মমতার দেখানো পথেই হাঁটছেন মুকুল! নয়া জল্পনা কৌশলী মন্তব্যে
দল ছাড়ার কথা ঘোষণার পর এই প্রথম তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হলেন তিনি। সাম্প্রদায়িক প্রশ্নে বিজেপির পাশে দাঁড়িয়ে কৌশলী মন্তব্য মুকুল রায়ের।
ফের বোমা ফাটালেন মুকুল রায়। আবারও তাঁর ইঙ্গিতে নতুন করে জল্পনা বাড়ালেন তিনি। তাহলে কি বিজেপিতেই নাম লেখাচ্ছেন তৃণমূলের বহিষ্কৃত সাংসদ মুকুল রায়! তাহলে কবে করবেন সেই ঘোষণা? তা নিয়েই জল্পনা চলল দিনভর। মুকুল রায়ের কৌশলী মন্তব্য কিন্তু অনেক কিছুই ইঙ্গিত দিয়ে গেল এদিন।
শনিবার মুকুল রায় মন্তব্য করেন, বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক দল বলা যায় না। তাঁর এই কৌশলী মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে অন্য গন্ধ ছড়াচ্ছে। এমনকী তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন কেন সাম্প্রদায়িক দল নয় বিজেপি। এরই পাশাপাশি মুকুল রায় এদিন তৃণমূলের বিজেপি-সংসর্গ নিয়েও কটাক্ষ করেছেন। দল ছাড়ার কথা ঘোষণার পর এই প্রথম তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হলেন তিনি।
কী ব্যাখ্যা দিলেন তিনি? এদিন মুকুল রায় বিজেপিকে নিয়ে ব্যাখ্যা দেন, বিজেপি যদি সাম্প্রদায়িক দল হয়, সেই সাম্প্রদায়িক দলের সঙ্গে দীর্ঘদিন জোট বেঁধেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। জন্মলগ্ন থেকেই তৃণমূল বিজেপির সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে চলেছেন তাঁরা। তাহলে তৃণমূলকেও যে সাম্প্রদায়িক আখ্যা দেওয়া যায়, তা কৌশলী মন্তব্যে বুঝিয়ে দিলেন তিনি।
তাঁর কথায়, ১৯৯৮ থেকে ২০০৬- বিজেপির সঙ্গে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেছে তৃণমূল। এখন তাঁদের পথ আলাদা হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল আজকে যে জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে, তার পিছনে বিজেপির ভূমিকা অস্বীকার করতে পারে না। বিজেপি ছিল বলেই তৃণমূল রাজ্যে এই জায়গায় আসতে পেরেছে। তারপর বিজেপি যদি সাম্প্রদায়িক দল হত, নির্বাচন কমিশন কি তাদের অনুমতি দিত নির্বাচনে লড়ার!
মুকুল রায়ের মুখে হঠাৎ বিজেপি স্তুতি শুনে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। চর্চা চলছে- তাহলে মুকুল রায় নতুন দল নয়, বিজেপিতেই যোগ দিতে চলেছেন। তবে এমনও হতে পারে, নতুন দল গড়ার পর এনডিএতে মুকুলের নয়া দলের অন্তর্ভুক্তি ঘটতে পারে। অর্থাৎ বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধেই রাজনৈতিক ময়দানে নামতে পারে মুকুলের দল। তৃণমূল যে পথে এগিয়েছিল, সেই পথেই মুকুলের দল রাজ্যে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
সেই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট না হলেও মুকুলের বিজেপি স্তুতিতে একটা জিনিস পরিষ্কার, মুকুল পুরোপুরি বিজেপির দিকেই ঢলে পড়ছেন। হয় সরাসরি বিজেপিতে যোগ, নতুবা বাঁকা পথে অর্থাৎ নয়া দল গঠন করে বিজেপির সঙ্গে জোট। আপাতত তাঁর মন থেকে এখন কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধার বিষয়টি নেই বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। অধীর চৌধুরীর সঙ্গে সম্প্রতি বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও, তা আদৌ ফলপ্রসূ হয়নি বলেই মনে করা হচ্ছে।
যদি তিনি বিজেপিতেই পাকাপাকি আস্তানা গাড়েন, তবে কবে করবেন সেই ঘোষণা তা নিয়েও জল্পনা চলছে। মুকুলের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছিল লক্ষ্মীপুজোর দিনই বিস্ফোরণ ঘটাতে পারেন তিনি। কিন্তু এখন শোনা যাচ্ছে আগামী ৬ অক্টোবর তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। সেখান থেকেই তিনি তৃণমূলের সঙ্গে পাকাপাকি সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ঘোষণা করতে পারেন। আবার তাঁর ভবিষ্যৎ অবস্থানও স্পষ্ট করতে পারেন। কিংবা দিল্লি থেকে ফিরে ৮ অক্টোবর তিনি তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে পারেন।