যা হয়েছে ভালোই হয়েছে বলছেন মমতা, ভোটের আইনি-যুদ্ধে ফায়দা লুটল কোনপক্ষ
আইনি জট কাটিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন চূড়ান্ত হয়েছে ১৪ মে। কলকাতা হাইকোর্ট শর্তসাপেক্ষে পঞ্চায়েত ভোটে সবুজ সংকেত দিয়েছে। তারপরও অব্যাহত তরজা।
আইনি জট কাটিয়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন চূড়ান্ত হয়েছে ১৪ মে। কলকাতা হাইকোর্ট শর্তসাপেক্ষে পঞ্চায়েত ভোটে সবুজ সংকেত দিয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সবুজ সংকেত প্রসঙ্গেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়েছেন, যা হয়েছে তা ভালোই হয়েছে, কিন্তু বিরোধীরা আদালতের এই রায়ে আদৌ খুশি নয়। কারণ তাঁরা মনে করছেন, ভোট নয়, প্রহসন হবে এই পঞ্চায়েত ভোটে।
পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে মাসাবধিকাল ধরে যে কাণ্ড ঘটল, তা রাজ্যের ইতিহাসে বিরল। এমন ঘটনায় বিগত কোনও নির্বাচনেই হয়নি। নির্বাচনের চারদিন আগে মানুষ জানতে পারলেন ভোটের চূড়ান্ত দিনক্ষণ। বিরোধীরাও প্রচারে পর্যাপ্ত সুযোগ পেলেন না বলে অভিযোগ। তবে বিরোধীরা মনে করছে, তাদের প্রতিবাদ শাসকের মুখোশ খুলে দিয়েছে। মানুষ বুঝতে পেরেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের আসল রূপ।
ভোট চূড়ান্ত হওয়ার পর প্রতিক্রিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'যা হয়েছে তা ভালোই হয়েছে, আমরা গণতন্ত্রের পক্ষে, জনগণের পক্ষে। আমরা চাই সমস্ত কিছুই শান্তিতে হোক। ভোট শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবেই হবে। মানুষ উন্নয়ন চান, উন্নয়নের পক্ষেই তাঁরা রায় দেবেন, এ বিশ্বাস আমাদের রয়েছে।'
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, 'রাজ্যে মনোনয়ন পর্ব থেকে যে কাণ্ড চলছে তাতে আমরা আতঙ্কিত। সে জন্যই উপযুক্ত সুরক্ষার বন্দোবস্ত করার আর্জি জানিয়েছিলাম। প্রতিটি বুথে একজন করে সশস্ত্র পুলিশ দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত বাহিনী নেই রাজ্যের হাতে। ফলে ভোটের দিন রক্তস্নান হবে। ভোট করতে দেওয়া হবে না। তার কারণ তৃণমূল কংগ্রেস বুঝে গিয়েছে, তাঁদের দিন শেষ হয়ে গিয়েছে।'
বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এ প্রসঙ্গে বলেন, 'ভোট সুষ্ঠু-অবাধ হলে তৃণমূল তাঁদের উত্তর পেয়ে যাবে। এই পঞ্চায়েত থেকেই রাজ্যে পরিবর্তনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। আমরা মানুষের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে পেরেছি, তৃণমূলের প্রকৃত রূপ। বিজেপিই যে উপযুক্ত বিকল্প, তাও মানুষ বুঝতে পেরেছেন। যখনই ভোট হোক আমরা প্রস্তুত।'
রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ মনে করছে, ভোট ঘোষণার পর থেকেই তৃণমূল কংগ্রেস যে ভূমিকা গ্রহণ করেছে, তাতে বিরোধীদের হাত শক্ত হয়েছে। সাধারণ মানুষ শাসকের এই ভূমিকা ভালো চোখে নেননি। মনোনয়ন ও প্রাক-ভোট পর্বে যে হিংসার রাজনীতি হয়েছে, তা শাসকের বিপক্ষেই যাবে। বিরোধীরা কিঞ্চিৎ হলেও এর সুবিধা পাবে। পরবর্তী নির্বাচনেও এই হিংসার মনোনয়ন পর্বের প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।