবল উৎসবে। তাদের আকৃষ্ট করতে আয়োজনের ত্রুটিও রাখছে না বার বা রেস্তোরাঁগুলি। শহরের অধিকাংশ পাবে, বারে, রেস্তোরায় থাকছে খেলা দেখার সম্পূর্ণ আয়োজন।
অধিকাংশ জায়গাতেই জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানো হয়েছে। কেউ কেউ আবার গাদা গাদা টিভি বসিয়ে এমন অবস্থা করেছে যে কাস্টমার যেদিকে তাকাবেন চোখে পড়বে বিশ্বকাপের খেলা। পিছিয়ে নেই নাইটক্লাবগুলিও। তারাও দেখছে ফুটবল জনতার ভিড় বাড়ছে। তারাও জায়ান্ট স্ক্রিন লাগিয়ে তৈরি সেই জনতাকে স্বাগত জানাতে। সঙ্গে উপরি হিসেবে অনেক জায়গায় খাদ্যে বা পাণীয়তে থাকছে বিভিন্ন ছাড়ও। অনেক রেস্তোরাঁয় আবার পদের নামও থাকছে ফুটবলের বিভিন্ন পরিভাষা মিলিয়ে।
কথায় বলে আনন্দ ভাগ করলে বাড়ে আর দুঃখ ভাগ করলে কমে। কাজেই বিশ্বকাপের আপনার 'দুসরি কান্ট্রি' যাই হোক চলে যান শহরে কোনও বার বা রেস্তোরায়। পাবে কিংবা নাইটক্লাবে। সামিল হোন ফুটবল কার্ণিভালে। ফুটবলের সূত্রে কিন্তু জুটে যেতে পারে অনেক নতুন বন্ধুও।