কেনই বা বন্ধ ডাকা? কেনই বা তড়িঘড়ি ভুল স্বীকার? উত্তাল সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠক
শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে নীচু স্তরের নেতাদের তোপ, দলকে দৈন্য করে দিচ্ছেন নেতারাই। আন্দোলনের যৌক্তিকতা হারাচ্ছে সিপিএম।
কলকাতা, ২৭ ডিসেম্বর : কেনই বা বন্ধ ডাকা? কেনই বা তড়িঘড়ি ভুল স্বীকার? এবার এই প্রশ্ন উঠে গেল সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠকেই। নীচুতলার নেতারা সরব হলেন শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। তাঁরা আওয়াজ তুললেন, এভাবে চললে আর ফিরে আসা যাবে না। শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে নীচু স্তরের নেতাদের তোপ, দলকে দৈন্য করে দিচ্ছেন নেতারাই। আন্দোলনের যৌক্তিকতা হারাচ্ছে সিপিএম।
উল্লেখ্য, কেন্দ্রের নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর দেশজুড়ে যখন চরম দুর্ভোগ চলছে, তখন রাজ্য সিপিএম বাংলা বনধ ডেকে বসে। এই বনধের ফলে জনজীবনে আরও দুর্ভোগ বাড়তে পারে এই সহজ সত্যটা উপলব্ধি করতে পারেনি দল। তারই জেরে ব্যর্থ হয় বনধ। রাজ্যের শাসকদল কেন্দ্রের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের চরম বিরোধিতা করলেও, এই বনধ ব্যর্থ করার আহ্বান জানান। সর্বশক্তি দিয়েই এই বনধ বিরোধিতায় নামে শাসক শিবির।
বামফ্রন্টের বনধ এদিন শোচনীয় ব্যর্থ হয়। মানুষ আর পাঁচটা সাধারণ দিনের মতোই কাজে বের হন। রাস্তায় যানবাহনও প্রায় স্বাভাবিক ছিল। সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু স্বীকার করে নেন, তাঁদের বনধ ডাকা ভুল হয়েছিল। এই কম সময়ের প্রস্তুতিতে বনধ ডাকা তাঁদের ঠিক হয়নি।
সিপিএমের নীচুতলার নেতৃত্বের ধারণা, বনধ ব্যর্থ হওয়ায় যতটা না ক্ষতি হয়েছিল, তার থেকে অনেক বেশি ক্ষতি হয়েছে ওই ভুল স্বীকারে। সিপিএমের এই হালের জন্য তাই দলের রাজ্যস্তরের শীর্ষ নেতৃত্বের দিকে আঙুল তোলা হয়। আর সেই অভিযোগ জানানোর মঞ্চ হিসেবে সিপিএম নেতৃত্ব বেছে নিয়েছেন রাজ্য কমিটির বৈঠকের মঞ্চকেই। গতকাল দলের সর্বভারতীয় শীর্ষনেতৃত্বের সামনেই এই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সিপিএমের নীচুতলার নেতারা।
আজ রাজ্য কমিটির বৈঠকের দ্বিতীয় দিনেও সেই আঁচ পড়ল। গতকাল সিপিএমের সাধারণ সম্পাদর সীতারাম ইয়েচুরির সামনেই রাজ্য নেতৃত্বর বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন শীর্ষ নেতৃত্ব।