এই কারণের জন্য কি ভয়াবহ আকার নিল জীবনসুধা বিল্ডিং-এর আগুন, জানুন কী সেই কারণ
কালীপুজোর আনন্দে মেতে আছে কলকাতা। আর সেই সময়ই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে খাক হল জীবনসুধা বিল্ডিং-এর তিনটি তল। এবারের দীপাবলির দিনে কলকাতার গর্বের এই বহুতলের আগুনে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
জহরলাল নেহরু রোডের উপরেই জীবনসুধা বিল্ডিং। বর্তমান কলকাতার এক অন্যতম গর্বের বহুতল এটি। ঊনিশ তলা এই বিল্ডিং-এর উচ্চতা বাহাত্তর মিটার। আর এদিন যেখানে আগুন লেগেছিল তা ষোল তলায়। অর্থাৎ বহুতলটির একদম উপরের দিকে। কিন্তু, ভয়াবহ আগুনের গ্রাসে থাকা এই ষোল তলায় দমকল কর্মীদের পক্ষে পৌছনো সহজ ছিল না। তারমধ্যে যেখানটিতে আগুন লেগেছিল সেই স্থানটি একদম সামনের দিকে। তাই দমকলের পরিকল্পনা ছিল কোনওভাবে এই সামনের স্থানে দমকলের ইঞ্জিন এবং ল্যাডার রাখা গেলে আগুন নেভানোর প্রক্রিয়ায় যেমন দ্রুততা আনা সম্ভব তেমনি খুব সহজেই অগ্নিবিধ্বস্ত ফ্লোরে দমকলকর্মীদের পৌঁছে যাওয়াটাও সহজ হয়ে যাবে।
[আরও পড়ুন:কলকাতার অন্যতম গর্বের বহুতল জীবনসুধা বিল্ডিং-এ আগুন, কালীপুজোর দিনে পুড়ল ঐতিহ্য]
দমকলের এই ভাবনা শুরুতেই বাধা পায় । কারণ, যে গেট দিয়ে দমকলকে ঢুকতে হত তা পেরিয়েই ছিল একটা বেআইনি শেড। ফলে, আগুন নেভাতে দমকলকে যে নির্দিষ্ট জায়গায় ইঞ্জিন দাঁড় করাতে হত সেখানে যেতে পারছিল না। এই নিয়ে বেশকিছুক্ষণ জটিলতা চলে। এরপর পুলিশ সেই বেআইনি শেড ভেঙে দেয়। এর ফলে প্রায় আধ ঘণ্টার মতো বিলম্ব হয়ে য়ায় আগুন নেভানোর কাজ।
এই সময়টুকুতে আগুন আরও ভয়াবহ আকার নিয়ে নেয়। দমকল যতক্ষণে ষোল তলায় অগ্নিবিধ্বস্ত তলটিতে পৌঁছয় ততক্ষণে আগুন অন্য তিনটি ফ্লোরেও ছড়িয়ে পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোমর কষে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়। আগুনের ভয়াবহতা এবং তীব্র লেলিহান শিখার মধ্যেই ষোল তলায় ঢুকে পড়েন দমকলকর্মীরা। গঙ্গার হাওয়ায় আগুন নেভাতে যথেষ্টই বেগ পেতে হয় দমকলকর্মীদের। কিন্তু, নাছোড় মনোভাব নিয়ে তাঁরা চেষ্টা চালিয়ে যান যাতে আগুন আর বেশি স্থানে ছড়িয়ে পড়তে না পারে।
দমকল কর্মীদের অভিযোগ, বেআইনি শেডের জন্য বিলম্ব না হলে আগুন এতটা ভয়াবহ আকার হয়তো নিত না। কে এই বেআইনি শেড তৈরি করল? জীবনসুধা বিল্ডিং-এর দায়িত্বে থাকা কর্মীদের দাবি এখানে থাকা অফিস থেকেই এই শেড নির্মাণ করা হয়েছিল। এমনকী, জীবনসুধা বিল্ডিং-এর ক্যাম্পাস এবং বহুতলের বিভিন্ন তল জুড়ে যেভাবে বিভিন্ন ধরনের কেবল ঝুলছিল তাতেও আগুন নেভানোর কাজে অসুবিধা হয়। কারণ, দমকলের গাড়ি থেকে জলের হোস-পাইপ ওই কেবলের জালে আটকে যাচ্ছিল। শেষমেশ কেবলগুলি কেটে ফেলতে হয় দমকলকে।